ইসলাম অবমাননায় মুসলমানদের কুত্তা পাগল হবার কারণটি ক

নবী অবমাননা বা ইসলাম অবমাননায় মুসলমানদের কুত্তা পাগল হবার কারণটি কি সেটি সম্পর্কে লিখতে প্রচুর অনুরোধ পাচ্ছি ইনবক্সে। এমন না যে এসব নিয়ে আগে লিখিনি। তবু কোলকাতার বসিরহাটের পেক্ষপটে মুসলমানদের ধর্ম এবং তাদের ধর্মীয় নবী বিষয়ে এতখানি নিষ্ঠুর হবার ইসলামী সোর্সটি কি সেটি নিয়ে তাই ফের লিখতে হচ্ছে।

অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের দিয়ে কিলিং মিশন চালানো একজন নবীর জন্য কতটা গ্রহণযোগ্য শুরুতে এই প্রশ্নটা করে রাখতে চাই। আবু জাহেলকে (আসলে তার নাম উমর বিন হিশাম, উপনাম হিসেবে সবাই আবুল হাকাম নামে ডাকত যার অর্থ জ্ঞানের পিতা। তার জ্ঞান-বুদ্ধির প্রশংসা করে লোকজন তাকে এই উপনামে ডাকত। মুহাম্মদ তার সেই নামকে বিকৃত করে আবু জাহেল যার অর্থ ‘অজ্ঞানের পিতা’ বলে উক্তাক্ত করত) খুন করতে দুই সহোদর কিশোর ভাই বদরের ময়দানে পাগলা কুকুরের মত হয়ে উঠেছিল। আসুন সীরাত গ্রন্থ ‘আর রাহীকুল মাখতূম’ থেকে হুবহু তুলে দেই কেমন করে কি নিষ্ঠুরতায় দুই কিশোর একটা জলজ্যান্ত মানুষকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আবুল হাকাম অর্থ্যাৎ আবু জাহেল ছিলেন মুহাম্মদের আপন চাচা।

“হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.)বলেন, বদর যুদ্ধের দিনে মুসলমানদের কাতারের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখি যে, ডানে বাঁয়ে দ’জন আনসার কিশোর। তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে আমি চিন্তা করছিলাম, হঠাৎ একজন চুপিসারে আমাকে বললো, চাচাজান, আবু জেহেল কে তা আমাদের দেখিয়ে দিন। আমি বললাম, ভাতিজা, তুমি কার কি করবে? সে বললো, আমি শুনেছি, আবু জেহেল প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে গালি দেয়। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, যদি আমরা আবু জেহেল দেখতে পাই তবে ততক্ষণ পর্যন্ত পর্যন্ত তার কাছ থেকে আলাদা হব না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার এবং আমাদের মৃত্যু যার আগে লেখা রয়েছে, তার মৃত্যু না হয়। হযরত আবদুর রহমান (রা.) বলেন, একথা শুনে আমি অবাক হলাম। অন্যজন আনসার কিশোরও আমাকে চুপিসারে একই কথা বললো। কয়েক মুহুর্ত পরে আমি আবু জেহেলকে লোকদের মধ্যে বিচরণ করতে দেখছিলাম। আমি উভয় আনসার কিশোরকে বললাম, ওই দেখো তোমাদের শিকার। যার সম্পর্কে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছো। একথা শোনামাত্র উভয় আনসার কিশোর আবু জেহেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করে ফেলল। এরপর উভয়ে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামরে কাছে এলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন তোমাদের মধ্যে কে আবু জেহেলকে হত্যা করেছ? উভয়ে বললো, আমি করেছি, আমি করেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা কি তলোয়ারের রক্ত মুছেছো? তারা বললো, না মুছিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উভয়ের তলোয়ার দেখে বললেন, তোমরা দু’জনেই হত্যা করেছ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্য আবু জেহেলের পরিত্যাক্ত জিনিসপত্র মায়া’য ইবনে আমর জামুহাকে প্রদান করলেন। উভয় কিশোরের নাম ছিলো মা’য ইবনে আমর জামুরা এবং মা’উয ইবনে আফরা (সহীহ বোখারী ১ম খন্ড, প্র. ৪৪৪, ২য় খন্ড, পৃ. ৫৬৮, মেশকাত ২য় খন্ড,৩৫২)। অন্যান্য বর্ণনায় দ্বিতীয় কিশোরের নাম মাউয ইবনে আফরা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইবনে হিশাম, ১ম খন্ড, পৃ.৬৩৫। আবু জেহেলের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র একজনকে এ কারণেই দেয়া হয়েছিলো, যেহেতু মা’য অথবা মাউয ইবনে আফরা সেই যুদ্ধে পরবর্তী সময়ে শহীদ হন। আবু জেহেলের তরবারি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে দেয়া হয়েছিলো। কেননা তিনি আবু জেহেলের মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিলেন। (আর রাহীকুল মাখতূম, লেখক: আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারকপুরী অধ্যাপক, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া হাদিস থেকে জানতে: সুনানে আবু দাউদ, ২য় খন্ড, পৃ. ৩৭৩)।

আমাদের চিরচেনা পথে কাঁটা পুতে রাখা নবীর সঙ্গে এই নবীর কতই না পার্থক্য তাই না? সীরাত আর হাদিস পড়ে যেন মনে হচ্ছে হিন্দি সিনেমার ওমরেশ পুরির দুই সারগেদ তাদের শত্রুর মাথা কেটে এনে বসকে দেখাচ্ছে! ১৪ বছর বয়েসে বাড়িতে হাদিসের একটা বই পড়ে আমার প্রথম ইসলাম সম্পর্কে বড়া একটা ধাক্কা লাগেছিল। আমি এ ধরণের নৃশংসতার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক নবী জীবনী যা এতদিন শুনে আসতাম তা মেলাতে পারছিলাম না। ঘটনাটা ছিল বদর যুদ্ধের নিহত কুরাইশদের মৃত দেহগুলো নিয়ে নবীর চরম বিকৃতি চালানো। সরাসরি সহি বুখারী থেকে তুলে দিচ্ছি-

“হযরত আবু তালহা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে বদরের দিন কোরায়শদের ২৪ জন বড় বড় সর্দারের লাশ বদরের একটি নোংরা কূয়োয় নিক্ষেপ করা হয়। তখন নিয়ম ছিলো যে, কোন কাওমের ওপর জয়ী হলে তিনদিন যুদ্ধক্ষেত্রে কাটানো হতো। বদরের মাঠে তিনদিন কাটানোর পর নবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সওয়ারীর পিঠে আসন সাঁটা হলো। এরপর তিনি পদব্রজে চললেন, সাহাবারা তাঁকে অনুসরণ করলেন। হঠাৎ কূয়োর তীরে তিনি থমকে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলতে লাগলেন, ‘হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করতে, তবে সেটা কি তোমাদের জন্যে ভালো হতো না? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছেন, আমরা তার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছি, তোমরা কি আমাদের প্রতিপালকের কৃত ওয়াদার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছো।’ হযরত ওমর (রা.) আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল, আপনি এমন সব দেহের সাথে কি কথা বলছেন, যাদের রূহ নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে সত্তার শপথ যার হাতে মোহাম্মদের প্রাণ আমি যা কিছু বলছি, তোমরা ওদের চেয়ে বেশি শুনতে পাও না। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে যে, তোমরা ওদের চেয়ে বেশী শ্রবণকারী নও। কিন্তু ওরা জবার দিতে পারে না” (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত, ২য় খন্ড, পৃ. ৩৪৫)।