সাকিব আল হাসান কেন নকল দাড়ি লাগিয়ে ‘জুম্মা মোবারক’ ছবি পোস্ট করেছিলেন? সুইজারল্যান্ডের হার্সল্যান্ড নামক একটি ক্লিনিকে মানুষের এমআরআই মেশিনে কুকুরের এমআরআই করা সম্ভব কিনা- সেরকম একটি গবষেণা করতে গিয়ে কুকুর আর মানুষের শরীরের লোমের তথ্য বেরিয়ে আসে। গবেষণা করে জানা যায় কুকুরের শরীরের লোমে যত জীবাণু থাকে একজন পুরুষের দাড়িতে তারচেয়ে বেশি জীবাণু থাকে। সাকিব আল হাসান নাকি সেই বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতিবাদেই নকল দাড়ি লাগিয়ে জুম্মা মোবারকের ছবি পোস্ট করেছে!
ইসলামিক কিছু সাইট ও রাজাকার আবদুল মান্নানের ইনকিলাবের ভাষ্য অনুযায়ী সুইজারল্যান্ডে বিজ্ঞানীরা রসূলের দাড়ি মোবারক নিয়ে কট্টাক্ষ করায় সাকিব ক্ষুব্ধ হয়ে অভিনব এই প্রতিবাদের ব্যবস্থা করেছে। ঘটনা সত্য হতে পারে কারণ সাকিবের দাড়িটি ছিলো নকল। শুক্রবার নকল দাড়ি লাগিয়ে সে তার ভক্তদের জুম্মা মোবারক জানাবে কেন? সাকিব জানে না তার ভক্তদের কাছে দাড়ি কতখানি আবেগের? দাড়ির জন্য তারা মানুষ খুন করতে পারে! রাস্তা অবরোধ করতে পারে। তিনদিন হরতাল ডাকতে পারে…। তার সেই পোস্টে কমেন্টসকারীরা না বুঝে শুরুতে ধুয়ে দিয়েছিলো তাকে। কেন সে রসূলের দাড়ি মোবারককে অপমান করেছে। কেন সে দাড়ি নিয়ে ঠাট্টা করল… হুমকি ধামকি। কিন্তু যখন জানা গেলো সাকিব সুইজারল্যান্ডের গবেষণার প্রতিবাদ করেছে অমনি পরিবেশ পাল্টে গেলো। সাকিবের একজন ফ্যান কমেন্ট করল, ‘দাড়ি ফেইক না অরিজিনাল সেটা বড় কথা না।ইসলাম বিরোধীদের নিত্যনতুন চক্রান্তের বিরুদ্ধে এই ছবিটা একটা নিরব প্রতিবাদ। মুখে দাড়ি মানেই সে জঙ্গি নয়। দাড়ি রাখা মানেই সে জীবানুর ধারক ও বাহক নয়। দাড়িযুক্ত চেহারা মানেই সে চরমপন্থী নয়, সে সন্ত্রাসী নয়। দাড়িযুক্ত লোক মানে সে শান্তির প্রতীক।..ছবিটার ভাষা বলে শেষ করা যাবেনা। স্যালুট ইয়্যু সাকিব’। আরেকজন মন্তব্য করেছে, ‘দাড়িতে অনেক ক্ষতিকর জীবাণু থাকে পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর এমন নিউজের প্রতিবাদ স্বরূপ সাকিব এই ছবি আপলোড করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একজন মুসলিম হিসেবে সবার প্রতিবাদ করা উচিত। ধন্যবাদ সাকিব ভাইকে’। শত শত এরকম মন্তব্যয় ভেসে গেছে সাকিবের পোস্ট যেখানে দাড়ির বিরুদ্ধে পশ্চিমা ইহুদীনাসারাদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সাকিবের প্রতিবাদের তারা গর্বিত!
সাকিব আর তার ভক্তরা যে একই গোডাউনের মাল হবে সেটাই স্বাভাবিক। সুইজারল্যান্ডের একটি ক্লিনিকে মানুষের দাড়িতে জীবাণু থাকে কুকুরে শরীরের চেয়ে বেশি- তাতে মুসলমানরা পার্সনালি নিবে কেন? দাড়ি কি কেবল তাদের গালেই উঠে? দাড়ি শিখরা রাখে না? হিন্দুদের বড় বড় সাধু সন্ন্যাসীদের দাড়ি আছে না? যীশুর মুখে দাড়ি আছে না? দুনিয়ার কেউ দাড়িতে জীবাণু থাকার সংবাদে প্রতিক্রিয়া দেখালো না দেখালো মুসলমানরা! দাড়ি তাদের বাপের সম্পত্তি? এরা তো দুনিয়ার ক্ষমতা একা নিতে পারলে অমুসলিমদের দাড়িই রাখতে দিবে না! সাকিবের মত সেলিব্রেটি যখন এরকম প্রতিবাদ করেন তখন আমাদের সমাজের শ্রেণী নিয়ে নতুন করে গবেষণা করার তাগিদ অনুভব করি। মাশরাফির মেয়ে ‘জাতীয় হিফজুল কোরআন’ প্রতিযোগিতায় কুরআন তেলাওয়াত করে পুরস্কৃত হয়েছেন। মাশরাফি তার মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়াচ্ছে! এরকম কোটিপতিদের ছেলেমেয়েরা যদি মাদ্রাসায় পড়ানো শুরু করে তাহলে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে গবেষণা করার প্রয়োজন আছে। গরীব অর্থাভাবে কেউ মাদ্রাসায় পড়ে না। সাকিব সারা দুনিয়ার বড় বড় ২০টুয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলে এসে নানা জাতির সঙ্গে মিশেও তার ছাগুত্ব কেন পরিত্যাগ করতে পারল না এগুলো চিন্তার বিষয়। দাড়ি নিয়ে একজন শিক্ষিত মানুষের এতখানি অনুভূতি থাকবে কেন? দাড়ি তো ছাগলেরও আছে! একটা বৈজ্ঞানিক গবেষণার পিছনেও সাকিবের মত লোকজন ইহুদীনাসারাদের ষড়যন্ত্র খুঁজে! এই হচ্ছে আপনাদের ‘নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা’!