– হুজুর, কাজটা কি ঠিক? ধর্মে তো বাড়াবাড়ি নাই।
– আলবৎ ঠিক। এই দেশ হিন্দুর দেশ না, খ্রিষ্টানের দেশ না, বৌদ্ধের দেশ না। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ। এই দেশে রমজান মাসে ভাতের হোটেল খোলা থাকতে পারবে না। প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া চলতে পারে না। রমজানের পবিত্রতা বইলা একটা বিষয় আছে। তা নষ্ট হইতে দেয়া যায় না। যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে।
– কিন্তু . . .
– কোনো কিন্তুর সুযোগ এইখানে নাই। যেইটা বলছি সেইটাই ফাইনাল। এক মাস ধইরা তোমরা রাস্তাঘাটে খেয়াল রাখবা। কোনো ধরনের খাওয়া দাওয়া করতে দেখলে, অশালীন পোশাক পরা কাউরে দেখলে ধইরা আনবা, আমি নিজ হাতে শাস্তি দিব। মাতবর সাহেবের অনুমতি নেয়া আছে।
– হুজুর শাস্তি না দিলে হয় না?
– বেকুবের মতন কথা বলবা না। কেউ হারাম কাজ করলে শাস্তি দিব না?
– খানাখাদ্য তো হারাম না। নিষিদ্ধ বস্তু না। যারা রোজা রাখবে, তারা না খেলেই হলো। অন্যরা তো খাবে। অসুস্থ আর মুসাফিরদের জন্য রোজা ফরদ না। তাদের কথাও তো ভাবা উচিত।
– আসছে আমার দয়ার সাগর। অসুস্থ/মুসাফিরের কথা ভাবো, কিন্তু রমজান মাসের পবিত্রতার কথা ভাবো না! অন্যরা খাইবো আর রোজাদার মিটমিটাইয়া চাইয়া থাকবো। তারপর কী হইবো? রোজাদারের অন্তরে খাবারের খায়েশ জাগবো। রোজা হয়ে যাইব ঢিলা।
– রোজা তো আরও পাকাপোক্ত হবে হুজুর। কারণ বান্দার সামনে খাবারের সুযোগ আছে, বান্দা তাও খাচ্ছে না। আল্লাহর ভয়ে খাচ্ছে না। এটাই তাকওয়া, তাই না? যদি খাবারের সুযোগই না থাকে তাহলে সংযমের তো কিছু থাকল না। পাচ্ছি না তাই খাচ্ছি না।
– তাকওয়ার তুমি কী বোঝো হে? কোনোদিন মাদ্রাসার চৌকাঠ মাড়ায় নাই, সে আমারে তাকওয়া বুঝাইবার লাগছে।
– হুজুর, একটু ঠাণ্ডা হোন। আপনার কথাগুলা একদিক দিয়ে ঠিক আছে তা অস্বীকার করি না। রমজান মাস হচ্ছে সংযমের মাস। এই মাসে সবাই রোজা রাখবে। খাবার-দাবারের চাহিদা থাকবে না। জিনিসপত্র বেচা-কেনাও কমে যাবে। ফলে ভাতের হোটেল তো বন্ধ হবেই, অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধের উপক্রম হবার কথা। কিন্তু হুজুর, এই অবস্থা যদি নিজ থেকে তৈরি না হয়, জোর করে কি তৈরি করতে পারবেন?
– শোনো, আমারে এইসব বইলা লাভ হইব না। তোমার কথা শুনতে গেলে এক মাসেই দুনিয়া থাইকা ইসলাম গায়েব হয়ে যাইব।
– হুজুর, তার মানে কি ইসলামকে জোর করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে? মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে রাখা হয়েছে? একটু ঢিলা দিলেই সব শেষ হয়ে যাবে? ইসলাম সম্পর্কে এরকম অভিযোগ তো বিধর্মীরা করে হুজুর।
– নাউজুবিল্লাহ নাউজুবিল্লাহ!
