যে মিজানুর রহমান আজহারী ওয়াজে চিৎকার করে বলেছে, শেখ হাসিনা মহিলা হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছে এটা ইসলামে হারাম …। সেই আজহারীর ওয়াজ মাহফিলের স্বাধীনতা থাকলেও আপনার ঘরের মধ্যেও থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনের স্বাধীনতা নাই!
বাবুনাগরী নববর্ষের প্রথম দিনে মাহফিল করবে কোথায় যেন। পুলিশ প্রশাসন হুজুরের খেদমতে এখনি তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। এই বাবুনগরীরা ইসলামী খিলাফতের উশকানি দিয়ে, ভারতে জিহাদ চালিয়ে হিন্দুদের শিকলে বন্দি করার হুংকার দিয়েও নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়। কিন্তু আপনার বাড়ির ছাদে আতশবাজি ফাটলেও দেশের নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটবে!
ইজতেমা নিয়ে দুই গ্রুপ মোল্লা গজারী হাতে শতাধিক মানুষের মাথা ফাটিয়ে দেবার পর সরকার বলেছিলো, ইজতেমা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে হুজুররা। ইজতেমা হবে কি হবে না সেটা ঠিক করা হুজুরদের নিজস্ব ব্যাপার। নববর্ষের রাতে বিশৃঙ্খলা হলেই সেটা নিষিদ্ধ করতে হলে তো সবার আগে ইজতেমা বন্ধ করে দেয়া উচিত ছিলো। গুলশানের অভিজাত এলাকার কয়েকটা বখাটের অজুহাত তুলে থার্টিফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করার বাহানা আসলে সবাই বুঝে। বাংলা হোক আর ইংরেজি নববর্ষ, এগুলিতে পশ্চাৎদেশে যাদের আগুন জ্বলে তাদের খুশি রাখতেই এই ব্যবস্থা। এগুলোকে হারাম কুফরি অপসংস্কৃতি বেয়াহাপন্না উশৃঙ্খলতা বলে দেশের যুবকদের সামনে খালি ইজতেমা ওমরাহ ওয়াজ মাহফিল রাখলে এরা জঙ্গিই হবে। পাকিস্তানের সমাজকে সেনা শাসকরা এভাবেই ইসলাম দিয়ে লেলিয়ে দমন করেছিল সংগীত শিল্পকলা মদ আর বিনোদনকে। ফলাফল পাকিস্তান জঙ্গি রপ্তানিকারক দেশ। সৌদি আরব গান বাজনা সিনেমা অবাধ করে দিয়েছে ঠিক এ কারণেই যাতে জনগণ ইসলামী চিন্তা থেকে দূরে থাকে। ইসলাম মানেই জঙ্গিবাদ। বাউল উৎসব হতে পারবে না নিরাপত্তা দোহাই দিয়ে। কনসার্ট হতে পারবে না। মেলা বন্ধ। সার্কাস বন্ধ। মদ খাওয়া যাবে না। মাঝরাতে হৈহুল্লর করা যাবে। হয় তাদের ‘যুবলীগ’ করতে হবে নয়ত ‘তাবলীগ জামাত’। ‘আল্লার দল’ নয়ত ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’…।
কি আছে এই দেশে একটা তরুণের বয়স উপযোগী? একটা পছন্দের সিনেমা দেখতেও তাদের চুরি করে নেট থেকে নামাতে হয়। মদের বোতল দিয়ে যে কাউকেই এদেশের পুলিশ হেরেজমেন্ট করতে পারে। দেশী সংস্কৃতি মোল্লা আর ইসলামী সংস্কৃতি মোল্লারা বাংলাদেশকে একটা জেলখানা বানিয়ে রেখেছে!