গজনীর মাহমুদ

ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, গজনীর মাহমুদ, যে ইতিহাস হয়নি বলা।-দুরর্ম

ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, গজনীর মাহমুদ, যে ইতিহাস হয়নি বলা। অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখাআছে। সেই লুটের ধরনবর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তুযুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্যএকই আছে। কোনো রাজনৈতিকমতের কথা বলুন বাধর্মীয় মতের কথা বলুন,আসল উদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরেঅত্যাচার করে নিজে ভালোথাকবো।

 

মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবংতার ধারক ও বাহকদেরবাদ দিয়ে এই পৃথিবীরপ্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবংরাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয় করেযুগে যুগে যা হয়েছেসেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপরঅত্যাচার। আজ এই গন্তান্ত্রিকযুগেও সেই কাজ চলছে,সারা পৃথিবীতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামেঅর্থনৈতিক শোষনেরপরিকল্পনা।

 

বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন,রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরা বিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে ,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কে রাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে।

 

আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুট করতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিই ছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী হাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমার ক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।

যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটি বিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার
সেই দেশ আক্রমন করেছে।

পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে। সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে ‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনে হয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। (এই বিষয়ে আর বিস্তারিত প্রশ্ন করবেন না কারন আমি আমার টাইমলাইনে আগেই বেশ কয়েকবার পোষ্ট
করেছি।)

ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, গজনীর মাহমুদ
ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, গজনীর মাহমুদ

আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমন করেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক ,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের শুরু।

এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছু আলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।

 
অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখা আছে। সেই লুটের ধরন
বর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তু যুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্য একই আছে। কোনো রাজনৈতিক মতের কথা বলুন বা ধর্মীয় মতের কথা বলুন, আসল উদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরে অত্যাচার করে নিজে ভালো থাকবো। মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবং তার ধারক ও বাহকদের বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয় করে যুগে যুগে যা হয়েছে সেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপর অত্যাচার। আজ এই গন্তান্ত্রিক যুগেও সেই কাজ চলছে, সারা পৃথিবীতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে অর্থনৈতিক শোষনের পরিকল্পনা।

বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন, রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরা বিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে ,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কে রাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে।

 

আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুট করতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিই ছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী হাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমার ক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।

যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটি বিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার
সেই দেশ আক্রমন করেছে।

পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে। সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে ‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনে হয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন।

আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমন করেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক ,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক
অবক্ষয়ের শুরু।

 

এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছু আলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।

তুর্কী দাস সুবিক্তিগীনের সুপুত্র মাহমুদ। তার ঠাকুরদা, আলাপ্তিগীন ছিলো ‘তুর্কী দাস’, যাদের মুল কাজ ছিলো, খলিফার দেহ রক্ষী হিসাবে। সিন্ধু বিজয়ের পর প্রায় ৩০০ বছর খলিফারা ব্যাস্ত থাকে ইউরোপ, আফ্রিকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করা নিয়ে। সিন্ধু বিজয় করতে যে খেসারত দিতে হয়েছিলো, সেই ঘা শুকাতে অনেক সময় লাগে। তাই আরবীরা অন্য দিকে দৃষ্টি দিয়েছিলো। ভারতের হিন্দু রাজাদের শক্তির কিছু পরিচয় ওরা নিজেরাই পেয়েছিলো।

আর আলেকজান্ডারের কি পরিনতি হয়েছিলো সেটাও জানতে ওদের বাকী ছিলো না। তাই ওদের দৃষ্টি গেলো অন্য দিকে। সেই সুযোগে, খলিফার ই বিজিত দেশ উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানের ক্রীত দাসদের একজন আলপ্তীগীন খলিফার রাজত্বের থেকে আফগানিস্তানের একটি অংশ দখল করে নেয়। খলিফাকে সন্তুষ্ট রাখতে তার অধীনে সামন্ত শাসক হিসাবে,কর দিয়ে খলিফার আশীর্বাদ নিয়ে গজনী কেন্দ্রিক সেই রাজত্ব স্তাপন করে।

