কেন চোর মুসলিম যুবকে হিন্দুদেব দেবি নাম নিতে বলা হয়? সত্য জানুন।
ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় তাবরেজ নামক এক যুবকের সে সম্পর্কে দু চার কথা
——————————————————
এই ঘটনার কথা প্রথমে আমি জানতে পারি সোস্যাল মিডিয়াতে, তখন আমি দেখি মব লিঞ্চিং এর কারণে এক ব্যক্তিকে গণধোলাই দিয়ে মারা হয়েছে। এরপর খবরটা একটু পাল্টে যায়, চোর সন্দেহে এক মুসলিম যুবক ধরে নিয়ে ধর্মীয় স্লোগান জয় শ্রীরাম, জয় হনুমান ব্যবহার করে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং এরফলে যুবকের মৃত্যু হয়।
——————————————————
এই ঘটনার কথা প্রথমে আমি জানতে পারি সোস্যাল মিডিয়াতে, তখন আমি দেখি মব লিঞ্চিং এর কারণে এক ব্যক্তিকে গণধোলাই দিয়ে মারা হয়েছে। এরপর খবরটা একটু পাল্টে যায়, চোর সন্দেহে এক মুসলিম যুবক ধরে নিয়ে ধর্মীয় স্লোগান জয় শ্রীরাম, জয় হনুমান ব্যবহার করে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং এরফলে যুবকের মৃত্যু হয়।
সেদিন আসলে কি ঘটেছিল, যে তাকে পোলে বেঁধে গণধোলাই দেওয়া হয় এবং এরফলে তার মৃত্যু হয়। ঝাড়খণ্ডের যে গ্ৰামে এই ঘটনাটি ঘটে সেই সরাইকেলার ধাধকিডি গ্ৰামটিতে মাহাতো এবং মণ্ডলদের বাস। ঘটনার দিন অর্থাৎ 17ই জুন রাত্রিবেলা মৃত কদমডি গ্ৰাম নিবাসী তাবরেজ আনসারী তার নিজ দুই সাথী নুমের আলি এবং শেখ ইরফানকে নিয়ে রাত্রি বেলা মরম গ্ৰামে চুরী করার পর, তারা রাত্রি আড়াইটার ধাধকিডি গ্ৰাম পৌঁছে নিয়ে কমল মাহাতোর ঘরে গিয়ে চুরি করার চেষ্টা করে, সেইসময় ঘরের লোক জেগে যায়, তারা তাবরেজকে ধরে ফেলে এবং নুমের আলি ও ইরফান শেখ সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপর গ্ৰামবাসীরা তাকে পোলে বেঁধে পিটতে থাকে, সেইসময় গ্ৰামবাসীরা তার পরিচয় জানার চেষ্টা করে। তখন সে তার নাম লুকিয়ে অন্য নাম বলে, নিজেকে হিন্দু বলতে থাকে।
গ্ৰামবাসীদের তখন সন্দেহ হয় যে সে পরিচয় লুকোচ্ছে, তখন তাকে আর পিটতে থাকে এবং ভগবান ও বিভিন্ন দেবী দেবতার নাম নিতে বলে, তখন সে ধরা পড়ে যায়। তার পরিচয় বেরিয়ে আসে। এরপর গ্ৰামবাসীরা সকাল পাঁচটার সময় থানাতে খবর দেয়, এরপর পুলিশ সেখান থেকে ঐ ব্যক্তিকে গ্ৰেপ্তার করে নিয়ে যায় ও ঘটনাস্থল থেকে চুরীর বাইক এবং মানিব্যাগ উদ্ধার করে। এরপর তাকে জেলে পাঠানো হয়। তারপর সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই মিডিয়ার আসল খেলা শুরু।
তার মৃত্যুর পরেই মিডিয়া নিজেদের স্বার্থে এবং কিছু ব্যক্তি নিজ স্বার্থে এই ঘটনাকে মব লিঞ্চিং এর ঘটনা বলে চালাতে থাকে, যখন বুঝতে পারে সেটা চলবে না। তখন তারা আসে নি আরাধ্য দেবতাদের নাম নিতে বলা হচ্ছিল, সেই ঘটনাটিকেই একটু অন্যরূপ দেয়, আর লিখে চোর সন্দেহে ধর্মীয় স্লোগান ব্যবহার করে এক মুসলমান যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হল। একটা চুরির ঘটনায় চোর ধরা পড়ার পর গণধোলাই খেয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে চোরের ধর্ম খুঁজে নিয়ে সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক হিংসার রূপ দেয় সম্পূর্ণ নিজের টি আর পির স্বার্থে। আর কিছু ব্যক্তি এবং নেতা সম্পূর্ণ নিজ ধর্মীয় স্বার্থে এবং ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে ঘটনাটাকে সাম্প্রদায়িকতার রূপ দেয়।
আর এখন তো গোটা দেশজুড়েই এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে, মানুষ যেকোন বিষয়কেই ধার্মিক ভাবনা দিয়েই আগে বিচার করছে। এরফলে কিছুলোকের প্রচুর শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে। কিন্তু দেশের বিকাশ এবং উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অতল গহ্বরে পড়ে যাচ্ছে, সেদিকে জনমানসের তাকানোর লক্ষ্যই নেয়। তাই একটা কথা না বললেই নয় যারা দায়িত্বশীল মানুষ আছেন তাদের কাছে অনুরোধ করব এই পরিবেশকে আবার সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করার জন্য।
( বি: দ্র:- পুলিশের প্রহারেও তাবরেজ আনসারীর মৃত্যু হতে পারে। কারণ পুলিশের সাথে সে যখন কোর্টে যাচ্ছিল তখন সে আরামে নিজের পায়ে হেঁটে গিয়েছির, তার আগেই তার মেডিক্যাল হয়। কোর্টের আদেশের পরে কি হবে মন ঘটনা ঘটেছিল যে তার আবার অবনতি হয় এবং তাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হয়, সেখানে তার মৃত্যু ঘটে।