“মেয়ের বাবাঃ আইজিপি যখন সামান্য হাবিলদারকে ফোন করে অনুরোধ করেছে, এটা ফেলতে পারি স্যার? আমি রাজি। আপনার দাওয়াত রইলো বিয়েতে। আসবেন তো?
আমিঃ আইজিপি অনেক বিজি মানুষ। তিনি আসতে পারবেন না।
মেয়ের বাবাঃ “তিনি” মানে? তাহলে তুই কে? ও রে আক্কাইচ্ছা… খাইছি তরে…!”
কথোপকথনে সামান্য “পুরুষগত” (person) ভুল হওয়ায় আমি ধরা খেয়ে গেলাম মেয়ের বাবার কাছে। বিয়ের দাওয়াতের উত্তরে আমার বলা উচিত ছিলো, “আমি অনেক বিজি মানুষ। আমি আসতে পারবো না”। এটা বললে আর ধরা খেতাম না। কিন্তু যেহেতু আমি আক্কাস আলী হয়ে পুলিশের আইজিপি সেজেছি, তাই মুখ ফসকে এই ভুলটা হয়ে গেছে।
আমার এই ধরা খাওয়ার উদাহরণটা কেন দিলাম বলতে পারেন? কারন, ঠিক একইভাবে মুহাম্মদ কোরানের অসংখ্য জায়গায় ধরা খেয়েছেন আল্লাহ সাজতে গিয়ে। আল্লাহর হয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজের বক্তব্য উল্লেখ করে ফেলেছেন কোরানে। মিথ্যে অভিনয় করতে গেলে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। চলুন, কোরানে মুহাম্মদের এমন ধরা খাওয়া নিয়ে কিছু উদাহরণ দেখে নিই।
Quran 51:50
অতএব, আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আমি তাঁর তরফ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
উপরোক্ত আয়াতটা লক্ষ্য করুন তো? কথাটা কে বলেছে? এটা তো সুস্পষ্ট যে, কথাটা আল্লাহর নয়, মুহাম্মদের নিজের মুখের কথা। বক্তা এখানে মুহাম্মদ। বিষয়টা আরও ক্লিয়ার হওয়ার জন্যে আয়াতটার পেছনের আরও কয়েকটা আয়াত দেখি চলুন।
Quran 51: 46-50
আমি ইতিপূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি। নিশ্চিতই তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়।
আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই ব্যাপক ক্ষমতাশালী।
আমি ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম।
আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।
অতএব, আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আমি তাঁর তরফ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
৪৬ থেকে ৪৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত দেখুন, সবগুলো আয়াতে “আমি” বলতে আল্লাহকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ সরাসরি কথা বলছেন। কিন্তু, ৫০ নম্বর আয়াতে এসে মুখ ফসকে মুহাম্মদের নিজের উক্তি বেরিয়ে গেলো!
আরও একটা উদাহরণ দেখি।
Quran 16:51
আল্লাহ বললেনঃ “তোমরা দুই উপাস্য গ্রহণ করো না। উপাস্য তো মাত্র একজনই। অতএব আমাকেই ভয় কর।”
এই আয়াতে, আল্লাহর কথাটা উদ্ধৃত করা হয়েছে অন্য একজনের মুখে। কে সেই অন্য একজন? নিঃসন্দেহে সেটা মুহাম্মদ যিনি এই কথাটা বলেছেন। উপরোক্ত আয়াতটি কখনই আল্লাহর বানী নয়, মুহাম্মদের বাণী।
সূরা ফাতিহা কোনদিন বাংলা অর্থসহ পড়েছেন? না পড়ে থাকলে চলুন আজ পড়ি।
Quran 1:1-7
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
যাবতীয পরশংসা আললাহ তা’আলার যিনি সকল সষটি জগতের পালনকরতা।
যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
যিনি বিচার দিনের মালিক।
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
সূরা ফাতিহার অর্থ লক্ষ্য করুন। “শুরু করছি আল্লাহর নামে…” আল্লাহ কি আল্লাহর নামে শুরু করবে? আবার, “আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি…” “আমাদের সরল পথ দেখাও…” এইসব যে মুহাম্মদের নিজের মুখের কথাবার্তা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
উল্লেখ্য যে, সূরা ফাতিহার এমন কথাবার্তা দেখে অনেক সাহাবী সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তারা দাবী করেছিলেন সূরা ফাতিহার বক্তা যেহেতু আল্লাহ নিজে নয়, তাই এটি কোরানের অংশ হতে পারেন না। এরুপ দাবীকারী সাহাবীদের অন্যতম হলেন ইবনে মাসউদ।
আরেকটি আয়াত দেখি চলুন।
Quran 27:91
আমি তো কেবল এই নগরীর প্রভুর এবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি, যিনি একে সম্মানিত করেছেন। এবং সব কিছু তাঁরই। আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি যেন আমি আজ্ঞাবহদের একজন হই। কথা গুলো নিঃসন্দেহে মুহাম্মদের। এমন আয়াত কোরানে বহু আছে। আল্লাহর হয়ে কথা বলতে বলতে মাঝে মধ্যেই মুহাম্মদের নিজের ভাষায় কথা বলে ফেলতেন। এ তো এক বিরাট সমস্যা! তাই না? এভাবে যদি হুজুরে পাক জনসম্মুখে ন্যাংটা হয়ে যান, তাহলে তো বিপদ। কি করা যায় বলুন তো? এ সমস্যার সমাধান করার জন্যে আজকের ত্যানাবাজরা অনুবাদের মধ্যে ব্রাকেট [ ] নীতি এপ্লাই করে। কি সেটা? এমন সব ন্যাংটা আয়াতের শুরুতে ব্রাকেটের ভেতর লিখে দেয় [say, o Muhammad], [বলুন]… ইত্যাদি টার্ম। এটা একটা নিছক জোচ্চুরি ছাড়া কিছুই নয়। অরিজিনাল আরবী টেক্সটে বলুন/পড়ুন জাতীয় কোন শব্দই নেই। যেহেতু কোরানে মুহাম্মদের সরাসরি কথা দেখলে বিশ্বাসে ফাটল ধরে, তাই এই ব্রাকেট পদ্ধতি প্রয়োগ করেন অনেকে।
কোরআন থেকে আরও কিছু আয়াত দেখি চলুন।
Quran 84:16-18
আমি শপথ করি সন্ধ্যাকালীন লাল আভার
এবং রাত্রির, এবং তাতে যার সমাবেশ ঘটে
এবং চন্দ্রের, যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে,
Quran 90:1
উপরোক্ত কসম কাটাকাটি লক্ষ্য করুন। এই ভাবে অসংখ্য আয়াতে মুহাম্মদ সালার পুত নিজেই আল্লাWho!