“আলেকজান্ডার কি করে ঝিলাম পার হন এবং রাজা পুরুর সংগে যুদ্ধের কাহিনী”

“সত্য ইতিহাস”

“আলেকজান্ডার কি করে ঝিলাম পার হন এবং রাজা পুরুর সংগে যুদ্ধের কাহিনী”

ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

( স্বর্ব সত্ব সংরক্ষিত) *******শেয়ার করতে পারেন কিন্তু কোথাও প্রকাশ করতে পারবেন না।

******* যারা সত্য ইতিহাস জানতে চান এই লেখাটা তাদের জন্য। দীর্ঘ, কিন্তু ইতিহাস ক্ষুদ্র পরিসরে লেখা যায় না। আমার নতুন বই, “হিন্দু রাজাদের স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম” এর প্রথম পরিচ্ছেদের কিয়দংশ তুলে দিলাম********* যারা জানতে চান এবং সময় আছে, তারা পড়ে দেখবেন, ৫ মিনিট লাগবে…।।******************

‘ঝিলাম পার হওয়ার কাহিনী’

“খাইবার গরিপথ পার হলেই শ্রী রামচন্দ্রের ভাই ভরতের বড়ো পুত্র, রাজা তক্ষকের নামে রাখা রাজধানী শহর তক্ষশীলা। সামরিক দিক দিয়ে দেখলে এই ‘খাইবার গিরিপথ’ই স্থলপথে ভারতের মুল ভুখন্ডের প্রবেশদ্বার। তক্ষশীলার রাজা, তক্ষশীল, সেই প্রবেশ দ্বারের দ্বারী। এক মহান বংশ জাত, রাজা ভরতের অনেক অধঃস্তন পুরুষ, রাজা তখশীল তার মাতৃভুমি ভারতবর্ষের সংগে করলেন শত্রুতা। তিনি বিনা যুদ্ধে আলেকজান্ডারের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে নিলেন। প্রতিবেশী পাঞ্জাব এবং কাশ্মীরের রাজা পৌরব রাজ পুরুর সংগে তার বিরোধিতা ছিলো। সেই বিরোধিতার সুত্রে রাজা তক্ষশীল আলেকজান্ডারকে সমস্ত রকম সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতি দিলেন। আলেকজান্ডার খুব সহজেই খাইবার গিরি পথ পার হয়ে চলে এলেন মুল ভারত ভুমিতে। 

কিন্তু, বাদ সাধলেন পৌরবরাজ,রাজা পুরু। রাজা পুরু যে বীরত্বের সংগে যুদ্ধ করেন ইতিহাসে তার তুলনা নেই ।

হিন্দু রাজা পুরু ছিলেন অকুতোভয়। বর্তমান পশ্চিম পাঞ্জাবের (পাকিস্তানের অংশ) ঝিলাম নদীর অববাহিকা এবং কাশ্মীর তার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। আলেকজান্ডারের পারস্য জয়,হিমালয়ের উত্তর অঞ্চল জয় ( হিন্দু কম্বোজ জাতির দেশ) তার জানা ছিলো। তিনি এও জানতেন যে, তিনি যদি আলেকজান্ডারের অগ্রগতি রুখে না দিতে পারেন তাহলে সিন্ধু পারের ভারতবর্ষ, গাংগেয় ভারত, সনাতনী ভারত আলেকজান্ডারের পদানত হয়ে যাবে। তাই ভারত মায়ের এক সন্তান হিসাবে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হন নি।  তক্ষশীলার রাজা তখশীল আলেকজান্ডারের কাছে দুত পাঠিয়ে আত্ম সমর্পন করেছে এবং আলেকজান্ডারের ভারত দখলে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সে খবর ও পৌরব রাজ পুরুর জানা ছিলো।

