বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের বিহারে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করতেন। সেকালে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দূর-দূরান্ত থেকে জ্ঞানপিপাসুরা এসে জড়ো হতো। এই বিহারগুলো থেকেই চর্যাপদের মত সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিলো যা বাংলা সাহিত্যের নিউক্লিয়াস। গৌতম বুদ্ধ আর মুহাম্মদ সম্পূর্ণ ভিন্ন দর্শনের মানুষ ছিলেন। দুজনের বাণী এতটাই বৈপরীত্য যেন দুই মেরু। মাদ্রাসায় মুহাম্মদের দর্শন চর্চা হয়। কুরআন-হাদিস ভিন্ন অন্যকোন জ্ঞান এখানে অর্ন্তভুক্ত নয়।
কুপার্নিকাস, গ্যালিলিও এঁরা সবাই ছিলেন চার্চের ফাদার। সেকালে চার্চের ঘন্টাঘর ছিলো সবচেয়ে উঁচু স্থানে। গ্যালিলিও তার নিজ হাতে বানানো পৃথিবীর প্রথম দূরবীন দিয়ে সেখান থেকে আকাশ পর্যবেক্ষণ করতেন। চার্চগুলোতে যে বিশাল লাইব্রেরি থাকত, সেখানে রাজ্যের জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই থেকেই কুপার্নিকাস, গ্যালিলিও, ব্রুনোদের মত সন্ন্যাসী খ্রিস্টান যাযকরা সাধনা করতেন। যে সাধনা খ্রিস্টীয় মহাকাশ বিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীত! কোন মাদ্রাসার হুজুরদের মধ্যে একজন গ্যালিলিও জন্ম নেবার কোন সুযোগ আছে কি? যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল হারাম হালাল, নারী পর্দা, জিহাদ, কতল এইসব ছাড়া ভিন্ন কোন জ্ঞানই বর্জনীয়, ‘তাগুদি’ অর্থ্যাৎ মানব সৃষ্ট সমস্ত জ্ঞানই যেখানে কুফরি সেখানে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠে না। বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই বাংলা সাহিত্যের প্রথম কবি। সেখানে মুহাম্মদের দর্শনে সব রকম শিল্পসাহিত্যই হারাম শিরকের কাজ।
মধ্যযুগের চার্চ গ্যালিলিও ব্রুনোদের উপর চালানো অত্যাচার কেউ অস্বীকার করছে না। এখানে বলা হচ্ছে চার্চের লেখাপড়ার পরিবেশ সেই মধ্যযুগেও ছিলো অবাধ। মাদ্রাসা এক বইয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মুসলমানদের অসভ্য করে রাখার কোন প্লাণ থাকলেই কেবল মাদ্রাসা শিক্ষা জারি করে রাখা উচিত।