গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ট বলে সাত খুন মাফের ট্র্যাডিশনের দিন আর নেই। ইস্যু এখন একটাই — রাম রহিম……..!!

(পড়লে পুরোটা পড়বেন)
     ইস্যু এখন একটাই — রাম রহিম। সংবাদমাধ্যমের বদান্যতায় শিখ পরিবারে জন্ম নেওয়া লোকটির পরিচয় থেকে বাকি সব কিছু মুছে গিয়ে শুধুই “রাম” অংশটি টিকে আছে। এঁকে বিজেপির লোক বলে প্রচার করে ফায়দা লোটার চেষ্টা চলছে।
    হ্যাঁ, বিজেপি এঁর ভক্তকুলের কাছে সমর্থন চেয়েছিল। কেন চাইবে না মশাই? পাঁচ কোটি ভক্ত! পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায়। তার সাথে বিশাল কর্মকান্ড। যেমন —-
    “১) এনার ডেরা সাচ্চা সৌদা সংগঠনটি সব সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রীকরণের কাজ করতো।  গুরমিতজী শিখ ছিলেন কিন্তু তাঁর মধ্যে সনাতন চিন্তন প্রভাব ছিলো। নিজস্ব আলাদা সম্প্রদায় তৈরীর চেষ্টায় ছিলো।
২) হরিয়ানা-পাঞ্জাব জুড়ে প্রচুর নেশামুক্তি কেন্দ্র চালাতো। বিড়ি-সিগারেট-গুটকা-মদ ছেড়ে ধর্ম-সেবা কাজে উত্থানে নামতে প্রচুর যুবকদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
৩) শাকাহারী খাবার খেতে বলতেন। মাংস, ডিম, মাছ বর্জন করে সাধারণ দেশী শাশ্বত খাদ্য ভক্ষণ করতে বলতেন । ওনার ৫ কোটির ভক্ত শাকাহারী ছিলো। গোসেবা-সংবর্ধনের কাজ করতেন।
৪) প্রচুর সেবা প্রকল্প যেমন গোশালা, হসপিটাল, হোষ্টেল, স্কুল, কলেজ চালাতো তাঁর সংস্থা। যুবকদের জন্যে বিভিন্ন হস্তপ্রকল্প ও মহিলাদের জন্যে সমবায় প্রথা চালাতেন।
৫) এই গুরমিত রাম রহিম নিজে গাড়ির কাজ জানতেন। বিভিন্ন ডিজাইনিং গাড়ি তৈরি করতেন। নিজে ভজন সঙ্গীতের সাথে রক সঙ্গীত গাইতেন।
৬) বিশ্বে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক রক্তদান উৎসব করে গিনেস বুকে নাম তুলেছেন।
৭) নিজে সিনেমা অভিনয়, গান, নাচ করেছেন।
৮) পাঞ্জাব-হরিয়ানাতে ক্যাথলিক ধর্মান্তকরণ রুখে দিয়েছিলো।”
  
   এইরকম প্রভাবশালীকে অগ্রাহ্য করে রাজ্য চালানো সম্ভব না। পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং করেন নি। হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী খট্টারও পারেননি।  পুরানো কংগ্রেস সরকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এঁকে Z+ ক্যাটাগরি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল। তাঁর পুত্রের বিবাহ হয় পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা হরমিন্দর সিংএর কন্যার সাথে।
   
    যখন এঁর বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ ওঠে , তখন তদানিন্তন এনডিএ সরকার তার তদন্ত শুরু করায়। পরের দশ বছরের ইউপিএ জমানায় তদন্তের কোনো অগ্রগতিই হয়নি। “প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর উদ্যোগেই রাম রহিম সিং এর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল সেই ২০০২ সালে। প্রাথমিক চার্জশিট দিয়ে দেওয়া হয় ২০০৩ সালেই। এর পর মনমোহন ক্ষমতায় আসার পর তদন্ত প্রক্রিয়া স্লথ হলেও মূল চার্জসিট ২০০৭ সালে জমা পড়ে। 
       এরপর আশ্চর্যজনকভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া প্রায় কিছুই এগোয়নি। মামলা আবার গতি পেল ২০১৫ থেকে মোদি ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর। আর তার ২ বছরের মধ্যেই বাবা রাম রহিম দোষী সাব্যস্ত হলেন।”
   
   কি বুঝলেন? অপরাধী ছাড় পাবে না এখানে। কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই কারো প্রতি। গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ট বলে সাত খুন মাফের ট্র্যাডিশনের দিন আর নেই।
   আর যারা তালাকের মতো প্রথা নিয়ে নিরব থাকে, জাকির নায়েককে প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানায়, ইয়াকুব মেননের ফাঁসির বিরোধীতা করে, পাকিস্তান জিন্দাবাদ শুনে না শোনার ভান করে, কাশ্মীরের আজাদীর পিছনেও যুক্তি খোঁজে, বাংলাকে বাংলাস্তান বানায়, জামাতি জঙ্গীদের আশ্রয় দেয় ও ভোটের কাজে লাগায় …. তাদের মুখে এই নিয়ে কথা মানায় না।

● লেখাটির কিছুটা অংশ (“….” চিহ্নিত) আংশিক কপিকৃত।