সেই ভাসুরের সন্তানদের নাম নিতে সমস্যা কি?

রণেশ ঠাকুর জানান, গ্রামের বা আশপাশের কারো সঙ্গেই তার কোন শত্রুতা নেই। কারা যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বুঝতেই পারছেন না। 
বাউলের ঘটে বুদ্ধি নাই? গানের বই বাদ্যযন্ত্র দেখলে কারা  চ্যাতে আপনি বুঝেন না? ৫০ বছর আগে আপনার গুরু যুবক শাহ আবদুল করিমকে ঈদের নামাজ থেকে বের করে দিয়েছিল কারা? শর্ত দিয়েছিল করিম যদি এখন তওবা করে গান ছেড়ে দেয় তাহলে তাকে ঈদের নামাজ পড়তে দেয়া হবে। নিজ গ্রাম ছেড়ে করিম কাদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে হিন্দু প্রধান গ্রামে গিয়ে গানের সাধনা করেছিলেন? সেই ভাসুরের সন্তানদের নাম নিতে সমস্যা কি? 
বাউল সম্রাট শাহ্ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, আগু‌নে রণেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বই-পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গে‌ছে।
আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরি পুড়িয়ে দেয়ার আগে ওমর জিজ্ঞাসা করেছিল এখানে কুরআন আছে কিনা?  নেই শুনে জবাব দিয়েছিল কুরআন ছাড়া অন্য জ্ঞানের দরকার নাই …।
নালন্দা পুড়িয়ে দিয়েছিল বখতিয়ার খিলজি। বৌদ্ধরা সঙ্গে করে যতটুকু পেরেছিল চর্যাপদ নিয়ে নেপালে পালিয়েছিল। না হলে বাংলা ভাষার আদি সোর্সটুকু সেদিনই মুছে যেতো …
সাধারণ তস্কর দস্যু লাইব্রেরিতে হামলা চালায় না। ওখানে টাকা পয়সা সোনাদানা থাকে না। রেমশ ঠাকুরের দোতারা একতারা আর গানের খাতা রাখা ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তাই অসাধারণ দস্যুরা! এ হচ্ছে সুর আর অসুরের লড়াই। ১৪০০ বছর ধরে এই লড়াই চলছে। একদল বলছে গান হারাম ! আরেক দল বলছে কুরআনে তারা গান হারামের কিছু পান নাই …। কেউ কিন্তু প্রশ্ন করে না ৪৫০০ ধর্মের আর কোনটায় এই তর্ক নেই কেন? ধর্মে নিষেধ করলেই গান বন্ধ হয়ে যাবে কেন? পু‌লিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রণেশ ঠাকুরের বসত ঘরের উল্টোদিকে তার বাউল গা‌নের ঘর। ওখানেই তার ও শিষ্যদের বাদ্যযন্ত্র  থাকত। পুলিশ বলছে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা বুঝতে পারছেন না…।
আসলে সবাই জানে কিন্তু বলবে না!