খানজাহান আলি ইতিহাসে এক ভয়ংকর নর পশু।

তথাকথিত সূফি সাধক হযরত খানজাহান আলি (র.) (জন্ম ১৩৬৯ – মৃত্যু অক্টোবর ২৫, ১৪৫৯) ছিলেন বাংলার অন্যান্য  মুসলিম ধর্ম প্রচারকদের মতোই নিশংস জিহাদি এবং পরবর্তিতে তিনি বাংলাদেশের বাগেরহাটের স্থানীয় শরিয়া শাসকে পরিণত হন। তিনি নিজ হাতে মন্দির ভেঙ্গেছেন এবং বহু হিন্দু পুরুষকে কতল করেছেন। এছাড়া তিনি বহু হিন্দু নারীকে গনিমতের মাল হিসাবে ভোগ করেছেন। হিন্দু মন্দির ভেঙ্গে সেখানে গরু জবাই করা ছিল তার প্রিয় কাজের একটি। যাইহোক, কাফের মুশরিক হিন্দু কতলের জন্য তাঁর অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে উলুঘ খান, খান-ই-আজম ইত্যাদি।

খান জাহান আলির তৈরি ষাট গম্বুজ মসজিদ বিখ্যাত। হযরত উলুঘ খানজাহান আলি (র.) ১৩৬৯ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লিতে তথাকথিত এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আকবর খাঁ এবং মাতার নাম আম্বিয়া বিবি। ধারণা করা হয় যে, তার পূর্বপুরুষগণ তুরস্কের অধিবাসী ছিলেন। খানজাহান আলির প্রাথমিক শিক্ষা তার পিতার কাছে শুরু হলেও তিনি তার কোরআনিক বিধর্মী ঘৃণার শিক্ষা গ্রহণ করেন দিল্লিস্থ বিখ্যাত ওয়ালি এ কামিল পির শাহ নেয়ামত উল্লাহর কাছে। তিনি কুরআন, হাদিস, সুন্নাহ ও ফিকহ শাস্ত্রের উপর গভীর জ্ঞানার্জন করেন।

খানজাহান আলি ১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দে সেনা বাহিনীতে সেনাপতির পদে কর্ম জীবন আরম্ভ করেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই কাফের হত্যা এবং আল তাকিয়াবাজির কারণে প্রধান সেনাপতি পদে উন্নীত হন। ১৩৯৪ এ মাত্র ২৬/২৭ বছর বয়সে তিনি জৈনপুর প্রদেশের জাবিতান (গভর্নর) পদে যোগ দেন। পরবর্তীতে সুলতান খানজাহানের নেতৃত্বে ৬০,০০০ সুশিক্ষিত অগ্রবর্তী সেনাদল সহ আরও দুই লক্ষ জিহাদি সৈন্য নিয়ে কাফের হত্যা করে মালে গনিমত ভোগ করার জন্য বাংলা আক্রমণ করলে কাফের হিন্দু রাজা গণেশ দিনাজপুরের ভাতুরিয়াতে আশ্রয় নেন। ১৪১৮ খ্রিষ্টাব্দে খানজাহান যশোরের বারবাজারে অবস্থান নেন এবং বাংলার দক্ষিণ পশ্চিম অংশে গরুর গোসত এবং  তরবারির সাহায্যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম প্রচার ও প্রসার আরম্ভ করেন। হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করে তাদের মুখে গরুর কাঁচা গোসত গুঁজে দিয়ে তাদের পাকাপাকি ভাবে মুসলমান বানাতেন। যদি কেউ নিজ পূর্ববর্তী ধর্মে ফেরত যেতে চাইতো তাকে তিনি নিজ হাতে হত্যা করতেন।

খানজাহানের প্রথম স্ত্রীর নাম সোনা বিবি। কথিত আছে সোনা বিবি ছিলেন খানজাহানের পির নুর-কুতুবুল আলমের একমাত্র কন্যা। খানজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী রূপা বিবি বিশেষ সুন্দরী এক কম বয়সী ছিলেন। কথিত আছে রূপা বিবি ওরফে বিবি বেগনি হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত মুসলমান ছিলেন। যদিও উনার পরিবারের সকল হিন্দু সদস্যদের জবাই করে কতল করা হয়। খানজাহান আলি তাঁর দুই স্ত্রীর নাম অনুসারে সোনা মসজিদ এবং বিবি বেগনি মসজিদ নামে মসজিদ নির্মাণ করেন।

হযরত খানজাহান আলি (র.) অক্টোবর ২৫, ১৪৫৯ তারিখে (মাজারশরিফের শিলালিপি অনুযায়ী ৮৬৩ হিজরি ২৬শে জিলহাজ) ষাট গম্বুজ মসজিদের দরবার গৃহে এশার নামাজ রত অবস্থায় ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমার সময় খান জাহান আলির মাজারে ওরস অনুষ্ঠিত হয় এবং লক্ষাধিক মুমিন মুসলমান তাতে সমবেত হয়। বর্তমানে মোড়ল বংশ তারই সবচেয়ে নিকটবর্তী বংশধর হিসেবে খুলনা, রামপালসহ বিভিন্ন দেশ বিদেশে বসবাস করছে।