মননশীল লেখক ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ নীরদচন্দ্র চৌধুরী………………।।।

নীরদচন্দ্র চৌধুরী (জন্ম: ২৩ নভেম্বর, ১৮৯৭মৃত্যু: ১ আগস্ট, ১৯৯৯) একজন খ্যাতনামা দীর্ঘজীবি বাঙালি মননশীল লেখক ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ। স্কলার এক্সট্রাঅর্ডিনারী শীর্ষক ম্যাক্স মুলারের জীবনী লিখে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে নীরদচন্দ্র চৌধুরী ভারত সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মাননা হিসেবে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।[১] তিনি তাঁর ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তীর্যক প্রকাশভঙ্গীর জন্য বিশেষভাবে আলোচিত ছিলেন।

কর্মজীবন

উপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ও সুশীলা সুন্দররানী চৌধুরানীর ৮ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় নীরদ চৌধুরী তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশের) কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদীতে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ এবং কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন। এফএ পরীক্ষা পাশ করে তিনি কলকাতার রিপন কলেজে (বর্তমান সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) অন্যতম বাঙালি লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে একত্রে ভর্তি হন। এরপর নীরদ কলকাতার অন্যতম খ্যাতিমান স্কটিশ চার্চ কলেজে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্কটিস চার্চ কলেজেন ছাত্র হিসেবে তিনি ইতিহাসে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং মেধা তালিকায় নিজের স্থান করে নেন। স্কটিশ চার্চ কলেজের সেমিনারে ভারতবর্ষের অতিপরিচিত ব্যক্তিত্ব ও ইতিহাসবেত্তা প্রফেসর কালিদাস নাগের
সাথে অংশগ্রহণ করেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রীতে ভর্তি হলেও ১৯২০-এর অনুষ্ঠিত এম. এ.
পরীক্ষায় অংশ না নেয়ায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করতে পারেননি। এখানেই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি। ইতোমধ্যে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে Objective Methods in History শিরোনামে একটি তাত্ত্বিক প্রবন্ধ রচনা করেন|

নীরদ চৌধুরীর কর্মজীবনের সূত্রপাত হয় ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিসাবরক্ষণ অধিদপ্তরে একজন কেরাণী
হিসেবে। চাকুরীর পাশাপাশি একই সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরণের প্রবন্ধ রচনা করতে
থাকেন। জনপ্রিয় সাময়িকীগুলোতে নিবন্ধ পাঠানোর মাধ্যমে লেখার জগতে
অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। তার প্রথম নিবন্ধটি ছিল অষ্টাদশ শতকের বিখ্যাত বাঙ্গালী কবি ভারত চন্দ্রের
উপর। এই নিবন্ধটি ঐ সময়ে কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত ইংরেজি সাময়িকী
“মডার্ন রিভিউ”-তে স্থান পায়। ইতোমধ্যে ১৯২৪ সালে তাঁর মাতা সুশীলা
সুন্দররানী চৌধুরানী পরলোকগমন করেন।

নীরদ চৌধুরী হিসাবরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে অল্প কিছুদিন পরই চাকুরী ত্যাগ
করেন এবং সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে নতুন কর্মজীবন শুরু করেন। ঐ সময়ে
কলকাতা কলেজ স্কয়ারের কাছাকাছি মির্জাপুর স্ট্রীটে অন্যতম লেখক –
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের সাথে একত্রে বোর্ডার হিসেবে ছিলেন। তিনি তখনকার সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় ইংরেজি ও বাংলা সাময়িকী হিসেবে মডার্ন রিভিউ, প্রবাসী এবং শনিবারের চিঠিতে সম্পাদনা কর্মে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি দুইটি ক্ষণস্থায়ী অথচ উচ্চস্তরের সাময়িকী – সমসাময়িক এবং নতুন পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে দ্য মডার্ন রিভিউ পত্রিকায় রমানন্দ চ্যাটার্জির অধীনে সহকারী সম্পাদকের চাকুরী গ্রহণ করেন। ১৯২৭-এ বাংলা সাময়িকী শনিবারের চিঠি সম্পাদক পদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ বছরই রবীন্দ্রনাথের সাথে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘটে।

নীরদ চৌধুরী ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে লেখিকা অমীয়া ধরের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁদের সংসারে তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।

১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে নীরদচন্দ্র চৌধুরী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদ শরৎ চন্দ্র বসুর একান্ত সচিব হিসেবে চাকুরী গ্রহণ করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি খ্যাতিমান মহাপুরুষ যেমন: মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু-সহ
অনেক খ্যাতিমান রাজনৈতিক নেতাদের সংস্পর্শ পান। ভারতীয় রাজনীতির
অভ্যন্তরে কাজ করার দরুন ও রাজনীতির সাথে নিবীড় ঘনিষ্ঠতা থাকায় ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি সম্বন্ধে সন্দিহান হন। নীরদ চন্দ্র
চৌধুরী স্বাধীনতা আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা
নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এ পর্যায়ে তিনি বাংলা ভাষায় লেখালিখি ছেড়ে দেন।