আলেকজান্ডার প্রথমে দুত হিসাবে পুরুর কাছে পাঠান এই তক্ষশীলার রাজাকে। প্রস্তাব বন্ধুত্ব করা যা তক্ষশীলার রাজা করেছেন।পুরু জানতেন সেটা আসলে মোসাহেবি করা। তার না পছন্দ। প্রত্যাখ্যান করলেন। আলেকজান্ডার আরো দুইবার দুত পাঠান। মোট তিনবার দুতকে প্রত্যাখ্যান করেন রাজা পুরু। মোসাহেবি করে তার প্রিয় সনাতনী ভারতের দরজা তিনি খুলে দেবেন না।

রাজা পুরু,তিনি তার বিশাল সৈন্য বাহিনী, সংখ্যা প্রায় ১২০০০০ , যার মধ্যে প্রায় ৩০০ হাতী ছিলো, নিয়ে ঝিলাম নদের পুর্ব পাড় অবরোধ করে ঘাটি গেড়ে বসে রইলেন। অনেক চেষ্টা করেও আলেকজান্ডার ঝিলাম নদ পার হবার কোনো উপায় খুজে বার করতে পারলেন না। এদিকে যুদ্ধ ক্লান্ত গ্রীক সৈন্যরা আর এগুতেও চায় না। মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। মশার কামড়ে টেকা দ্বায়। প্রায় ৩ মাসের বেশী চেষ্টা করে ,ঝিলাম পার হতে না পেরে আলেকজান্ডার এক অভিনব ছলনার আশ্রয় নিলেন।  প্রচার করে দিলেন যে তিনি গ্রীসে ফিরে যাচ্ছেন। সেই প্রচার রাজা পুরুর কাছে চলে এলো। তবুও তিনি আলেকজান্ডারের যুদ্ধ বাসনা, পুন্য ভুমি ভারতকে কলুষিত করার ইচ্ছা চিরতরে মিটিয়ে দেবার জন্য নদীর পাড়ে অপেক্ষা করলেন। তার তো তাড়া কিছু ছিলো না।

এদিকে এপারে গ্রীক সৈন্যরা তাদের তাবু সাজ সরঞ্জাম সব গোটাতে থাকলো।  রাজা পুরু সব দেখছেন। কিছুদিনের মধ্যে বেশ কিছু নৌকা তৈরী হলো। রাজা পুরু খবর পেলেন আলেকজান্ডার নৌপথে দক্ষিনে ঝিলাম  নদের পশ্চিম কুল ঘেষে, সিন্ধু নদী ধরে ভারত সাগর দিয়ে চলে যাবেন তার বিজিত বাগদাদে/মতান্তরে ব্যাবিলনে। আর বেশীর ভাগ সৈন্য যাবে উত্তরে অক্সাস নদীর (আমু দরিয়া) পাড় দিয়ে বাগদাদে। আলেকজান্ডারের এই চেষ্টায় পুরু বাধা দিলেন না। বিনা রক্তপাতে আপদ বিদায় হলে ক্ষতি কি???

মাত্র ১০০০০ হাজার বাছাই সৈন্য নিয়ে আলেকজান্ডার  ঝিলাম এর পশ্চিম পাড় দিয়ে উত্তরে দিকে চলতে থাকলেন ধীর গতিতে। বাকি ৩০০০০ হাজার রইলো তার বিশ্বস্ত সেনাপতি ক্রেটেরাস এর কাছে। রাজা পুরু তার পুত্রকে (এই পুত্রের নাম ও ‘পুরু’) পাঠালেন তার সৈন্য বাহিনীর এক বিশাল অংশ দিয়ে সিন্ধুর পুর্ব পাড় দিয়ে উত্তরে। প্রায় ২৭ মাইল উত্তরে যাবার পর আলেকজান্ডারের সৈন্য বাহিনী বিশ্রামের জন্য তাবু গাড়লো, পুরু রাজের পুত্রও পুর্ব পাড়ে তাবু গাড়লেন।
এদিকে পুরু রাজের কাছে আলেকজান্ডার অনুরোধ করলেন তাকে নিরাপদে দক্ষিনে যাবার সুযোগ করে দিতে। অনেক ধুম ধাম করে তার আরাধ্য দেবতা ‘এপোলো’ র পুজো দিলেন, দেশে যাবার যাত্রার শুভ কামনায়। পুরু তার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে লিখে পাঠালেন , “ আপনি নির্বিঘ্নে যান, কেউ আপনার কেশাগ্র স্পর্শ করবে না। তবে আর কোনোদিন আমাদের,হিন্দুদের মাতৃভুমি দখল করার স্বপ্ন দেখবেন না”।

