CAB নিয়ে অল্প কিছু কথা।

“”CAB নিয়ে অল্প কিছু কথা””

CAB কেন দরকার সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।
আমি যে এলাকাতে থাকি, সেখানের ৭০-৮০ % মানুষ কোননা কোন সময়ে বাংলাদেশ থেকে বিতারিত হয়ে এখানে বসবাস করছে।

১৯৭১ সাল অব্দি রিফিউজি হিসবে বা বিনিময়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেয়েছে।

পরবর্তীতে যারা এসেছে সকলেই বিভিন্ন ভাবে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে নাগরিক হয়েছে। কেও অন্যকে বাবা মা সাজিয়ে, কেও কাউকে ঠাকুরদাদা সাজিয়ে, নেতাদের ধরে, সরকারের আধিকারিকদের মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে,  কেউবা আত্মীয় স্বজন থাকলে তাদের সাহায্যে।
কেউই সরকারের কাছে আবেদন করে হয়নি, কেননা সেরকম উপায় ছিলোনা সেভাবে।

ফলে এতো মানুষ এখানে নাগরিকত্ব পেলো, তার প্রমান ভারতের সরকারের কাছে নেই। আবার বাংলাদেশের থেকে অত্যাচারীত হয়ে এসেছে, তার জন্য বাংলাদেশের সরকার লজ্জায় পড়তেও হয়নি, প্রশ্নের মুখেও পড়েনি আজ অব্দি।
কিন্তু ৩২% থেকে সেখানে ৮% এ নেমে এলো হিন্দু জনসংখ্যা।

কি অদ্ভুত না??

অনেকেই ভাবছে যে করেই হোক নাগরিক তো হয়েছে, তাহলে নতুন করে আবার কিসের নাগরিকত্ব দেবে??

এখানেই মজা লুকিয়ে আছে…

সরকারের বিভিন্ন দফতর নথিপত্র দেখলে ঠিক বুঝতে পারে, কে প্রকৃতি নাগরিক, কে অবৈধ ভাবে এসেছে।
সেজন্য প্রতিনিয়ত এদেরকে মোটা টাকা নিয়ে ঘুরতে হয়।

এখানে এসে ক্লাস এইট বা নাইনে ভর্তি হবে, আগের পড়াশোনার নথি নেই, দেও স্কুল কমিটিকে ঘুষ।
প্রাইমারি স্কুলের নকল সার্টিফিকেট বানাও, দেও সেখানে ঘুষ। এগুলো কখনো ৫হাজার থেকে ২০-৩০ হাজার অব্দি হয়ে যায়।
এখানেও নিস্তার নেই, বানাও নকল বার্থ সার্টিফিকেট সেখানেও এরকম ঘুষ।
তারপরে ভোটারকার্ড, আধার কার্ড করতেও একই রকম ঘুষ দিয়ে যেতে হবে।
কেননা সবাই জানে এরা অবৈধ ভাবে নাগরিক হয়েছে।

কারোও বিরুদ্ধে কিচ্ছু বলার উপায় নেই এদের।

এরপর সরকারি চাকরি পাওয়া বা পাসপোর্ট বানাতে গেলে পড়তে হবে DIB র খপ্পরে, সেখানেও চার্জটা কারও কারও ৩০-৪০ হাজার অব্দিও পৌছিয়ে যায়, ন্যুনতম ৫ হাজার।
ঠিকমতো না হলে তারা বার্থসার্টিফিকেট উক্ত পঞ্চায়েতে,  স্কুল সার্টিফিকেট স্কুলে রিভিউ করতে পাঠাবে। অতোদিনে আগের কমিটির পরিবর্তন হয়েছে। তাই সেখানেও দেও আবার ঘুষ।

এতো কিছুর পরেও এদের মনে ভয় কাটেনা। কোনও ডিপার্টমেন্টর বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে পারেনা।

এভাবেই নাগরিক হয়েও অত্যাচারিত হতে হয় এদের প্রতিনিয়ত।

এবার CAB আসছে। এরা আবেদন করে, সার্টিফিকেট নিয়ে স্বগর্বে মাথা উঁচু করে বলবে ” আমরা ভারতের নাগরিক “।

শুধু তাই নয়,  আবেদনের সংখ্যা যতো বাড়বে, ততোই চাপে পড়বে বাংলাদেশ সরকার। এতোদিন পৃথিবীর অন্যদেশ জানতোই না এই গোপন অত্যাচারের কথা। ভারতে গোপনে নাগরিক হয়ে, এরা চিৎকার করে সেকথা জানাতে পারেনি ভয়ে। ভারতের কোনও সরকার, কোন রাজনৈতিক দল এদের হয়ে গলা ফাটাইনি আজ অব্দি। না বাংলাদেশের কোনও মানবতাবাদী সংগঠন পাশে দাড়িয়েছে এদের।

এবার সকলে জানবে….

এই পরিস্থিতিটা কলকাতা বা বর্ডার এলাকা থেকে দূরে বসবাস করা মানুষেরা বুঝবে না কোনও দিন…