গতকাল পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি পত্রিকাতে দেখলাম বড়ো বড়ো হেডলাইন “রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি তুলে দিতে চাই মোদী সরকার”
ব্যাস, সকাল বেলা হাওড়া-বর্ধমান লোকালে খন্যান ষ্টেশনে চেপেই দেখছি সব ডেইলি প্যাসেঞ্জাররা মোদীর গুষ্টির ষষ্ঠী পুজো করছে ।
বলি, দাদা ভর্তুকি দিয়ে আর কতদিন দেশ চলবে, জনসংখ্যা তো ১৩০ কোটি ছুঁই ছুঁই,
আপনারা ২ টাকায় চাল নেবেন সেখানেও ভর্তুকি,
সরকারের টাকায় বাড়ী চাইবেন,
সরকার আপনার মা-বোনের ইজ্জত বাঁচাতে ভর্তুকি দিয়ে শৌচাগার বানিয়ে দেবে,
সরকার আপনার রাতে যাতে ঘুম হয় তার জন্য কম পয়সায় ভর্তুকি যুক্ত ইলেকট্রিক কানেকশন দেবে,
সরকার আপনার বিল বাঁচাতে ভর্তুকি দিয়ে এলইডি বাল্ব দেবে,
এমনকি সরকার আপনাকে রান্নার গ্যাস টাও ভর্তুকিতে দেবে যাতে আপনার মা, বৌয়ের চোখের জলটা না পড়ে ধোঁয়ার জন্য…..
সরকার মানে কি রাজনৈতিক দল, নাকি সরকার মানে দেশ?
বলি, আপনারা তো রোজগার করে ব্যাঙ্কে, ইনসুরেন্সে টাকা জমা দেন যাতে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম সুখে বাস করতে পারে, তাহলে সরকার যদি ভর্তুকি তুলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে সেখানে আপনাদের এতো ফাটার কি আছে?
যদিও গ্যাসের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, যাদের বাৎসরিক আয় ১০ লক্ষ টাকার উপরে তাদের রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে, এই আইন সবার জন্য প্রযোজ্য নয় ।
কংগ্রেস ২টাকায় চাল, বিনামূল্যে জল দিয়ে দেশের গুষ্টির ষষ্ঠী পুজো করে দিয়ে গেছে ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করার জন্য, অন্যদিকে সিপিএমের ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মমতাময়ী মা জননী ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকা আরোও দেনা করে ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করার জন্য বিনামূল্যে সাইকেল, ২৫ হাজার করে নগদ প্রনামী, বেকার ভাতা, ইমাম ভাতা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গুষ্টির পিন্ডি চটকাচ্ছেন আর আপনারা হাততালি দিয়ে বলছেন “উন্নয়নের জোয়ার ব়ইছে”….
বলি, ঋণ করে মাংস ভাত কতদিন খাবেন? একদিন তো আপনার মাংসের দোকানের ঋন মেটাতে আপনার সন্তানদের সোয়াবিন ভাত জুটবে না….
আমি বলিনি যে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্প খারাপ, তাই বিচার বিবেচনা করে যোগ্যদের দেওয়া উচিত ছিল অযথা কোটিপতিদের স্কুটি চাপা মেয়েদের সাইকেল টা না দিলেও চলতে, কিছু মেয়ে তো কন্যাশ্রীর টাকা রেড মি নোট ৪ কিনে ঘুরছে । যদি ওই টাকা প্রকৃত গরীব পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হত তাহলে অযথা এতো ঋন করতে হত না…..
ভর্তুকি দিয়ে দেশ চলতে পারে না, এমনকি মানুষের ভোট় জিতে নেতা-মন্ত্রীদেরও ভর্তুকি বন্ধ করা উচিত, যতদিন না মানুষকে সাবলম্বী গড়ে তুলতে পারা যাবে ততদিন ভারতবর্ষের বুকে গরীব নামক শব্দটা জীবিত থাকবে ।
গ্যাসের ভর্তুকির টাকা কর্মসংস্থানের কাজে লাগুক, ২ টাকার চালের ভর্তুকির টাকা কৃষকদের ঋন মুকুবের কাজে লাগুক, হজ যাত্রার ভর্তুকির টাকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাজে লাগুক, নেতা-মন্ত্রীদের দেওয়া ভর্তুকির টাকা জনসেবায় কাজে লাগুক, তবেই ভারত শ্রেষ্ঠ আসনে বসবে…..
আমি দেশের জন্য ৮ঘন্টার বদলে ১০ ঘন্টা খাটতে রাজী আছি, আমার সরকারী ভর্তুকি চাই না, আমি চাই ভর্তুকি তুলে দিয়ে ভারতকে সর্বশক্তিমান রাষ্ট্রে পরিণত করা হোক, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে শুনতে না হয় ভর্তুকি খেয়ে খেয়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের ভবিষ্যত নষ্ট করে দিয়ে গেছে ।
বিল গেটসের সেই বিখ্যাত লাইন – গরীব হয়ে জন্মানোটা অপরাধ নয়, গরীব হয়ে মরাটা অপরাধ, তাই প্রত্যেক ভারতবাসীর উচিত মানসিকতা পরিবর্তন করে ২ টাকার চাল, তেলের ভরসা না করে সঠিক কর্ম করা যাতে ভর্তুকির ভরসা না করতে হয় ।
ভবিষ্যত প্রজন্মের কে দেখিয়ে দিয়ে যাওয়া উচিত আমাদের যে আমরা নিজেরা নিজেদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারি রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করার জন্য…..
বন্দেমাতরম, ভারত মাতা কি জয়, জয় হিন্দ