সাজ সরঞ্জাম, সৈন্যরা ধীরে ধীরে নৌকায় তোলা হচ্ছে, সেই কাজ চললো। পুরু ৪-৫ দিন পর তার স্ংগে থাকা সৈন্যদের নিয়ে ঝিলাম তীর ছেড়ে কিছুটা পুর্বে (প্রায় ৩ মাইল ভিতরে) এসে তাবু গাড়লেন।  সেটা এই জন্য যাতে আলেকজান্ডার বুঝতে পারেন যে, তার সৈন্যরা আলেকজান্ডারের দক্ষিনে যাত্রা পথে কোনো বাধা হবে না। 

এদিকে ঝিলামের পুর্ব পাড়ে পুরুর পুত্র বিশাল বাহিনী নিয়ে অপেক্ষারত। ঝড় বৃষ্টি চলছে। দুইপক্ষের এই অনড় অবস্থানের কিছু উত্তরে, ঝিলামের গভীরতা বেশ কম, স্রোতও কম, আছে বালিয়াড়ি।  অসংখ্য চামড়ার ব্যাগের মধ্যে খড় ঢুকিয়ে, সেই ব্যাগ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হলো। সেই দুর্যোগের মধ্যে, ওই ভাসমান ব্যাগের সাহায্যে  গ্রীক সৈন্যদের এক বাহিনী,  চুপি চুপি ঝিলাম পার হলো। আলেকজান্ডার তখনো রইলেন তাবুতে। পুরুর পুত্র কিছু বুঝতেই পারলেন না। তার নজর ছিলো আলেকজান্ডারের দিকে, তিনি তো নিজের তাবুতে। গ্রীক সৈন্যরা প্রথমে এসে ঊঠলো একটি ছোট্ট দ্বীপে। তারপর এসে পৌছালো ঝিলাম এর পুর্ব পারে। সেই দুর্য্যোগের মধ্যেই, রাতের অন্ধকারে  গ্রীক সৈন্যরা ঝিলাম পার হয়েই পুরুর ছেলের তাবুর পিছনে চলে গেলো এবং ঘুমন্ত সৈণ্যদের ওপর ঝাপিয়ে পড়লো। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রায় সব শেষ। এদিকে ততক্ষনে স্বায়ং আলেকজান্ডারও বাকী সৈন্য নিয়ে চলে এলেন ঝিলামের পুর্ব দিকে। সেই অবস্থায় যুদ্ধ করে পুরুর পুত্র পুরু, তার বহু সৈন্য সামন্ত সহ নিজে প্রান হারালেন।  বৃষ্টিতে সারা যুদ্ধ ক্ষেত্র কর্দমাক্ত। হাতী এবং রথের চলা অসম্ভব কিন্তু ঘোড়া চলতে পারে। সেটাই ছিলো আলেকজান্ডারের জয়ের প্রধান কারন। নইলে পুরুর  দুই পুত্র যে বীরত্বের সংগে যুদ্ধ করেছিলেন, তাতে আলেকজান্ডারের জয় ছিলো অসম্ভব। এই যুদ্ধে আলেকজান্ডার নিজেও বেশ আহত হন এবং তার সবচেয়ে বড়ো ক্ষতি হয় এই যে, পুরুর ছেলের গদার আঘাতে আলেকজান্ডারের সব থেকে  প্রিয় ঘোড়া Buccaphalus মারা যায়। আলেকজান্ডার ও পড়ে যান মাটিতে।

