জেহাদ কথাটা কুরানে বার বার এসেছে, জেহাদ না বুঝলে ইসলামকে বোঝা যাবে না। হিন্দু পন্ডিতরা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, জেহাদ হলো পাপের বিরুদ্ধে লড়াই, মন্দের বিরুদ্ধে লড়াই, অধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই। কেউ কেউ আবার আরো এক কাঠি এগিয়ে বলেন, মানুষের নিজের মনের মধ্যে যে সব কুপ্রবৃত্তি আছে তার বিরুদ্ধে সংগ্রামই হলো জেহাদ। কিন্তু জেহাদ মানে এইসব কিছুই নয়। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের জন্য অমুসলমানদের বিরুদ্ধে সবরকম শক্তি প্রয়োগ করে যুদ্ধ করাই জেহাদ। আরবি জেহাদ শব্দের আক্ষরিক মানে হলো উদ্দ্যেশ্য সাধনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা।
উদ্দ্যেশ্যটা স্পষ্ট, তা হলো সারা পৃথিবীতে যেন তেন ভাবে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠা।
সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বলতে শুধু সশস্ত্র লড়াই বুঝায় না, ইসলামের পক্ষে অমুসলমানদের বিরুদ্ধে যে কোন রকম কাজই বুঝায়।
হাদিস বুখারী শরীফের কিতাব-উল জিহাদ অধ্যায়টি দেখুন। সশস্ত্র জিহাদিদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করা, খাদ্যও আশ্রয় দেওয়া, প্রয়োজনে লুকিয়ে রাখা, জিহাদিদের পক্ষে উকালতি করা, প্রবন্ধ লেখা, ইসলামের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা, প্রবন্ধ লিখে তথ্য বিকৃত করে বা, যে কোন উপায়ে অমুসলমানদের বিভ্রান্ত করা, বোকা বানানো, প্রবোঞ্চিত করা, ভুলিয়ে ধরে এনে হত্যা করা, ছলে বলে কৌশলে অমুসলমান নারী অপহরণ বা, ধর্ষণ করা, অমুসলমানদের ভয় দেখানো কিংবা তাদের অর্থ দিয়ে বশিভূত করে অমুসলমানদের দিয়েই অমুসলমানদের জব্দ করা, ধমন করা, লুন্ঠন করা বা, আর্থিক ক্ষতি ঘটানো এ সবই হলো জেহাদ। প্রায় দেখা যায় মুসলমান যুবকরা হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করে বা, বিয়ের আগেই শারিরীক সম্পর্ক করে বিয়েতে বাধ্য করে, এটাও জেহাদ। এতে যেমন একটি হিন্দু মেয়েকে মুসলমান করা গেল আবার একটি হিন্দু পরিবারকেও কব্জা করা গেল। হিন্দু বুদ্ধিজীবীদের হাত করে তাদের দিয়ে ক্রমাগত হিন্দু বিরোধী প্রবন্ধ লিখিয়ে হিন্দু সমাজকে হিন্দু ধর্মের প্রতি বৃতীশ্রদ্ধ করে তোলাও জেহাদ। আবার হিন্দুদের চোখের সমানে গো হত্যা করে তাদের মনে কষ্ট দেওয়াটাও জেহাদ।
