কৃষ্ণ ও বলরাম কি সুভদ্রার সাথে সেক্স করেছে?
Lord Krishna Incest :: Lord Krishna lived in incest with his sister Subhadra, sharing her with his brother Balarama [Mah.wh.153 ]
এখানে মুফাস্সিল যা বলেছে, এর জবাব হিসেবে আমি মুফাস্সিলকে বলছি-
আপনি যে এইসব উল্টাপাল্টা কথা বলেন, আপনি নিজেকে কী মনে করেন ? খুব বড় পণ্ডিত ? স্কলার ? আর অন্য সবাই ছাগলের বাচ্চা ? আমরা বাংলা এলাকার মানুষ, আপনি লিখেন এবং বক্তৃতাও দেন বাংলাতে, তাহলে রেফারেন্স দেবেন বাংলা মহাভারত থেকে, আর বাংলা মহাভারতে এই রকম কোনো রেফারেন্স হয় না; বাংলা মহাভারত বিভিন্ন পর্বে বিভক্ত, সেই পর্বগুলোর মধ্যে আবার কাহিনী ভিত্তিক অধ্যায় আছে। আপনি বলবেন অমুক পর্বের অমুক অধ্যায়, তা না বলে লিখেছেন [Mah.wh.153], এই রেফারেন্স অবশ্যই বাংলা মহাভারতের নয়, হতে পারে এটা ইংরেজিতে অনূদিত কোনো মহাভারতের, কিন্তু সেটাও কি আপনি উল্লেখ করেছেন ?
কাশীরাম দাসের মহাভারত বাংলায় বিখ্যাত হলেও সবচেয়ে প্রামান্য অনুবাদ হলো কালী প্রসন্ন সিংহের মহাভারতের অনুবাদ, এই অনুবাদ সংস্কৃত থেকে বাংলায় হুবহু অনুবাদ, কিন্তু এটা অনেক বড় এবং দাম বেশি বলে তেমন জনপ্রিয় নয়, কিন্তু কোনো চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে রেফারেন্স দিতে হলে এই মহাভারত থেকেই দেওয়া উচিত; কারণ, কৃত্তিবাসের রামায়নে যেমন অনেক উল্টাপাল্টা এবং মনগড়া কাহিনী আছে, তেমনি কাশীরাম দাসের মহাভারত সংস্কৃত থেকে হুবহু অনুবাদ নয় ব’লে তাতেও কিছু বিকৃত থাকা অসম্ভব নয়।
বাংলায় কাশীরাম এবং কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারত প্রচলিত থাকলেও, মধ্যযুগে আরও বেশ কয়েকজন কবি মহাভারতের ভাব অনুবাদ করেছিলো, কিন্তু সেগুলো কালের বিচারে উত্তীর্ণ হতে পারে নি বলে হয়তো কালের গর্ভেই হারিয়ে গেছে বা সেগুলো হয় তো কোনোদিন প্রিন্টই করা হয় নি।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বাংলায় অনুবাদিত কোনো মহভারতই যেহেতু অবিকৃত বা হুবহু অনুবাদ নয়, সেই ক্ষেত্রে ইংরেজিতে অনূদিত মহাভারত যে অবিকৃত তার প্রমান কী ? ইংরেজরা কৌশলে হিন্দু সমাজকে ধ্বংস করে হিন্দুদেরকে খ্রিষ্টান বা ব্রাহ্মে পরিণত করতে চেয়েছিলো, এই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ইংরেজরা বেদকে বিকৃত করে প্রিন্ট ক’রে তার মধ্যে আল্লা মুহম্মদ এই শব্দগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছিলো, যাতে হিন্দুরা বিভ্রান্ত হয়ে হিন্দুধর্ম বিমুখ হয় এবং প্রচণ্ড ঘৃণার কারণে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়। সেই ইংরেজরা যে অবিকৃতভাবে মহাভারতের অনুবাদ করেছে, তার প্রমান কী ?