************
মুল যুদ্ধ
ভোর হতেই পুরুর কাছে সেই খবর এলো। পুরু রাজ বুঝলেন তাকে তঞ্চকতা করা হয়েছে। সংগে ছিলো মাত্র সামান্য হস্তীবাহিনী, হাজার দুয়েক ঘোড়া এবং কিছু পদাতিক তীরন্দাজ, সাকুল্যে দশ বারো হাজার। বাকী সব শেষ।

পুরুর পুত্র কে শেষ করে দ্রুত গতিতে তার গ্রীক ঘোড় সওয়ার নিয়ে আলেকজান্ডার এসে হাজির হলেন পুরুর বাহিনীর সামনে। সেই সুযোগে  ক্রেটেরাস ও ঝিলাম পার হয়ে আলেকজান্ডারের সংগে যোগ দিলো। পুরু জানতেন সেই অসম যুদ্ধের পরিনতি। কিন্তু যুদ্ধ করলেন। তার ছিলো মাত্র ২০০০ ঘোড় সওয়ার, আর আলেকজান্ডারের ১০০০০ হাজারের বেশী। আলেকজান্ডার যুদ্ধ পদ্ধতি বিশারদ ছিলেন। তার সৈন্যদের ছিলো লোহার বর্ম আর প্রায় ১২ ফুট লম্বা বর্শ দিয়ে তারা যুদ্ধ করতো। আর ছিলো লোহার ঢাল। এই সব কোনো কিছুই পুরুর সৈণ্যদের ছিলো না। তাদের বেশীর ভাগ ছিলো তীরন্দাজ। তাদের ছোড়া তীর লোহার বর্ম ভেদ করে যেতে পারতো। কিন্তু কর্দমাক্ত মাটিতে দাঁড়িয়ে তীর চালাতে অসুবিধা হলো এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য ভেদে ব্যার্থ হলো। গ্রীক  সৈন্য দের ঢাল একটি মানুষ কে পুরোটাই আড়াল করে রাখতে পারতো। দিন শেষ বীরের মতো যুদ্ধ করে পৌরব রাজ পুরু পরাজিত এবং বন্ধী হলেন এক পরাক্রমী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে। সেই পরাজয় ছিলো সম্মানের। তক্ষশীলার রাজা যদি খাইবার গিরি পথেই আলেকজান্ডার কে আটকে দিতেন তাহলে ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লিখতে হতো।

রাজা পুরু বন্ধী। আলেকজান্ডার তাকে তার বীরত্বের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে তার প্রতিনিধি হিসাবে থাকতে প্রস্তাব দিলেন। এই প্রস্তাবের পিছনে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক চাল ছিলো। পুরুকে নিজের দলে ভেড়াতে পারলে (তক্ষশীলার রাজার মতো) তাহলে ভারতের বাকী অংশ দখল করা শুধূ সময়ের অপেক্ষা।

পুরু সেই প্রস্তাবে রাজী হয়ে রাজা হিসাবে ই রইলেন কিন্তু  আলেকজান্ডারের কাছে পরাধীন। আলেকজান্ডার এর পর দক্ষিনে চললেন। ইচ্ছা ‘মালী রাজ্য’ দখল করা। পুরু গোপনে সেই সংবাদ দিলেন মালী রাজের কাছে। আলেকজান্ডার যখন মালী রাজ্য আক্রমন করেন তখন মালী সৈন্যরা পুরোপুরি তৈরী । সেই সময়, যুদ্ধের ঠিক আগে, রাজা পুরু আলেকজান্ডারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে মালী রাজের সংগে হাত মেলালেন।  যে আলেকজান্ডার জীবনে কোনোদিন পরাজিত হন নি,  পরাজয়ের কি গ্লানি সেটা প্রথম অনুভব করলেন জীবনের এই শেষ যুদ্ধে।

