সংকটে প্রায়সই কিছু প্রবাদপ্রতিম গুরুদের স্মরন নিই,

সংকটে প্রায়সই কিছু প্রবাদপ্রতিম গুরুদের স্মরন নিই, আজ এই রকম এক সময়ে এক ব্লগ গুরুর তৈরী কাঠামোর উপর নতুন করে কিছু লিখলাম -ভালো না লাগলে ত্রুটি মার্জনা করবেন

ঐশ্বরিক বিচার :

আদম আজ বড় উতলা। হওয়া বিবির মন নাকি বড় চঞ্চল হইয়াছে। এক কন্দর্পকান্তি যুবকের নাকি উদয় হইয়াছে স্বর্গদ্ব্যানে ,গত্কল্যই গবাক্ষ পথে তাহাকে উন্ম্নাভাবে দেখিয়া আদমের ঘুম গিয়াছে। এক আধারে দুই খঞ্জর ! ইহা সহ্যের বাহিরে তাই প্রাতকালেই ইশ্বর সমীপে রোদনভরা আদমের প্রবেশ ঘটিয়াছে।

ইদানিং ইশ্বর বেচারী বড় সমস্যায়,একাধারে মনুষ্যজাতির এক বড় অংশের আশাতীত উন্নতি আবার অপর অংশের প্রবল ভক্তি তাহার মত সর্বশক্তিমানের মধ্যে এক দোটানা আনিয়াছে,ইহা ছাড়া ইদানিং জিব্রাইল এর মস্তকে কাব্য রোগ ঢুকিয়াছে ,কোনো বিধান পছন্দসই না হইলেই কারণে অকারণে বিবিধ কাব্য অংশ আবৃত্তি করিয়া থাকে। যাহা হউক প্রাতকালে আদমের আর্তনাদ না শুনিলেই নহে সুতরাং লুঙ্গির কষি শক্ত করিয়া নিজ আরশ হইতে উত্থিত হইতেই হইলো।

জিব্রাইল কে জিজ্ঞাসিলেন , ” কি হইয়াছে, অর্বাচীন কর্দম পুত্র স্বর্গ মাথায় করিতেছে কেন ? জিব্রাইল কহিল “প্রভু, উহা আদমের হতাশার ফলাফল ”
হতাশা ? কস্কি মমিন ! ইশ্বর বলিয়াই আপন জিহবা সংযত করিলেন,ইদানিং বড় বেশি কথ্য বাংলার লেখা নজরে আসিতেছে ,জিব্রাইল ও একটু হাস্য সম্বরণ করিলো মনে হইতেছে, যাহা হউক পূর্বের গাম্ভীর্য বজায় রাখিয়া পুনরায় জিজ্ঞাসিলেন, “ক্যামনে কি ? থুক্কু কিমাস্চর্জ্ম ! কি হইয়াছে ?
-প্রভু আপুনি ইহাকে রমন করিবার কোনো উপায় দেন নাই তদুপরি গন্দম ফল ভক্ষণ করিয়া আপন শক্তি বৃদ্ধির কোনো উপায় ও রাখেন নাই। ইভ মানে হওয়া হাজার হউক মানুষ তাই তাহার হাউস থুক্কু শখ আহ্লাদ ইত্যাদি মিটাইবার কোনো সুযোগ আদমের উপর দেওয়া হয় নাই সুতরাং  …

ইশ্বর বুঝিলেন বিষয় গুরুতর তথাপি পুনরায় জিজ্ঞাসিলেন ,অতকিম ? ইহা তো বহু কাল চলিতেছে অদ্য কি হইলো ?
জিব্রাইল কহিবার আগেই অর্বাচীন আদম প্রবেশ করিল এবং উচ্চস্বরে অধুনা আগত এক মানব সন্তানের ফাসির দাবিতে সোচ্চার হইলো
ইশ্বর কিঞ্চিত গরম হইয়া কহিলেন ” থামো হে আদম ! স্বর্গে কোনো ফাসির সুযোগ নাই, আর সে কি করিয়াছে যে এইরূপ দাবি করিতেছ ? ”
আদম বুঝিল ,এইভাবে হইবে না ,অতয়েব পুনরায় তার রোদন পঞ্চম সুরে তুলিল ,তাহার বক্তব্য , অধুনা আগত এক যুবক তাহার হওয়া বিবির মন হরণ করিয়াছে অন্যদিকে আদমের কোনো ক্ষমতা ইশ্বর দেয় নাই। সুতরাং ইহা চলিতে পারে না। বিচার চাই !
এ বড় বিষম সমস্যা , ইশ্বর অতপর বলিলেন , শোন হে মৃত্তিকা পুত্র , ফাসি ব্যতিরেক অন্য কিছু ভাবিয়া বল। এই অপরাধে তাহাকে আমি কোনো গুরুতর সাজা দিতে পারি না।
অতপর আদম তাহার মোক্ষম অস্ত্র প্রয়োগ করিলো , উদ্ভাসিত মুখে কহিলো , বেশ তাহা হইলে উহাকে নির্বাসন দন্ড দিন।
তাহাতে তোমার লাভ ? ইশ্বর কিঞ্চিত বিস্মিত হইলেন,তাহা ছাড়া কি অপরাধে এই নির্বাসন ? কোথায় পাঠাইতে চাহ ?
আদম ভক্তির পরাকাষ্ঠা হইয়া কহিল , প্রভু অসুবিধা কিসে ? ৫৭ ধারা তো আছেই ! উহাকে বঙ্গদেশে স্থানান্তর করুন। নরক গুলজার হইবেক !

ইশ্বর কহিলেন “তথাস্তু ! ”

তথাপি জিব্রাইল বিড়বিড় করিতে লাগিলো, অন্তর্যামী ইশ্বরের বোধকরি বুঝিবার অবকাশ ছিল না তাই জিজ্ঞাসিলেন , ” কি বকিতেছ হে রশ্মি নির্মিত অর্বাচীন ? “
-কিছু না খোদাব্ন্দ  ….মর্তের এক কবির কবিতা
কবিতা ? কি কবিতা ?
হুজুর  ….আসাদের শার্ট  শামসুর রাহমান লিখিত, বলিয়া ইশ্বর কে সময় না দিয়া আবৃত্তি করিলো
” আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখন্ড বস্ত্র মানবিক ;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা । ”

ইশ্বর কহিলেন , ” চোপ বেয়াদ্দপ ! “