সচিব হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি নীরদ চন্দ্র চৌধুরী বাংলা ও ইংরেজী
দৈনিক, সাময়িকীগুলোতে প্রবন্ধ রচনা প্রকাশ করতে থাকেন। এছাড়াও, তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিও’র (এআইআর) কলকাতা শাখার রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে নীরদ চৌধুরী অল ইন্ডিয়া রেডিও’র দিল্লী শাখায় কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, প্রখ্যাত সম্পাদক, ঐতিহাসিক এবং ঔপন্যাসিক খুশবন্ত সিং নীরদচন্দ্র চৌধুরী’র বন্ধু ছিলেন। The Autobiography of an Unknown Indian প্রকাশ করেন ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৫৫-তে প্রথমবারের মতো বিদেশযাত্রা; এ দফায় তিনি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালি ভ্রমণ করেন। A Passage to England প্রকাশ করেন ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে এবং The Continent of Circe
খ্রিস্টাব্দে। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ‘The Continent of Circe: An Essay on
the Peoples of India’ বইটির জন্য “Duff Cooper Memorial” পুরস্কার লাভ
করেন। The Intellectual in India প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে।

নীরদ চৌধুরী ভারত ত্যাগ করে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে পাড়ি জমান ১৯৭০
খ্রিস্টাব্দে। এসময় Scholar Extraordinary বইটি লেখার কাজে হাত দেন। বইটি Scholar Extraordinary. The Life of Professor the Right Honourable Friedrich Max Muller, P.C.
প্রচ্ছদনামে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ইতোমধ্যে ভারতীয়
জীবনযাত্রার এক অতি সুন্দর প্রতিচ্ছবি সম্বলিত গ্রন্থ To Live or Not to
Live প্রকাশিত হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৭৫, ১৯৭৬ এবং ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে
যথাক্রমে প্রকাশ করেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বই: Clive of India. A Political and Psychological Essay, Culture in the Vanity Bag. Clothing and Adornment in Passing and Abiding India এবং Hinduism. A Religion to Live By

নীরোদ চৌধুরীর মহান কীতি Thy Hand! Great Anarch! India: 1921—১৯৫২
নামীয় গ্রন্থটি। এই গ্রন্থটি ১৯৮৭ তে প্রকাশিত হয়। তখন তাঁর বয়স
নব্বুই। এ বয়সে তাঁর দৈহিক এবং মানসিক কর্মক্ষমতা অটুট ছিল। পাণ্ডিত্য ও
মণীষার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে
সম্মানসচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে। ১৯৯২-এ ইংল্যান্ডের রাণী তাঁকে কমান্ডার অব দি অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার (সিবিই) উপাধি অর্পণ করেন।

১৯৯৪: দু:খের বৎসর, অমিয়া চৌধুরানীর দেহত্যাগ।

১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রাক্কালে – ১০১ বৎসর বয়সে – নীরদচন্দ্র চৌধুরী অক্সফোর্ডে নিজ বাসগৃহে মৃত্যুবরণ করেন।

উল্লেখযোগ্য কর্ম

২০ লাইব্রেরি রোডে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর প্রাক্তন বাসবভন

নীরদচন্দ্র চৌধুরী’র প্রধান সাহিত্যকর্ম দি অটোবায়োগ্রাফী অব অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান
(আইএসবিএন ০-২০১-১৫৫৭৬-১) ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এর ফলে তিনি
সেরা ভারতীয় ইংরেজী লেখকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। নতুন ও স্বাধীন দেশ
হিসেবে ভারতের বিচার ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে বইটি উৎসর্গ করেন তিনি।

প্রকৃতপক্ষে বইয়ের উৎসর্গ অংশে বলা হয়েছে – অনেক ক্ষুদ্ধ ভারতীয়দের
অভিমত: রাজনৈতিক এবং আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নব্য সাম্রাজ্যবাদের
অনুকরণমাত্র।

নীরদ চৌধুরী সরকারী চাকুরী থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন, ফলে অবসর ভাতা
থেকেও বঞ্চিত হয়েছিলেন। কালো তালিকাভূক্ত লেখক হিসেবে চিহ্নিত হন এবং
জোরপূর্বক নতুন জীবনে গমন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি ভারত সরকার
নিয়ন্ত্রিত অল ইন্ডিয়া রেডিও’র রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে আইনের
বিরুদ্ধাচরণ করেছেন যা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য সম্পূর্ণরূপে
নিষিদ্ধ ছিল।

নীরদ চৌধুরী পরবর্তীতে অবশ্য বলেছিলেন যে তিনি বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। তার
বন্ধু, সম্পাদক, ঐতিহাসিক এবং ঔপন্যাসিক খুশবন্ত সিংয়ের মতে, “বইয়ের
উৎসর্গটির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর প্রতি
নিন্দাজ্ঞাপন করা যা আমাদেরকে সাম্যের দিকে ধাবিত করতে পারেনি।” – গ্রান্তা নিবন্ধে চৌধুরীর ভাষ্য। “প্রতিকল্প হিসেবে প্রর্দশনস্বরূপ তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, প্রাচীন রোমের সাথে সমান্তরাল পথে পা রাখছে ভারত।”