মালী রাজও  ছিলেন পরাক্রমী । নিজের রাজ্য রক্ষা করার জন্য তিনি আগে ভাগেই তৈরী ছিলেন। দুর্গের চারিদিকে পরিখা খনন করে , উচু দেওয়াল তুলে তিনি অপেক্ষারত। আলেকজান্ডার তার বিশালাকার ক্যাটাপুল্ট ( বিশাল গুলতির মতো) থেকে পাথর ছুড়েও কিছু করতে পারলেন না।তার সৈণ্যরা বিশাল মই লাগিয়ে দিলো দেওয়ালে। আলেকজান্ডার এবং তার ৩ দেহরক্ষী আগেই দুর্গ প্রাকারে ঊঠে এসেছেন। কিন্তু এর পর অনেকে এক সংগে উঠতে গিয়ে ভেংগে গেলো সেই মই। আলেকজান্ডার বুঝলেন, তিনি মালী সৈন্যের তীরের মুখে দাড়ীয়ে আছেন, সংগে মাত্র ৩ জন দেহরক্ষী।  ভিতরে স্বসৈন্যে মালী রাজ অপেক্ষা করছেন, রাজা পুরু তার সংগে। কিছু চিন্তা ভাবনা না করে উদ্ভ্রান্তের মতো আলেকজান্ডার (পরাজয় নিশ্চিত জেনে তার মাথা নিশ্চয় খারাপ হয়ে গিয়েছিলো) লাফিয়ে দুর্গের ভিতরে পড়লেন মালী রাজকে দ্বৈরথে আমন্ত্রন জানাতে। কিন্তু এক মালী সৈন্যের ছোড়া  একটি তীর তার বর্ম ভেদ করে, বুকের মাংস ভেদ করে, কন্ঠার হাড়ের ওপরে এসে গেথে গেলো। ফুসফুস ভেদ করে যাওয়ায় শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ ও আসতে থাকলো। রক্তাক্ত, গভীর ভাবে আহত আলেকজান্ডার পড়ে রইলেন মাটীতে। ততক্ষনে দেহ রক্ষীরাও ঝাপিয়ে নীচে পড়েছে এবং আলেকজান্ডারের বিখ্যাত ঢাল ‘Sheild Of Achilies” দিয়ে তার দেহ আবৃত করে দাড়ালো।  তীর ভেংগে বার করা হলো এবং ক্ষত সেলাই করে দেওয়া হলো। মালী রাজ এবং পুরু রাজ দুজনে মিলে আলেকজান্ডারের দেহরক্ষীদের বললেন, “তোমাদের রাজা এক মহান যোদ্ধা। উনি আহত । হিন্দুরা আহতকে আর আঘাত করে না। যাও ওকে নিয়ে যাও। শু্রুষা করো, আর বেঁচে থাকলে নিজের দেশে চলে যেতে বলো”।

কিছু সুস্থ হয়ে আলেকজান্ডার নদী পথে এসে পৌছালেন ভারত মহাসাগরে, তার পর ঢুকলেন মাকরান মরুভুমিতে। সেই মরুভুমি পার করতে তার সংগে থাকা বেশীর ভাগ সৈন্য সামন্ত মারা গেলো। ভগ্ন মনোরথ, অসুস্থ আলেকজান্ডার মারা গেলেন এই যুদ্ধের কিছুদিন পরে ব্যাবিলনে। ২০ বছর বয়ষে, পিতা ফিলিপ -২ কে, নিজের মায়ের সংগে পরিকল্পনা করে গুপ্ত ঘাতকের দ্বারা হত্যা করে,  রাজা হয়েছিলেন ম্যসিডোনিয়ার। দেশ থেকে বেরিয়ে,বহু রাজ্য দখল করে, অসংখ্য মানুষের রক্তে হাত রাংগিয়ে, বিশাল এক সাম্রাজ্য তৈরী করে, উত্তরাধিকার বিহীন আলেকজান্ডার মাত্র ৩২ বছর বয়ষে মারা গেলেন শুন্য হাতে।

বিধাতার কি খেলা!!!!!!