– আরেকটা কথা হুজুর। পৃথিবীর সব দেশে তো ৯২ ভাগ মুসলমান নেই। যেখানে মুসলমানরা সংখ্যায় কম, ওইসব দেশে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা হবে কীভাবে? সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধর্মীরা যদি শক্তির জোরে তাদের বিশ্বাস মেনে নিতে মুসলমানদেরকে বাধ্য করে তাহলে কী দশা হবে ভেবে দেখেছেন কখনও? যেসব দেশে নাস্তিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ- তারা যদি বলে আমরা অধিকাংশ মানুষ তোমাদের রোজা-টোজা বিশ্বাস করি না, কাজেই রোজা রাখতে পারবা না। তাহলে কী হবে? এজন্যই বলি হুজুর, শক্তির মধ্যেই সবকিছুর সমাধান না খুঁজে আগে ভেবে দেখা যাক- সমাজে রমজান মাসের যে আধ্যাত্মিক প্রভাব পড়ার কথা, সেটা পড়ছে না কেন?
– ব্যস ব্যস। তোমার ধানাই পানাই অনেক শুনছি। আর না। তুমি আমারে বিধর্মীদের, কাফের-মোশরেকদের ভয় দেখাইতে চাও? আমি কাউরে ডরাই না। হক্বের পথের সৈনিক আমি। বাতিলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম।
– তাহলে চলেন বিভিন্ন ব্যাংকে হামলা চালাই। গরীবের ভাতের হোটেল খোলা থাকলে যদি রমজান মাস অপবিত্র হয়ে যায়, সুদী কারবারের ব্যাংক খোলা থাকলে আরও বেশি অপবিত্র হবার কথা। চলেন আজই ঝাঁপিয়ে পড়ি আল্লাহু আকবর বলে। ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ধরে ধরে আনি, আপনি নিজ হাতে সবাইরে শাস্তি দেন। মাতবর সাহেবের অনুমতি তো নেয়াই আছে। তাছাড়া অনুমতিরই বা কী দরকার? আপনার মতন হক্বের সৈনিক থাকতে কোনো ভয় নেই।
– আমার লগে মশকরা করো? বে’আদব কোথাকার! ভাগো এখান থেকে।- হুজুর, কাজটা কি ঠিক হয়? ধর্মে তো বাড়াবাড়ি নাই।
– আলবৎ ঠিক হয়। এই দেশ হিন্দুর দেশ না, বৌদ্ধর দেশ না, খ্রিষ্টানের দেশ না। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ। এই দেশে রমজান মাসে ভাতের হোটেল খোলা থাকতে পারে না। প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া চলতে পারে না। রমজানের পবিত্রতা বইলা একটা বিষয় আছে। তা নষ্ট হইতে দেয়া যায় না।
– কিন্তু . . .
– কোনো কিন্তুর সুযোগ এইখানে নাই। যেইটা বলছি সেইটাই ফাইনাল কথা। এক মাস ধইরা তোমরা রাস্তাঘাটে খেয়াল রাখবা। কোনো ধরনের খাওয়া দাওয়া করতে দেখলে, অশালীন পোশাক পরা কাউরে দেখলে ধইরা আনবা, আমি নিজ হাতে শাস্তি দিব। মাতবর সাহেবের অনুমতি নেয়া আছে।
– হুজুর শাস্তি না দিলে হয় না?
– বেকুবের মতন কথা বলবা না। কেউ হারাম কাজ করলে শাস্তি দিব না?
