আবু তালেব ছিলেন মুহাম্মদের চাচা। পৌত্তলিক আবু তালেব একজন চমৎকার মানুষ হিসেবে তদানিন্তন আরব সমাজে সুবিদিত ছিলেন। কিন্তু তিনি ইসলাম প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি মুসলমান ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন মূর্তিপূজারী এবং তিনি কখনই ইসলাম গ্রহণ করেননি।
বাংলা ভাষী মুসলমানদের পূর্বপুরুষরা তাদের ধর্মের সঙ্গে নামেরও ইসলামীকরন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ইসলামের প্রাথমিক যুগে যারা ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, তারা কিন্তু তাদের নাম পরিবর্তন করেননি। আবুবকর, আলী কিংবা ওছমান। ঐসব কিন্তু পৌত্তলিকদেরই নাম। তবে আমরা কেন আমাদের নামটা পরিবর্তন করলাম? হযরত মুহাম্মাদও পৌত্তলিক নাম। আরবি কখনই ইসলামের ভাষা নয়। আরব পৌত্তলিক কাফেরদের দেশ। আরবি কাফেরদের ভাষা। ইসলাম প্রচারকদের সর্বগ্রাসীতা মানুষের সংস্কৃতিকেও গিলে নিয়েছে সব দেশে, সব সমাজে, বেমালুম! কিছু বিশ্রী অর্থের নামও মুসলমানরা রাখে, কোন অর্থ না জেনেই। যেমন, হালিম, বক্কর, জামাল এইসব। আমি বিশ্বাস করি, আজ এই উপমহাদেশে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে যে দূরত্ব এবং বিরোধিতা, তার প্রায় কিছুই অবশিষ্ট থাকতো না, যদি আমাদের মধ্যে শুধু নামের মিল থাকতো।
বাঙালি মুসলমান যদি ইসলাম প্রত্যাখ্যানকারী আবু তালেবের নামে নাম রাখতে পারে, তখন ইসলামের কোন ক্ষতি হয় না, বাংলায় নাম রাখলেই তাদের গায়ে ফোস্কা পড়ে যায়! ইসলামের কী এমন ক্ষতি হতো যদি বাঙালির নাম বাংলায় হতো?
বাঙালি মুসলমানের কোন বংশ পরিচয় নেই! কোন গোত্র নেই! কোন পদবি নেই! কোন ঐতিহ্য নেই!
সব লুট হয়ে গেছে! এরা এতটাই দুর্বল মানসিকতার, এতটাই ঘৃণা রোপণ করা হয়েছে এদের মনে যে, এরা নিজেদের পূর্বপুরুষদের পর্যন্ত অস্বীকার করে বসে থাকে। ইসলাম গ্রহণ করেই এরা নির্দ্বিধায় নিজের রক্তের ভাইদের মালাউন কাফের বলে গালাগাল দিয়ে গর্ব বোধ করে। এরা জন্মভূমি রেখে হাহুতাশ করে ধর্মভূমির জন্য। মাতৃভাষাকে অসম্মান করে হাহুতাশ করে ধর্মভাষার জন্য।
রেজাউল মানিক সংগ্রহ