চাড্ডি শব্দ অর্থ কি? “চাড্ডি” শব্দটি আজকাল বহুল অর্থে ব্যবহৃত হলেও,সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু জামাতি, বামাতি মিলে এই শব্দের উৎপত্তি ঘটিয়েছিলেন। RSS এর “হাফপ্যান্ট” পরা কার্যকর্তাদের উন্মুক্ত হাঁটু দেখে নিজেদের ইমান ঠিক রাখতে না পেরে এই শব্দের ব্যবহার করেছিলেন তারা ।”চাড্ডি” একটি হিন্দি শব্দ যার মানে আন্ডার-প্যান্ট অথবা হাফ প্যান্ট কিন্তু আজ তা বহুল অর্থে ব্যবহৃত হয়।
অনেক নেটিজেন এটাও বলে থাকেন ‘চাড্ডি’ শব্দটা যে কোন রকম গোঁড়ামির জন্যই প্রযোজ্য। অতএব কট্টর সৌরভ গাঙ্গুলি ভক্তকে ‘দাদা চাড্ডি’ বলাই যায়, অথবা কট্টর সৃজিত মুখার্জি ভক্তকে ‘সৃজিত চাড্ডি’। জানি তাতে অনেকের চুলকানী আছে।আসলে সমস্যা অন্য জাগায় চাড্ডি হতে গেলে অবশ্যই আপনাকে নিচের এই বাক্যগুলো একটির সাথে একতা প্রকাশ করতে হবে।
•কেউ দেশের প্রশংসা করলে সে “চাড্ডি”।
•কেউ ভারতে থেকে পাকিস্তান জিন্দাবাদ না বলতে চাইলে সে “চাড্ডি”।
•কেউ “ভারত তেরে টুকড়ে হোঙ্গে” না বলতে চাইলে সে “চাড্ডি”।
•অলিম্পিকে মেডেল জিতে কোন ভারতীয় মেয়ে “ভারত মাতা কি জয়” বললে সে “চাড্ডি”।
•”জামাতি, আলকায়দা, ISIS কিংবা বাগদাদীরা শিক্ষিত হয়েও কেন টেরোরিস্ট?” – এই প্রশ্ন করলে সেকুলাররা আপনাকে “চাড্ডি” বলে ডাকে,অবশ্যই আদর করে।
•অনিচ্ছাকৃত বাংলা বানান ভুল (টাইপো) হলে আপনি “চাড্ডি”। এদিকে যিনি বানান ভুল ধরছেন। তিনি জামা “পড়েন” আর বই “পরেন”! 🙂
•ভারতের মতো একটি দেশে সব মহিলার সমান অধিকারের সমর্থনে তিন তালাক , নিকা হালাল ও বহুবিবাহের বিরোধ করলে আপনি “চাড্ডি”।
•সূর্যের (অবশ্যই আকাশের নয়, আলিমউদ্দিনের) জন্ম-লগ্নের আগে থেকে “গুজরাট গুজরাট গুজরাট ” বলে চিৎকার করে আসা কচি বিপ্লবীগুলির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে টুক করে “গোধরা” বলে দেওয়ার পর, বিপ্লবীরা তাকে যে সুমধুর কর্কশস্বরে ডেকে ওঠে তাই হল “চাড্ডি”।
•আপনি গজবা-ই-হিন্দ (আরব কর্তৃক ভারতে আগ্রাসন ও ভারতীয় সংস্কৃতির ধ্বংসসাধন) এর বিরোধ করলে আপনি “চাড্ডি”।
•দুর্গা মুর্তি বা কোন মন্দির ভাঙার প্রতিবাদ করলে আপনি “চাড্ডি”।
•কাশ্মীরের “দার-উল-ইসলাম” এর সমর্থনে (ওনারা বলেন,কাশ্মীরের স্বাধীনতা) রাশি রাশি আবেগ ঝরানো মানুষগুলোকে, শুধু এইটুকু, “যে কাশ্মীরি মুসলিমগুলো ২৫ বছর ধরে লাখ লাখ কাশ্মীরি পন্ডিতের স্বাধীনতা কেড়ে রেখেছে, ঘর ছাড়া করে রেখেছে, তাদের মেয়েদের রেপ করেছে,সেই কাশ্মীরী-জিহাদীদের স্বাধীনতার দাবি কতটা ন্যায্য ?” জিগালেই আপনাকে যে ডাক শুনতে হয়, তা হল “চাড্ডি চাড্ডি চাড্ডি”।•আপনি “পিকে”এর বাকস্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলন না করলে “চাড্ডি”।আবার ওই একই ইস্যুতে “জুলফিকার”এর হয়ে প্রতিবাদ করলে “চাড্ডি”!
