১৯৭১' মুক্তিযুদ্ধ ছিল না; মিথ্যচার থেকে সরে আস বাঙালি ভায়েরা আমার!

বাংলাদেশে হাসিনা-খালেদা-এরশাদ  রচিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক পরিবেশ এমনই অর্থহীন, উদ্দেশ্যবিহীন, দুষিত, দুর্গন্ধময় ও দুঃসহ হয়ে উঠেছে যে বিশ্বাস হতে চায়না, বাঙালি জাতির বুকে চন্ডীদাস, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিন চন্দ্র, মধুসুদন, জসীমুদ্দিন, শামসুর রাহমান, অমর্ত্য সেন, জগদীষ চন্দ্র বসু, শেরে বাংলা ফজলুল হক, মৌলানা ভাসানী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবনশু শেখ মুজিবুর রহমান, জহির রায়হান, রফিক আজাদ, আব্বাস উদ্দীন, হেমন্ত মুখার্জি, লালন, হাসন, শাহ আব্দুল করিম, জয়নাল আবেদীন, কায়উম চৌধুরী, মর্তুজা বশির, আবদুল আলীম, ফিরোজা বেগম, নীনা হামিদ, ফরিদা পারভীন, তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিয়া, মুনীর চৌধুরী প্রমুখ  অজস্ত্র অগনিতব্য মহাপ্রাণ প্রতিভাবান মানুষের জন্ম হয়েছে। কেন এমন হল আমরা বুঝি না কে্ন, ভাবতে গিয়ে আমারই একটি হাস্যষ্পদ অভিজ্ঞতার কথা মনে হল। তখন ‘ফ্রিজ’ সাধারণ আয়ের মানুষদের জন্যে ছিল একটি বিশাল বিলাসিতা। টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মানে উচ্চতর প্রশিক্ষনের জন্যে ১৯৭৩ সনে বিলেতে গিয়েছিলাম। ফেরার সময় একটি ফ্রিজ কিনে এনেছিলাম। ফ্রিজটি দোতলার সরকারী বাসায় তুলে সেট করে বিদ্যুতের সুইচ অন করলাম। বুকটা ধরাক্ করে উঠল, ফ্রিজটি নিশ্চল নিশ্চুপ। ফ্রিজএর প্লাক বের করে নিয়ে, বিদ্যুৎ বাতি জ্বালিয়ে দেখলাম, বাল্বটি যেন হো হো করে হেসে উঠল। দুশ্চিন্তায় মাথা কাজ করছে না। তবে কি জাহাজে, ট্রাকে তুলতে নামাতে ফ্রিজটির ভিতরে কিছু নষ্ট হয়েছে। সংযোগের নির্দেশনামা বার বার পড়ে দেখলাম, কোথাও কোন সূত্র পেলাম না। আনমনে ফ্রিজের তারের সংগে লাগানো শক্তমত কাগজটিতে চোখ গেল। ইয়া আল্লাহ! সেটার ভিতরেই ছিল ফ্রিজে ব্যবহৃতব্য ফিউজটি। দ্রুত সেটা খুলে নিয়ে যথাস্থানে লাগিয়ে স্যুইচ টিপে দিলাম। অমনিই ফ্রিজটি আমাকে দাঁত খিঁচিয়ে ভেংচি কেটে দিল। আমরা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঐ ফ্রিজের ফিউজটির মত একটি ছোট্ট ব্যাপার ভুলে গেছি- ১৯৭১ সালে যা হয়েছে সেটা মুক্তিযুদ্ধ ছিলনা, সেটি ছিল পাকিস্তান সরকার আর তার সেনাবাহিনীকে পরাজিতকরে বাঙালির হাজার হাজার বছর মালিকানার ভূমিটির পুনরুদ্ধার যুদ্ধ। ঐ যুদ্ধ, বৃটিশ ঔপনিবেসিক শাসনের মধ্যে জমে উঠা আমাদের অজ্ঞানতার অন্ধকার, কূপমন্ডুকতা এবং অমানবিক ও মানবসভ্যতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ইত্যাদি আমাদের যাবতীয় পশ্চাদপদতা দূর করার যুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ ছিল না। তাই বলি কি, আওয়ামি-বিএনপি-ইরশাদী বিষাক্ত রাজনীতি আর নয়; ওগুলি বাথ রুমে ব্যবহৃত টিস্যু পেপারের মত আবর্জনার টিনে ফেলে দিন। মেধাবী মানুষদের উচিত নতুন করে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধ শুরু করা যেখানে”সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’’সত্যটি পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হবে। জাতি হিসাবে মেধাবী পরীক্ষিত জাতি বাঙালি এ যুদ্ধে জয়ী হবেই কারণ ইতিমধ্যেই ‘জয়বাংলা’ তাদের আত্মার ধ্বনি হয়ে উঠেছে।

BY-Belal beg

Scroll to Top