১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং বিবিসি যৌথভাবে নীরদ চন্দ্র চৌধুরীকে ৮ সপ্তাহের জন্য ইংল্যান্ড
ভ্রমনের আয়োজন করে। তিনি বিবিসিতে বক্তৃতা পাঠ করতে সম্মত হন। ব্রিটিশ
জীবনধারার উপর নীরদ চৌধুরী আটটি বক্তৃতামালা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঐ
বক্তৃতাগুলোই একত্রিত করে প্যাসেজ টু ইংল্যান্ড বইয়ে প্রকাশ করা হয়। ই.এম.ফরস্টার এ বিষয়ের সমালোচনা-ভাষ্য ও তার দৃষ্টিভংগী দ্য টাইমস্ লিটারেরী সাপ্লিমেন্টে প্রকাশ করেন।

১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে তার রচিত দ্য কন্টিনেন্ট অব সার্স গ্রন্থটি ১ম এবং একমাত্র ভারতীয় হিসেবে ডাফ কুপার প্রাইজ অর্জনে সহায়তা করে।

১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে মার্চেন্ট আইভরী প্রোডাকশনের ব্যানারে এডভেঞ্চার অব এ ব্রাউন ম্যান ইন সার্চ অব সিভিলাইজেশন শীর্ষক ডকুমেন্টারী ফিল্ম বা প্রামাণ্য চিত্রে নীরদ চন্দ্র চৌধুরীকে উপজীব্য করে তৈরী করা হয়।

নীরদ চৌধুরী ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে দাই হ্যান্ড, গ্রেট আনার্ক শীর্ষক নিজের জীবনের শেষভাগ নিয়ে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি ব্রিটেনের রাণী ২য় এলিজাবেথ কর্তৃক সম্মানিত হন এবং অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার উপাধীতে ভূষিত হন। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে নিজের শতবর্ষে সর্বশেষ বই হিসেবে থ্রী হর্সম্যান অব দ্য নিউ এপোক্যালিপস প্রকাশ করেন।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী এবং লেখার ধরণ

  • নীরদচন্দ্র চৌধুরী স্বাধীনতা-পূর্ব কংগ্রেস পার্টি প্রতিষ্ঠায় যতটুকু না সমালোচিত হয়েছিলেন, তারচেয়েও তার বেশি সহানুভূতি ছিল ডান-পন্থী ভারতীয় হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের আন্দোলনে। তিনি অযোধ্যার বাবরী মসজিদ ধ্বংস সম্বন্ধে সমালোচনা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।[২]
  • এছাড়াও তিনি গভীরভাবে বাংলার সমাজজীবনকে কাছে থেকে দেখার চেষ্টা
    করেছেন। বাঙ্গালী সমাজজীবনে ভণ্ডামী, কপটতার পাশাপাশি সামাজিক স্তর ও
    শ্রেণীবিভাজন দেখে গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছেন।
  • নীরদচন্দ্র চৌধুরী’র প্রবন্ধগুলোয় সংস্কৃত ভাষা এবং বাংলা ভাষার পুরনো ভার্সন সাধুভাষার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তিনি কথ্য ভাষা হিসেবে চলতিভাষা যৎকিঞ্চিৎ ব্যবহার করেছেন।
  • আধুনিক বাংলা ভাষায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত আরবী, উর্দু এবং ফার্সি ভাষা প্রয়োগ করা থেকে তিনি যথাসম্ভব নিজেকে বিরত রেখেছেন।

সম্মাননা ও পুরস্কার

রচিত পুস্তকাদি

তিনি ইংরেজিবাংলা
উভয় ভাষায়ই লিখেছেন, তবে করেছেন ইংরেজিতে। ইংরেজিতে তাঁর প্রকাশিত
গ্রন্থের সংখ্যা ১১; বাংলায় ৫। এছাড়া বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ সংকলন
হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। উপরোল্লিখিত গ্রন্থগুলো ছাড়াও তাঁর কিছু
অপ্রকাশিত, বিশেষ করে অগ্রন্থিত রচনা রয়ে গেছে। এগুলো ১৯৩০-৫০ কালপর্বে
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও অদ্যাবধি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত
হয়নি। তাঁর গ্রন্থগুলোর প্রথম সংস্করণ বেশীরভাগ লন্ডন ও ভারত থেকে
প্রকাশিত। কেবল ফয়জুল লতিফ চৌধুরী সংকলিত নীরদচন্দ্র চৌধুরীর বাংলা প্রবন্ধ গ্রন্থটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত।

দেহাবসান

নীরদ সি. চৌধুরী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন সৃষ্টিশীল এবং স্বাধীনচেতা লেখক হিসেবেই পরিগণিত ছিলেন। ৯৯ বছর বয়সে তাঁর শেষ বই প্রকাশিত হয়। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর স্ত্রী অমীয়া চৌধুরী অক্সফোর্ডে মারা যান। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডেই নিজের ১০২তম জন্মদিনের দু’মাস পূর্বে পরলোকগমন করেন ক্ষণজন্মা সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ নীরদ চন্দ্র চৌধুরী।

আরও দেখুন

তথ্য সূত্র