“এটা করলে মহাভারত কি অশুদ্ধ হয়ে যাবে ?” ব’লে বাংলায় একটা প্রবাদ বাক্য চালু আছে, এর মানে হলো, মহাভারতের চরিত্র ও কাহিনী এতটাই সামঞ্জস্য যে তাতে কোনো ভুল নেই। এখন মুফাস্সিলের অভিযোগ মতো, কৃষ্ণ এবং বলরাম যদি সুভদ্রার সাথে সেক্স করে থাক, তাহলে তাদের এই লাম্পট্যের প্রভাব কাহিনীর অন্যত্রও পড়বে, সেরকম কোনো কিছু কি মহাভারতের কাহিনীতে আছে ? সুভদ্রা ছিলো অর্জুনের স্ত্রী, যদি সুভদ্রার সাথে কৃষ্ণের এমন কোনো সম্পর্ক থাকতো তাহলে কি অর্জুন ও কৃষ্ণের সম্পর্কের মধ্যে তা প্রভাব ফেলতো না ? অবশ্যই ফেলতো এবং তাদের মধ্যে সংঘাত তৈরি হতো, কিন্তু মহাভারতের কাহিনী থেকে জানা যায়, অর্জুনই ছিলো কৃষ্ণের সবচেয়ে প্রিয়পাত্র এবং কৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শনের পর অর্জুন নিজেই কৃষ্ণকে ভগবান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো।
আপনি মুফাস্সিল, ধরে নিলাম, আপনার একজন স্ত্রী, দু্ইটা সন্তান আছে এবং আপনি একটা অফিসে চাকরি করেন এবং অবসর সময়ে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করে বেড়ান। আপনি যদি সারা বছর ধরে এই কাজই করে থাকেন, তাহলে আপনার জীবনের গল্প হবে একরকম; আর যদি এসবের ফাঁকে আপনার একটা পরকীয়া প্রেম থাকে, তার সাথে মাঝে মাঝে বিছানায় যান, তাহলে কিন্তু আপনার জীবনের গল্পটা হবে অন্যরকম। মহাভারত, ভাগবতে – কৃষ্ণের যে গল্প, সেটা কিন্তু একজন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গল্প, সেখানে তার চরিত্রে কোনো কালিমা নেই; এখন আপনি যদি তার চরিত্রে কালি দেখতে পান, তাহলে সেই কালি তো অন্য আরও দু এক জায়গায় থাকার কথা এবং তার জীবনের গল্পটা ই বদলে যাবার কথা, কিন্তু তা কি হয়েছে ?
অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে পুলিশ প্রথমে তাদেরকেই সন্দেহ করে যাদের অপরাধের পূর্ব রেকর্ড আছে। আপনার ভিত্তিহীন অভিযোগ- কৃষ্ণ ও বলরাম যে সুভদ্রার সাথে সেক্স করেছে, এই ঘটনার পূর্ব সংকেত হিসেবে আপনার কাছে এমন কোনো কাহিনী বা ঘটনা আছে যে তাতে প্রমান হয় কৃষ্ণ ও বলরাম, সুভদ্রার সাথে সেক্স করতে চেয়েছে বা আকার ইঙ্গিতে সেই ইচ্ছে পোষণ করেছে ? এমন কোনো ঘটনার প্রমান আপনার কাছে আছে ? আমি জানি নেই, তাহলে আগে পিছে না ভেবে শুধু শুধু কেনো কারো বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া ? এসব বদভ্যাস ছাড়ুন, না হলে হঠাৎ আপনার একদিন মনে হবে আপনার স্ত্রী কারো সাথে সেক্স করে বাসায় ফিরেছে, আপনার তো কোনো সিদ্ধান্তে আসার পূর্বে আগে-পিছে ভাবার কোনো অভ্যাস নেই, তাই যা মনে হলো, তাই স্ত্রীকে বলে ফেললেন, আর অমনি আপনার স্ত্রী ঝাঁটা হাতে নিয়ে তার উত্তর দেওয়া শুরু করলো। তা না চাইলে এসব উল্টা পাল্টা কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।