মক্কা মদীনা আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ আরবের সাহায্যার্থে সেনাবাহিনী পাঠাবে শুনতেও ভাল লাগে।

মক্কা মদীনা আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ আরবের সাহায্যার্থে সেনাবাহিনী পাঠাবে, বলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। বিবিসি প্রতিবেদক প্রশ্ন করেছিলেন যে মক্কা-মদীনা আক্রান্ত হতে পারে এমন প্রশ্ন কেন উঠল, কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় সে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।আমার কথা হচ্ছে, আমরা একটি বাস্তব দুনিয়ায় বসবাস করি। এটা আবেগের জায়গা না, আবেগ দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধানও হয় না। আমরা দেখতে পাচ্ছি, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দ্বারা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো একে একে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব যুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদীদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে মীর জাফরের ‘সুখ্যাতি’-কে হার মানিয়েছে এই সৌদি আরব নামক ধর্মব্যবসায়ী রাষ্ট্রটি।


.
ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়ামেন এই সবগুলো দেশই এখন ধ্বংসস্তূপ, গণকবর, বিরাণভূমি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সেনারা কখনও এসব দেশের পাশে দাঁড়ায় নি। তবে অনেক রাষ্ট্রনায়ক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছেন, তাদের দৌঁড় ঐ টুকুনই। কার্যক্ষেত্রে তারা আজ পর্যন্ত মুসলমানদের ছোট একটা ভূখণ্ডও রক্ষিত হয় নি।
.
মক্কা মদীনা পবিত্রভূমি হতে পারে কিন্তু আল্লাহ আবাবিল পাখি দিয়ে মক্কা মদীনা রক্ষা করবেন এটা ভেবে থাকলে ভুল হবে। মুসলিম দেশগুলোর সক্ষমতা কতটুকু আছে যে তারা তাদের পবিত্রভূমি রক্ষা করতে পারে? তাদের পবিত্রভূমি কি যেরুজালেম নয়? সেটা কি তারা ইসরাইলের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছে? আব্দুল কাদের জিলানীর (র.) মাজার কি তাদের তীর্থস্থান নয়? সেই মাজার কতবার ধ্বংস হয়েছে এই শতকে? প্রথমে করল ইঙ্গ-মার্কিন যৌথবাহিনী, পরেরবার করল জঙ্গিরা।
.
বলতে পারেন, মক্কাশরীফ অন্য। তাহলে প্রশ্ন তুলতে হয়, উমাইয়ারা মক্কায় হামলা করে ৬৮৩ সনে ক্বাবা শরীফ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় নি? ৬৯২ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ পাথরের আঘাতে ক্বাবা গুড়িয়ে দেন নি? ৯৩০ সনে শিয়ারা মক্কা আক্রমণ করে জমজম কুপ মাটি ফেলে বন্ধ করে দেয় এবং পবিত্র কালো পাথর লুট করে নিয়ে যায়, সে দৃশ্য কি আল্লাহ দেখেন নি?
.
এরা সবাই তো মুসলমান দাবিদার। আল্লাহ কি মুসলমানের হাত থেকে কাবা হেফাজত করবেন? আরব আক্রান্ত হলে ও দুটো পবিত্র নগরীও বাদ থাকবে না। এর প্রমাণ, ২০১৬ এর জুলাই মাসে মদীনায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিল আইএস। সম্প্রতি মক্কা-মদীনা বাদ দিয়ে সমগ্র আরবকে গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিয়াপন্থী ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী। অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয় তাহলে তার সূচনা করবে এই দুটো পথভ্রষ্ট ফেরকা শিয়া ও সুন্নীর বিবাদ।

এখন মুসলিম জাতি ঘোর বিপদে পড়েছে যা তারা উপলব্ধিও করতে পারছে না। পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো তাদের শত্রু হিসাবে মুসলিমদেরকেই গ্রহণ করেছে। এই শত্রুতা আজকে সৃষ্ট হয় নি, বহু শতাব্দী ধরে এই শত্রুতা চলে আসছে। এখন বিশ্বের ক্ষমতার আসনে আছে পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো আর দাসের স্থানে আছে মুসলমানেরা। তারা লাখে লাখে মরছে, উদ্বাস্তু হচ্ছে, সাগরে ভাসছে, দেহব্যবসায় বাধ্য হচ্ছে। পূর্বের সব অভিশপ্ত জনগোষ্ঠীকেও এই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে।