প্রথম দক্ষিণ এশীয় ব্যক্তি যিনি সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন ব্রজেন দাস..ঃ।।

ব্রজেন দাস একজন বাংলাদেশি সাঁতারু। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট বিপদসংকুল ইংলিশ
চ্যানেল জয় করে বিশ্ব ক্রীড়া জগতে বাঙালির সাফল্যের প্রথম স্বীকৃতি আদায়
করেছিলেন তিনি। ১৯২৭ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক বিক্রমপুর এলাকার
কুচিয়ামোড়া গ্রামে ব্রজেন দাসের জš§। বাবা হরেন্দ্র কুমার দাস ও মা বিমলা
দাস। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের পাঠশালাতেই শুরু। কে এল জুবিলি হাইস্কুল থেকে
১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাস করেন।

কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ
থেকে যথাসময়ে আইএ এবং বিএ পাস করেন। ছেলেবেলা থেকেই সাঁতারে তার খুবই ঝোঁক
ছিল। আন্তঃবিদ্যালয় খেলাধুলায় সাঁতার প্রতিযোগিতায় সর্বদাই প্রথম স্থান
দখল করতেন। ১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের জন্য সাঁতার প্রতিযোগিতায়
ভারতবর্ষীয় উপমহাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন একমাত্র ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ সালের ১৮
আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে ফ্রান্সের তীর থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রচণ্ড
প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে পরদিন বিকেলে প্রথম সাঁতারু হিসেবে ইংল্যান্ড
তীরে এসে পৌঁছান ব্রজেন দাস। ব্রজেন দাস সর্বমোট ৬ বার ইংলিশ চ্যানেল
পাড়ি দেন। ১৯৬১ সালে ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি
বিশ্বরেকর্ড গড়েন। তিনি ১৯৯৮ সালের ১ জুন মারা যান।    

  1. ব্রজেন দাস ১৯৫২ সালে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১০০, ২০০, ৪০০, ও ১৫০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে তিনি ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল অবধি পর পর ৪ বছর চ্যাম্পিয়ন হন। এছাড়া তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান জাতীয় প্রতিযোগিতায় ১০০ ও ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারের শিরোপা জেতেন। ১৯৫৬ সালে তিনি অলিম্পিক গেমসে পাকিস্তান সাঁতার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।

    আন্তর্জাতিক

    চ্যানেল অতিক্রমের পর ১৯৬১ সালে রাণী মাতা রাণী এলিজাবেথের সাথে ব্রজেনদাস।

    ব্রজেন দাস ১৯৫৮ সালের জুলাই মাসে ইতালির কাপ্রি দ্বীপ হতে নাপোলি
    পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দূর পাল্লার সাঁতারে ৩য় স্থান অর্জন করেন। একই বছর
    আগস্ট মাসে তিনি ইংল্যান্ডে বিলি বাটলিনের চ্যানেল ক্রসিং প্রতিযোগিতায়
    ২৩টি দেশের ৩৯ জন সাঁতারুকে হারিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। পরের বছর,
    অর্থাৎ ১৯৫৮ সালের আগস্ট মাসে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড পর্যন্ত ইংলিশ
    চ্যানেল পাড়ি দেন। সেপ্টেম্বরে তিনি ইংলিশ চ্যানেলকে ইংল্যান্ড হতে
    ফ্রান্সে সাঁতার কেটে পার হন। ১৯৬০ ও ১৯৬১ সালের আগস্টে তিনি ফ্রান্স থেকে
    ইংল্যান্ড সাঁতার কাটেন। ১৯৬১ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ফ্রান্স থেকে
    ইংল্যান্ডের মধ্যে ইংলিশ চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে, মাত্র ১০ ঘণ্টা ৩০
    মিনিটে পার হয়ে তখনকার দিনের বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেন। [২]

    পুরস্কার

    ব্রজেন দাস “লেটোনা ট্রফি” গ্রহণ করছেন।

    তথ্যসূত্র

  2. S M Mahfuzur Rahman। “Das, Brojen”Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh। সংগৃহীত ২০১২-১১-২৬
  3. http://www.boi-mela.com/Banglapedia/ViewArticle.asp?TopicRef=5783 বাংলাপিডিয়াতে ব্রজেন দাসের জীবনী।
  4. Pakistan Sports Board Awards: Swimming Retrieved 05 July 2010