গোরুর গো ভারতবর্ষের গোমাংস খেতে অতি উৎসাহী বুদ্ধিজীবীরা চিৎকার করে বলছেন.

গোরুর গো
ভারতবর্ষের গোমাংস খেতে অতি উৎসাহী বুদ্ধিজীবীরা চিৎকার করে বলছেন “আমরা কি খাবো কি খাবো না তা রাষ্ট্র বলার কে? এটা মানুষের জন্মগত অধিকার।”
কথাটা যদি অশিক্ষিত মানুষ বলত তবে তা নিয়ে সমস্যা ছিলনা। কিন্তু যারা বলছেন তারা কেবল শিক্ষিত তাই নয় এরাই ভারতের বুদ্ধজীবী। এদের মাথায় সুবুদ্ধির অভাব পুরন করেছে নানা রকম দুর্বুদ্ধি। এরা মানুষের কথা ভাবেন না, ভাবেন রাজনীতির কথা। এরা বিজ্ঞানের কথা ভাবেন না ভাবেন রাজনীতীর কথা। জ্ঞানে এরা দুর্বল কিন্তু কুযুক্তিতে প্রবল।
এরা যখন এমন দাবী করছেন তখন বিশ্বের অন্যত্র কি ঘটছে দেখা যাক। ওবামা শুকরের মাংশ আমেরিকার সকল জেলে নিষিদ্ধ করেছেন গত মাসেই। এর কারন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শুকরের মাংশ সকলে খাননা বলেই তা দেয়া যাবেনা। অর্থাৎ যে খাদ্য কোন সম্প্রদায় খাবেন না তা সরিয়ে ফেলার নীতি আমেরিকা গ্রহন করল এ মাসে। কোন কোন  দেশ তার ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য কোন নির্দিষ্ট খাদ্য বর্জন করতে পারে। আমেরিকায় কুকুর ও ঘোড়ার মাংশ নিষিদ্ধ। অস্ট্রেলিয়া কুকুর বিড়ালের মাংশ নিষিদ্ধ তবে ঘোড়ার মাংশ নিষিদ্ধ নয়। পাকিস্তানে কোটি কোটি গাধা আছে কিন্তু গাধার মাংশ নিষিদ্ধ কারন তা ইসলামে হারাম। অনুরূপভাবে শুকরের মাংশও পাকিস্তানে বিক্রি নিষিদ্ধ। নেপালে গরু নিষিদ্ধ।কিউবা কমুনিষ্ট , গো মাংস  নিয়িদ্ধ।সুতরাং যা ইচ্ছা খাবার সুজোগ আছে যারা ভাবেন তারা হয় না জেনেই বলেন অথবা অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন।  বিশ্বের সকল দেশেই এ ভাবে একটা নিয়ন্ত্রন বলবত আছে।
    ভারতে গো মাংশকে সাম্প্রদায়িকতার অংগ হিসেবে চিহ্নিত করছেন অনেকেই এবং তারা বলছেন  হিন্দুত্ববাদ গোমাংশ নিষেধ করতে চাইছে। গোমাংস হিন্দুরা অতীতে খেত এখনোও খায়, কিন্তু যারা গরুকে দেবতুল্য মনে করে এবং যারা গো নিধন দেখাকে পাপ হিসেবে গন্য করে তাদের কথা বিবেচনায় না এনে কি আমরা চলতে পারি?
  ধর্মীয় অনুভুতি কি কেবল মুসলমানদেরই থাকবে? অন্যদের থাকতে নেই? নবীর ছবি আকার অধিকার কি আপনাদের আছে হে ভারতের বুদ্ধজীবীগন? একে দেখাতে পারেন সেই অধিকার আপনাদের আছে? –না সে অধিকার ভারতের বুদ্ধিজীবীদের দেয়া হয়নি-সেটা করা মাত্র শিরচ্ছেদ হবে। বিশ্বের অনেকে মরে  দেখিয়েছে কি প্রতিক্রিয়া তাতে হয়। সুতরাং ধর্মে যদি কারোও আঘাত লাগে তবে তা যতই যুক্তিযুক্ত হোক তা ত্যাগ করেই চলতে হবে।  ভয় পেলেই মাথা নোয়াবো এই নীতিতো গুন্ডামীকে উসকে দেয়। শিখতে হবে শালীনতা–এটাই গনতন্ত্রের প্রথম শর্ত। ধর্ম কোন বিজ্ঞান নয়-ধর্ম সবগুলোই একই ভাবে বিশ্বাস নির্ভর। যুক্তি দিয়ে পারবেন এমন বড় জ্ঞানী আপনারা হতে পারবেন না।
  গরু ইসলামে নির্ধারিত কোন খাদ্য নয় সুতরাং এর সাথে ইসলাম বা হিন্দুত্বকেও টেনে আনার দরকার নেই। গরু নিয়ে ব্যবসায়ীরা কি করবেন সেটা তাদের ব্যাপার। পাকিস্তানের গাধা নিয়ে গাধার মালিকেরা কি করছে জানুন, আমেরিকার ঘোরার মালিকেরা কি করছে জানুন-সেটা ব্যবসায়িক দিক। আমরা ভাব্তে চাই সাধারন মানুষের কথা যারা গরুর মত একটা পশুকে দেবতা জ্ঞান করে সে কি আসলেই ভুল করছে আর ভুল করছেনা যারা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মন্দির মসজিদ বানাচ্ছে যারা তীর্থের নামে মক্কা কাশীতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করছে। আসলে সাধারনের দেবতা এখনোও প্রকৃতিতে প্রানীতে আমাদের মত অট্টালিকায় নয়–সেটা কি কেউ বুঝেনা? গরু খাবার গো ধরে হয়ত জেতা যাবে কিন্তু মানবতার পরাজয় হবে তখন। সকলকে সম্মান করতে শিখুন–তাতে ক্ষমতা নাইবা গেলেন মনুষ্যত্বের পরিচয়টা ফিরে পাবেন তাই বা কম কিসে? ভারতে কি আসলে মানুষের এতো অভাব?