শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার দীনেশচন্দ্র সেন।।।

  1. শ্রী দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৯৩৯) শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৬ সালের ৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরি
    গ্রামে। তাঁর পৈতৃক নিবাস ঢাকা জেলার সুয়াপুর গ্রামে। পিতা ঈশ্বরচন্দ্র
    সেন মানিকগঞ্জ আদালতের উকিল ছিলেন। মাতা রূপলতা দেবী।

    শিক্ষাজীবন

    দীনেশচন্দ্র সেন জগন্নাথ স্কুল থেকে এনট্রান্স (১৮৮২), ঢাকা কলেজ থেকে এফ.এ (১৮৮৫) পাস করেন। ১৮৮৯ সালে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

    কর্মজীবন

    তিনি কর্মজীবন শুরু করেন সিলেটের হবিগঞ্জ স্কুলে (১৮৮৭)। পরে তিনি
    কুমিল্লার শম্ভুনাথ ইনস্টিটিউশন (১৮৮৯) ও ভিক্টোরিয়া স্কুল (১৮৯০)-এর
    প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদান করেন।

    সাহিত্যজীবন

    ১৯৩৯-এর ২০শে নভেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৯০-এ কুমিল্লা
    ভিক্টোরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন কালে গ্রামবাংলার
    বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে প্রাচীন বাংলার পুঁথি সংগ্রহ করেন এবং সেসব উপকরণের
    সাহায্যে ১৮৯৬-এ “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” শিরোনামে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
    রচনা করেন। ১৯১১ সালে তাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ “হিস্ট্রি অব বেঙ্গলি
    লিটেরেচার” প্রকাশিত হলে তা সর্বমহলের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। ১৯১৩ সালে
    কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে “রামতনু লাহিড়ী রিসার্চ ফেলোসিপ” প্রদান করে এবং এর আওতায় তিনি মৈমনসিংহ গীতিকাপূর্ববঙ্গ গীতিকা সম্পাদনা করেন।

    উপাধি

    ১৯২১-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডি.লিট ডিগ্রী এবং ১৯৩১-এ “জগত্তারিণী স্বর্ণপদক” প্রদান করেন। ১৯২১-এ ভারত
    সরকার তাঁকে “রায় বাহাদুর” উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯২৬-এ মৈমনসিংহ গীতিকা
    গ্রন্থটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। শ্রী দীনেশচন্দ্র সেন
    রচিত গবেষণাধর্মী “বৃহৎবঙ্গ” গ্রন্থটি বাঙালীর ইতিহাস চর্চায় অনন্য![১][২]

    প্রধান গ্রন্থসমূহ

    • বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (১ম ও ২য় খণ্ড) (১৮৯৬)
    • তিন বন্ধু (১৯০৪)
    • রামায়ণী কথা (১৯০৪)
    • বেহুলা (১৯০৭)
    • সতী (১৯০৭)
    • ফুল্লরা (১৯০৭)
    • জড় ভরত (১৯০৮)
    • সুকথা (১৯১২)
    • গৃহশ্রী (১৯১৬)
    • নীলমানিক (১৯১৮)
    • মুক্তা চুরি (১৯২০)
    • সরল বাংলা সাহিত্য (১৯২২)
    • বৈদিক ভারত (১৯২২)
    • ঘরের কথা ও যুগসাহিত্য (১৯২২)
    • আলোকে আঁধারে (১৯২৫)
    • চৌকির বিড়ম্বনা (১৯২৬)
    • ওপারের আলো (১৯২৭)
    • পৌরাণিকী (১৯৩৪)
    • বৃহৎ বঙ্গ (১ম ও ২য় খণ্ড) (১৯৩৫)
    • আশুতোষ স্মৃতি কথা (১৯৩৬)
    • শ্যামল ও কাজল (১৯৩৬)
    • পদাবলী মাধুর্য্য (১৯৩৭)
    • পুরাতনী (১৯৩৯)
    • বাংলার পুরনারী (১৯৩৯)
    • প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান (১৯৪০)
    • হিন্দু সমাজ ও বৈষ্ণব ধর্ম
    • মৈমনসিংহ গীতিকা

    মৃত্যু

    ১৯৩৯ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার বেহালায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    তথ্যসূত্র

  2.   আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেনের ৭৩তম মৃত্যুবার্ষিকী
  3. Sengupta, Subodh Chandra (ed.) (1988) Sansad Bangali Charitabhidhan (in Bengali), Kolkata: Sahitya Sansad, p.208