ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এরকম অধপতনের জন্য দ্বায়ী কারা?
কাস্মীর নিয়ে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরাও রাজপথে নেমেছে। জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে ভারতের পার্লামেন্ট। এর প্রতিবাদে সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ইকবাল হাসানসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী। ১৯৭০-৭১ এর ছাত্র ইউনিয়ন আর ডাকসুর সাথে আজকের ছাত্র আন্দোলন মিলাতে পারছিনা।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে বা তার পরেও কোন মুসলীম দেশ কি বাংলাদেশকে সমর্থন করেছিলো? না করেনি বঙ্গবন্ধু ওআইসি সম্মেলনে যোগদান করার পরও তাঁর জীবদ্দশায় কোন মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে সমর্থন দেইনি, তার কারণ কি আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্ররা জানে? এই সহজ সমীকরণ বুঝতে যারা পারেননা তারা কিভাবে এখন ভারতের লোকসভায় ৩৭০ ধারা ও ৩৫ ক ধারা বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তায় নামে? এই আইনি ধারা সমুহ ১৯৪৮ সালেই ভারতীয় সংবিধানে অস্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধকরণ হয়েছিলো এবং প্রতি ছয়মাস পরপর তা পর্যবেক্ষণ করারা কথা থাকলেও গত ৭০ বছর ধরে তা করা হয়নি। নরেন্দ্র মোদীর রাজনীতির বহু সমালোচনা থাকলেও জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এই সিদ্ধান্তকে বেশিরভাগ ভারতীয় জনগণ ইতিমধ্যে সাধুবাদ জানিয়েছে।
ঢাকায় ছাত্রসমাজ ছাড়াও আর যারা বাংলাদেশের মোল্লারা এখানে কাশ্মীর যুদ্ধে যাবার জন্য মঞ্চে মুজাহিদী জং লড়ছে পল্টনের মোড়ে, তাদের এন্টেনায় এখন শুধুই কাশ্মীর। তাদের ঈমানী দায়িত্ব শুধুমাত্র কাশ্মীরের মুসলমানদের রক্ষা করা, তাদের জন্য যুদ্ধ করা। তাদের এন্টেনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নেই, আরাকান নেই, উইঘুর নেই, সিরিয়া-ইরাক নেই, জাফনা নেই, মনিপুর নেই, ফিলিপিনস নেই, আলজেরিয়া নেই, ইথিওপিয়া নেই, ইয়েমেন নেই, বেলুচিস্তান নেই, কুর্দিস্তান নেই!
এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা দেশে যে এতশত ইস্যু তৈরি হয়েছে, ধর্ষণ, শিশুহত্যা, ব্যাংক লুটপাট, ক্রসফায়ার, গণপিটুনি, গুজব তার একটার জন্যেও কি রাস্তায় নেমেছে? এরা আছে ধর্মীয় জজবা কায়েমের ধান্ধায়। ঠিক একইভাবে ভারতের উগ্রবাদী হিন্দু সভা, আরএসএস আর এই জাতীয় ধর্মান্ধ জাতান্ধ গোষ্ঠিগুলোরও চারণভূমি একমাত্র এই কাশ্মীর। কাশ্মীর ইস্যু।
৭১ এর পরে কিসের জন্য আমাদেরকে মুসলিম বিশ্ব স্বীকৃতি দেয়নি, জানেনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা? আমরা কি মুসলমান ছিলাম না? অথচ আমেরিকা, চীন পাকিস্তানের মিত্র ছিলো, এই সহজ সমীকরণ বুঝতে যারা পারেননা তারা কি চায়?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৈত্রী ইমানি জোস নিয়ে মিছিল করেছে কাস্মীরের জন্য। কাস্মীরের নির্যাতিত মানুষের কথা বঙ্গবন্ধু সেই সময়ই বলে গেছেন। বলে গেছেন গনভোটের কথা। ইয়ামেনের কংকালসার শিশুদের জন্য বুক কাঁপেনা, উইঘুরে চীনে অত্যাচারিত মুসলমানদের কথা ভেবে এসব ছাত্ররা কষ্ট পাননা, পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের মুসলমানদের জন্য মানবতা জেগে উঠে না, কেননা ভাসুরের নাম মুখে আনতে নেই।
পাকিস্তানের আর্মিরা বেলুচিস্তানের মুক্তিকামি মুসলমানদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছে তার জন্য মোল্লাদের মুখে রা নেই। আর কতকাল একটি ভঙ্গুর, বর্বর রাষ্ট্রের জন্য দালালি করবেন। ভারতের আগ্রাসন নিপিড়ত কাস্মীরীদের জন্য মন কাঁদছে প্রত্যেকটি বিবেকবান মানুষের বিশ্বের প্রত্যেকটি নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য মন কাঁদবে একজন মুক্তিকামি মানবতাবাদীর, এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত আপনাদের দ্বীচারিতা দেখে বড়ই বিচলিত হই।
©® ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা Mir Monaz Haque