অমুসল্মানদের অপহরণ করে অর্থ আদায় যা মুহাম্মদ বহুবার করেছেন, কিংবা অমুসমানদের মাদকদ্রব্য বিক্রি করে অর্থ লাভের সাথে সাথে অমুসল্মানদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করাও জেহাদ। ন্যায় অন্যায় যে কোনভাবে জেহাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করাও বৈধ এবং তাও জেহাদ। মদ্যপান, সুদ গ্রহন প্রভৃতি যেসব আচরণ কুরানে সাধারন ভাবে নিষিদ্ধ জেহাদের জন্য প্রয়োজন হলে সে সব ই মুসল্মানেরা করে থাকে। অনেক মুসলমানকে দেখা যায় হিন্দুদের পত্রিকায় তারা ইসলামকে একটা মহান সহনশীল ধর্ম হিসাবে দেখিয়ে, হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল প্রবন্ধ লিখে হিন্দু সমাজে মহান উদার সেকুলার মুসলমান হিসাবে নাম কিনেন। খোঁজ করলে দেখা যাবে এদের অনেকেরই হিন্দু স্ত্রী আছে, অর্থাৎ এরা হিন্দু নারী বিয়ে করে জেহাদের অবশ্য কর্ম সম্পূর্ণ করে এখন মিথ্যে প্রবন্ধ লিখে হিন্দুদেরকে বোকা বানাতে এসেছেন। যাতে হিন্দুরা ইসলামের স্বরূপ কখনো বুঝতে না পারে। এরা আসলে আরো বড় জেহাদি। সে কারনেই মুসল্মানের এদের কিছু বলে না। এরা যদি প্রকৃত ই হিন্দু দরদী হত মুসল্মানেরা তাদের অনেক আগেই হত্যা করতো, কারন ইসলামে মুনাফিক বলে একটি কথা আছে। এর অর্থ যে ব্যক্তি মুসলমান হয়েও জেহাদ করেনা, বা অমুসলমানদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন অর্থাত এক কথায় ভন্ড। এই মুনাফিকদের জন্য কিন্তু কাফেরদের মতোই কঠিন শাস্তির বিধান আছে, সুরা ৩৩ আয়াত ৬১, সুরা ৬৬ আয়াত ৯, সুরা ৯ এবং আয়াত ৭৩।
ইসলামে মুর্তাদ বলে একটি কথা আছে, এর অর্থ ধর্মত্যাগী, কোন মুসলমান ইসলাম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করলে তাকে মুর্তাদ বলে। এবং যে কোন মুসলমানের অধিকার আছে মুর্তাদকে হত্যা করার। মুসরিদ ও মুর্তাদকে হত্যা করাটাও জেহাদের অঙ্গ।
তাহলে দেখা যাচ্ছে জেহাদের অর্থ অতি ব্যাপক।
জেহাদের প্রকৃত অর্থ হিন্দুদের বুঝতে না দেওয়ার জন্য মুসলমান এবং তাদের অনুগত হিন্দু দুর্বুদ্ধিজীবীরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কারন জেহাদের সাফল্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে ইসলামের ভবিষ্যৎ আর জেহাদের প্রকৃত মানে সময়মত বুঝতে না পারার উপর নির্ভর করেছে হিন্দুদের অস্তিত্ব। কুরানে এবং হাদিসে জেহাদের মানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, কোন মহানুভবতা, আধ্যাত্বিকতা এর মধ্যে নেই। ইসলামের স্বার্থে অমুসলমানদের যে কোন ভাবে হত্যা করা, জদ্ব করা, লাঞ্চিত করা, ভীত করা, লুন্ঠন করাই জেহাদ।
ইসলাম বিপন্ন হলে যুদ্ধ করাটা নিশ্চই জেহাদ, তা চাড়াও বিনা প্ররোচনায় অমুসলমানদের আক্রমন করা, তাদের মন্দির বা দেবতাদের ধ্বংস করাও জেহাদের অবশ্য কর্তব্য। মুহাম্মদ নিজে বহু বার তা করেছেন। আরেকটা কথা বুঝতে হবে জেহাদই কিন্তু ইসলামের প্রথম এবং সর্বোচ্চ কর্তব্য। কোন মুসলমান ব্যক্তিগত জীবনে মহান হলেও প্রচুর দান-দ্যন করে সৎ জীবন যাপন করলেও সে কিন্তু স্বর্গে যেতা পারবে না, যদি না সে জেহাদে অংশগ্রহন করে। কুরান পড়লেই এর মানে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
Rezaul Manik