প্রকৃত যে কোন ইসলাম প্রচারক তাই সহিষ্ণুতা আর উদার সমাজ রাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ…।

জাকির নায়েককে মালয়েশিয়ার ৭টি রাজ্য কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই কাজটি ইংলেন্ড, আমেরিকা, ইউরোপ করলে এতক্ষণে ‘ইসলামফোবিয়া’ চিকিৎকারে কান চাপতে হত। জাস্টিফাই করে বলা হত, ট্রাম্প-মোদি কথা বললে দোষ হয় না, কেবল জাকির নায়েক কথা বললে দোষ…। কিন্তু মালয়েশিয়া বহু জাতি সম্প্রদায়ের দেশ হলেও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় এটি ‘মুসলিম দেশ’ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই দেশে জাকির নায়েককে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে বহু জাতি সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ বাসস্থান মালয়েশিয়াকে জাকির নায়েক অশান্ত করে তুলছেন। তাকে বের করে দিতো মালয়েশিয়া, নেহাত অন্য কোন দেশ তাকে নিবে না তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই মালয়েশিয়া এই আপতকে পুষছে।

৫৭টা মুসলিম দেশের কেউ জাকির নায়েককে নিতে চায় না। জাকির নায়েক একবার বলেছিলেন, একজন সৎ মুসলমান যিনি ইসলামকে পুরোপুরি অনুসরণ করতে চায় তাকে অবশ্যই সন্ত্রাসী হতে হবে। এসব বক্তব্য যে জাকির নায়েকের মনগড়া নয় সেটা জাকির নায়েক তার লেকচারে ব্যাখ্যা করে বলেন কেন তিনি প্রকৃত মুসলমানদের সন্ত্রাসী হতে বলেন। কারণ ইসলাম বলে যদি মুসলমানরা মনে করে তারা যথেষ্ঠ শক্তি অর্জন করেছে তাহলে তাদের চোখের সামনে ঘটা ইসলাম বিরোধী সব কর্মকান্ড বন্ধ করতে শক্তি প্রয়োগ করবে। যেমন মদ, জুয়া, মূর্তি পুজা, অমুসলিম শাসন, সেক্যুলার শাসন ব্যবস্থা, সব মানুষকে সমান বলে বিবেচনা করার মত কুফরি চিন্তাভাবনাকে মুসলমানরা বাধা দিবে। আজকাল হাদিস কুরআনের এসব ব্যাখ্যা পৃথিবীর কোন সভ্য সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। সব দেশকেই ব্যবসা বাণিজ্য করে খেতে হয়। এক দেশকে আরেক দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়। অমুসলিম ছাড়া মুসলিম বিশ্ব চলবে না। কাজেই কুরআন হাদিসের এসব বার্তা এ যুগে যে অচল এটা যারা দেশ চালান তারা বুঝেন। তাই কোন দেশেই মসজিদ মাদ্রাসা থেকে এরকম বক্তব্য আসলে শাসকরা ক্ষুব্ধ হন। মাহথির মোহাম্মদ মুসলিম জাতীয়তাবাদী হওয়ার পরও জাকির নায়েককে লাত্থি দিয়ে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দিতে কুন্ঠিত হবেন না যদি তার কথায় মালয়েশিয়ার বহুজাতি সম্প্রদায়ের মিলিত অর্থনীতিতে ফাটল ধরে যেখানে আস্থা ও বিশ্বাসই বড় হয়ে কাজ করেছে। যদি কখনো কোন ভূখন্ডের কোন অধিবাসী সম্প্রদায় নিজেদের গড়া্ সম্পদ হারানো ও দেশত্যাগের শংকা মনে পুষে রাখে তাহলে তারা ইনভেস্ট করতে ভয় পায়। বাংলাদেশে হিন্দুরা সম্পদ করতে ভয় পায়। ধনী হিন্দুরা অর্থ সম্পদ যতটা পারে ভরতে করতে চায়। কারণ তারা মনে করে বাংলাদেশে ৪৭ বা ৬৫ সালের মত সম্পত্তি বায়েজাপ্ত হবে না সেই গ্যারান্টি নেই। এসব কারণেই ধনী হিন্দুরা ভালো থাকার পরও এক সময় ভারতে পারি জমায়। যাই হোক, মালয়েশিয়ায় হিন্দু ও চাইনিজ বৌদ্ধদের টার্গেট করেছিলো জাকির নায়েক। ভারতীয় এই ইসলামিক লেকচারার কেমন করে ভারতে এতগুলো বছর লেকচার অনুষ্ঠিত করে গেলো ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাই? ভারতীয় সেক্যুলার ও বামপন্থিরা হিন্দুবাদীদের উগ্র কথাবার্তায় বহু জাতি সম্প্রদায়ে মিলিত সহিষ্ণুতার যে ভারত তাকে ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলে বারংবার মত দিলেও জাকির নায়েকের লেকচারগুলো ভারতের টেলিভিশনে টেলিকাস্ট হবার পরও কেন তারা চুপ থাকত? তখন কেন কেউ বলত না জাকির নায়েক ভারতে সাম্প্রদায়িকভাবে উশকে দিচ্ছে? মালয়েশিয়ার সরকার জাকির নায়েককে মালয়েশিয়াতে কার্যত মুখ সেলাই করে দিয়েছে। পৃথিবীর কোন ভাম কিংবা লিবারাল এবার বলুক মালয়েশিয়া ‘ইসলামফোবিয়া’ চালাচ্ছে?
জাকির নায়েকের মুখ বন্ধ করার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো ইসলাম ন্যাৎসিবাদের মতই নিষিদ্ধ হবার মত একটি দর্শন। প্রকৃত যে কোন ইসলাম প্রচারক তাই সহিষ্ণুতা আর উদার সমাজ রাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ…।