আলপ্তীগীনের ছেলে সুবুক্তিগীন সিন্ধুর উত্তর থেকে শুরু করে ,পাঞ্জাব,প্রাচীন গান্ধার রাজ্য এবং কাশ্মীরের অধীশ্বর ‘শাহী রাজ জয়াপালা’র সংগে সংগ্রামে লিপ্ত হয়। সেই প্রচেষ্টা সফল হয় নি (বিস্তারিত পড়ুন আমার আগের লেখা তে)।। সুবুক্তিগীনের মৃত্যুর পর তার সুপুত্র মাহমুদ গজনীর সুলতান হয় ৯৯৮ সালে। তার ঠিক দু বছর পর মাহমুদ তার শ্যেন দৃষ্টি নিয়ে তাকায় ভারতের দিকে। তার কারন মুলত দুটি—- এক,জয়াপালার হাতে তার বাবার হেনস্তা এবং খলিফাকে খুশী করতে ভারতে ‘জিহাদী তান্ডব চালিয়ে’ ৩০০ বছর আগে সিন্ধু বিজয়ী মোহাম্মদ বিন কাসিমের অপঘাতে মৃত্যুর (সিন্ধুরাজ দাহিরের দুই কন্যার অকুতোভয় কুট বুদ্ধির ফলে) বদলা নিতে।

৩০০ বছরে ইসলামের শিকড় সিন্ধুতে খুব শক্ত ভাবেই গ্রোথিত হয়ে গিয়েছিলো। কোরান,হাদিস এবং শরিয়ত সিন্ধুর জন জীবন নিয়ন্ত্রিত করছে তখন। মুহাম্মদ (গজনী) সেই ‘জিহাদী মন্ত্রে’ সুশিক্ষিত। সে খলিফাকে প্রতিজ্ঞা করলো ‘আমি যতোদিন বাঁচবো, প্রতি বছর হিন্দুস্তানের পুতুল পুজোকারীদের জীবন অতিষ্ট করে দেবো, তাদের সর্বস্ব লুট তরাজ করে কেড়ে নেবো,তাদের মন্দিরের সব মুর্তি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেবো,তাদের জমি জায়গার দখল নেবো, ইসলামী শাসন কায়েম করবো”।

 

খলিফা জানতো লুটের মালের (গনিমতের মাল) অর্থ , দাস দাসীর (যৌন দাসী)  আর অভাব হবে না। মাহমুদ তার কথা রেখেছিলো। ১০০০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী  ৩০ বছরে সে ১৭ বার ভারতে আসে লুট তরাজ করতে আর মন্দির ধ্বংস করতে। তার এই মহান ‘জিহাদী’ কৃত কর্মের জন্য ইসলামিক ঐতিহাসিকরা তাকে অকুন্ঠ প্রশংষা করেছে। ‘ফতে-নামা’ তে মাহমুদ নিজের সম্বন্ধে লিখেছে “ ধর্ম যুদ্ধ’ র নায়ক হিসাবে। খলিফা ‘আল কাদির বিল্লা’ তার পাঠানো উপঢৌকনের বন্যায় ভেসে তাকে ‘আমিন–উল- মিল্লা’ এবং ‘ইয়ামিন-উদ-দৌলা’ (দক্ষিন হস্ত) বলে উপাধী দিলো। সেই থেকে মাহমুদের বংশ “ইয়ামিনি বংশ’ বলে খ্যাত হলো।


ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, যে ইতিহাস হয়নি বলা, “গজনীর বর্বর মাহমুদপর্ব  ।।

ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়, যে ইতিহাস হয়নি বলা, “গজনীর বর্বর মাহমুদপর্ব  

ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়যে ইতিহাস হয়নি বলা, “গজনীর বর্বর মাহমুদপর্ব

লেখক- ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

কোলকাতা- ভারত।
 
******** আমার সোর্স, ঐতিহাসিক কে
এস লাল, শ্রী বাস্তব,
রমেশ চন্দ্র মজুমদার, ওইকিপিডিয়া,
এনসাইক্লোপিডিয়া এবং “The legacy Of Jihad, sub
title- Islamic holy war and the fate of Non -Muslims – edited by
Historian,Andrew G Bostom . Published in 2005 by Prometheus Books, 59 John
glenn Drive, Armherst, New York-14228-2119.