•আপনি অযোধ্যাতে রামজন্ম ভূমিতে বাবরী ম্যাসাকার সমর্থন করলে চাড্ডি,আবার নেতাই, সাঁইবাড়ি, নন্দীগ্রাম সমর্থন না করলে “চাড্ডি”।
•শিক্ষার লালীকরণ ও ইসলামীকরণের বিরোধিতা করলে আপনি “চাড্ডি” ।
•আপনি “জয় শ্রী রাম” , “ভারত মাতা কি জয়”, “বন্দেমাতরম” বললে “চাড্ডি”।
•বাংলাদেশ , পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের , শিখদের , বৌদ্ধদের সমর্থনে ও তাদের উপর ঘটে চলা নির্যাতনের প্রতিবাদে কথা বললে আপনি “চাড্ডি” ।
• “বিফ বিরিয়ানি” না খেলে চাড্ডি।
•”শিখ দাঙ্গা” ও “গুজরাট দাঙ্গা”কে আলাদা করতে না পারলে আপনি “চাড্ডি”।
•পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার জুরাংপুর হিন্দু হত্যা , দেগঙ্গা হিন্দু হত্যা , উস্তি দাঙ্গা , কালিয়াচক, ঢোলাহাটের ঘটনার প্রতিবাদ করলে আপনি “চাড্ডি” ।
•আপনি উরি হামলায় নিহত সৈনিকের বাড়ি গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসলে “চাড্ডি”।
•আবার কাশ্মীরে “দার-উল-ইসলাম” প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া সন্ত্রাসবাদী বুরহানের জানাজায় জয়ধ্বনি না দিতে পারলে “চাড্ডি”।
•আপনি সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানালে “চাড্ডি”।
•আপনি ভারতীয় সেনার জন্য গর্বিত হলে, “চাড্ডি” ।
•কেন্দ্র সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করলে আপনি “চাড্ডি” ।
•আপনি সীতারাম ইয়েচুরি, কেজরি-বাল, পাপ্পুর মত দেশের ডিফেন্সকে খিল্লি করে “সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রুফ” চাইতে না পারলে “চাড্ডি”।
•আবার ঈদের দিন হওয়া ঢাকার রক্তনদীকে শতরূপের মত চট করে “ফটোশপ” করে বন্যার জল দেখতে না পারলে আপনি “চাড্ডি”। এবং লেটেস্ট ধর্মপ্রাণা বা প্রাণ মুসলিম ও একই সাথে গর্বিত বামপন্থী না হতে পারলে “চাড্ডি”। ভবিষ্যৎ এ এমনটাও হতে পারে মোদীর সময়কালে বানানো রাস্তায় হাঁটলেও আপনি “চাড্ডি” । তাই আমরা গর্বিত আমরা “চাড্ডি” !!!
নেটিজেনরা হেসে কূল পাচ্ছেন না! অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অবশেষে, এই ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ, অন্য আরও অনেক শব্দের সাথে ‘চাড্ডি’ (ডিকশনারিতে উঠেছে বহুবচন, অর্থাৎ ‘চাড্ডিজ’ বা ‘chuddies’) শব্দটাও প্রশাসনিক ভাবে ডিকশনারির অন্তর্ভুক্ত করেছে – এই খবর পাওয়ার পর থেকেই তাঁদের হাসি থামছেনা। অতি সাধারণ এই হিন্দি শব্দটি, যার অর্থ ‘অন্তর্বাস বা আন্ডার-প্যান্ট ’, তা খোদ অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে উঠে এল কেমন করে? আসলে গত বছর অক্সফোর্ড ডিকশনারির ৯০তম বার্ষিকীতে ডিকশনারির তরফ থেকে ‘ওয়ার্ডস ওয়েয়ার ইউ আর’ (#wordswhereyouare) বলে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়,
যেখানে বিশ্বজুড়ে পাঠকদের কাছে অনুরোধ করা হয় আরও বেশি করে আঞ্চলিক শব্দ পাঠাতে। ডিকশনারির ভাষা যাতে সারা পৃথিবীর ইংরেজিভাষী মানুষের কথ্য ভাষাকে ধরতে পারে, ইংরেজি ভাষার আন্তর্জাতিকতা ও বহুমুখিতার প্রতিফলন হয়ে উঠতে পারে, সেই কারণেই এই উদ্যোগ। অতএব ডিকশনারির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ওয়েলসের ‘জিবন্স’-এর মতন শব্দ, যার অর্থ ‘পেঁয়াজকলি’, অথবা ‘ডফ’-এর মতন আফ্রিকান্স ভাষার শব্দ, যার অর্থ ‘মূর্খ, অশিক্ষিত, বা বোকা’।
লেখক-শে খ র ভা র তী য়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
- রাষ্ট্রভাবনা রবীন্দ্রনাথ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ।-দুরর্ম
- গিলগিত বালতিস্তান প্রদেশের মর্যাদা: পাকিস্তান কি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারল?
- ভারতের সাথে প্রতিবেশী সম্পর্ক: আমরা কেন ইন্ডিয়াকে ঘৃণা করি?-দুরর্ম
- নতুন এক ভান্ডারের খোঁজ -আফগানিস্তানের চলচ্চিত্র আর অন্যান্য প্রতিবেদনের পুনরুদ্ধার।
- এই দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একমাত্র যে দেশে একটিও মসজিদ নাই বা তৈরি করার অনুমতিও নাই।
- আর্যরা বহিরাগত নয়: আর্য দ্রাবিড় এক জনজাতি, ‘আর্যরা বহিরাগত’ এই তত্ত্বের উদ্ভাবনের কারণ কি?
- সতীদাহ কি হিন্দু ধর্মের প্রথা, বাল্য বিবাহ ও রাত্রীকালীন বিবাহের উৎপত্তির কারণ কি? সত্য জানুন।
- বাংলার আত্মঘাতী সেক্যুলার সংস্কৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তির জগতে স্বামী প্রণবানন্দ এক উপেক্ষিত চরিত্র।