– খানাখাদ্য তো হারাম না। নিষিদ্ধ বস্তু না। যারা রোজা রাখবে, তারা না খেলেই হলো। অন্যরা তো খাবে। অসুস্থ আর মুসাফিরদের জন্য রোজা ফরদ নয়। তাদের কথাও তো ভাবা উচিত।
– আসছে আমার দয়ার সাগর। অসুস্থ/মুসাফিরের কথা ভাবো, কিন্তু রমজান মাসের পবিত্রতার কথা ভাবো না! অন্যরা খাইবো আর রোজাদার মিটমিটাইয়া চাইয়া থাকবো। তারপর কী হইব? রোজাদারের অন্তরে খাবারের খায়েশ জাগবো। রোজা হয়ে যাইব ঢিলা।
– রোজা তো আরও পাকাপোক্ত হবে হুজুর। কারণ বান্দার সামনে খাবারের সুযোগ আছে, বান্দা তাও খাচ্ছে না। আল্লাহর ভয়ে খাচ্ছে না। এটাই তো তাকওয়া, তাই না? যদি খাবারের সুযোগই না থাকে তাহলে সংযমের তো কিছু থাকল না। পাচ্ছি না তাই খাচ্ছি না।
– তাকওয়ার তুমি কী বোঝো হে? কোনোদিন মাদ্রাসার চৌকাঠ মাড়ায় নাই, সে আমারে তাকওয়া বুঝাইবার লাগছে।
– হুজুর, একটু ঠাণ্ডা হোন। আপনার কথাগুলা একদিক দিয়ে ঠিক আছে তা অস্বীকার করি না। রমজান মাস হচ্ছে সংযমের মাস। এই মাসে সবাই রোজা রাখবে। খাবার-দাবারের চাহিদা থাকবে না। জিনিসপত্র বেচা-কেনাও কমে যাবে। ফলে ভাতের হোটেল তো বন্ধ হবেই, অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধের উপক্রম হবার কথা। কিন্তু হুজুর, এই অবস্থা যদি নিজ থেকে তৈরি না হয়, জোর করে কি তৈরি করতে পারবেন?
– শোনো, আমারে এইসব বইলা লাভ হইব না। তোমার কথা শুনতে গেলে এক মাসেই দুনিয়া থাইকা ইসলাম গায়েব হয়ে যাইব।
– হুজুর, তার মানে কি ইসলামকে জোর করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে? মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে রাখা হয়েছে? একটু ঢিলা দিলেই সব শেষ হয়ে যাবে? ইসলাম সম্পর্কে এরকম অভিযোগ তো বিধর্মীরা করে হুজুর।
– নাউজুবিল্লাহ নাউজুবিল্লাহ!
– আরেকটা কথা হুজুর। পৃথিবীর সব দেশে তো বিরানব্বই ভাগ মুসলমান নেই। যেখানে মুসলমানরা সংখ্যায় কম, ওইসব দেশে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা হবে কীভাবে? সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধর্মীরা যদি শক্তির জোরে তাদের বিশ্বাস মেনে নিতে মুসলমানদেরকে বাধ্য করে তাহলে কী দশা হবে ভেবে দেখেছেন কখনও? যেসব দেশে নাস্তিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ- তারা যদি বলে আমরা অধিকাংশ মানুষ তোমাদের রোজা-টোজা বিশ্বাস করি না, কাজেই রোজা রাখতে পারবা না। তাহলে কী করা হবে? এজন্যই বলি হুজুর, শক্তির মধ্যেই সবকিছুর সমাধান না খুঁজে আগে ভেবে দেখা যাক- সমাজে রমজান মাসের যে আধ্যাত্মিক প্রভাব পড়ার কথা, সেটা পড়ছে না কেন?
– ব্যস ব্যস। তোমার ধানাই পানাই অনেক শুনছি। আর না। তুমি আমারে বিধর্মীদের, কাফের-মোশরেকদের ভয় দেখাইতে চাও? আমি কাউরে ডরাই না। হক্বের পথের সৈনিক আমি। বাতিলের বিরুদ্ধে আমার সংগ্রাম।
– তাহলে চলেন বিভিন্ন ব্যাংকে হামলা চালাই। গরীবের ভাতের হোটেল খোলা থাকলে যদি রমজান মাস অপবিত্র হয়ে যায়, সুদী কারবারের ব্যাংক খোলা থাকলে আরও বেশি অপবিত্র হবার কথা। চলেন আজই ঝাঁপিয়ে পড়ি আল্লাহু আকবার বলে। ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ধরে ধরে আনি, আপনি নিজ হাতে সবাইরে শাস্তি দেন। মাতবর সাহেবের অনুমতি তো নেয়াই আছে। তাছাড়া অনুমতিরই বা কী দরকার? আপনার মতন হক্বের সৈনিক থাকতে কোনো ভয় নেই।
– আমার লগে মশকরা করো? বে’আদব কোথাকার! ভাগো এখান থেকে
Asad Ali’র ওয়াল থেকে নেয়া।