পশ্চিমবঙ্গ না জাগলে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন থামবে না: ডঃ তথাগত রায়
বাংলাদেশে অব্যাহত ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন’ শীর্ষক এক ঝুম ভিডিও কন্ফারেন্সে মেঘালয়ের গভর্নর ডঃ তথাগত রায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ না জাগলে বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ হবেনা। পশ্চিমবঙ্গকে জাগাতে হবে, পশ্চিমবঙ্গ জাগলে ভারত জাগবে। তিনি দু:খ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীরা বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের আত্মীয়, কিন্তু সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে এসে এঁরা আর কোন কথা বলেনা। এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর তথাগত রায় এ লক্ষ্যে করণীয় ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ক্যাম্ব (ক্যাম্পেইন এগেনস্ট এট্রোসিটিস অন মাইনরিটিস ইন বাংলাদেশ) গত দুই দশক ধরে এ কাজটি করে যাচ্ছে। এ ধরণের আরো সংগঠন দরকার। গভর্নর রায়কে অবহিত করা হয় যে, এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ‘গ্লোবাল বাঙ্গালী হিন্দু কোয়ালিশন’ গঠিত হয়েছে এবং এটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। গভর্নর রায় বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ; তিনি এলক্ষ্যে বিজেপি’র সাথে কাজ করার পরামর্শ দেন।
কলকাতা থেকে ক্যাম্ব সভাপতি ডঃ মোহিত রায় গভর্নর ডঃ তথাগত রায়ের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ক্যাম্ব বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের হিন্দুদের সাথে দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিজেপি নেতারা এখন বাংলাদেশের হিন্দুদের সমস্যা নিয়ে কথা বলছেন। ড: মোহিত আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নীরবতা ভাঙ্গতে হবে। ঢাকা থেকে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামানিক পশ্চিমবঙ্গকে জাগাতে গভর্নর রায় ও ক্যাম্বকে নেতৃত্ব দেয়ার আহবান জানান। কলকাতার সুজিত শিকদার বলেন, বিজেপি’তে বাংলাদেশ সেল খুলতে হবে। দিল্লির অনিরুদ্ধ দে বলেন, পশ্চিমবাংলার হিন্দুরা কুম্ভকর্ণের ঘুম ঘুমাচ্ছেন।
রবিবার ঢাকা সময় রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত এ ভিডিও কন্ফারেন্সে বিশ্বের অন্তত দুই ডজন সিটির প্রায় তিরিশ জন সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এটি চলে এক ঘন্টা পঞ্চাশ মিনিট। এতে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয়। বিভিন্ন বক্তা মত্ প্রকাশ করেন যে, করোনা মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন চলে তো চলছেই। তাঁরা বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ করেন। বক্তারা বলেন, কংগ্রেস ও বাম সরকার কখনো বাংলাদেশে হিন্দুদের নিয়ে মাথা ঘামায়নি এবং এখন তৃণমূল একটি শব্দও উচ্চারণ করেনা। বিজেপি এ সময়ে কিছুটা কথাবার্তা বলছেন, এজন্যে তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন নবেন্দু বিকাশ দত্ত, সভাপতি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিসদ, যুক্তরাষ্ট্র; অরুন দত্ত, সভাপতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি এল্যায়েন্স, টরন্টো; দিলীপ কর্মকার, বাংলাদেশ মাইনরিটি কোয়ালিশন, মন্ট্রিল; তরুণ চৌধুরী, সভাপতি, ইউরোপীয় ঐক্য পরিষদ; চিত্রা পাল, সুইডেন হিন্দু ফোরাম; অরুন বড়ুয়া, সভাপতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি কাউন্সিল, জেনেভা; উদয়ন বড়ুয়া, সভাপতি, ইউরোপীয় ঐক্য পরিষদ; স্বদেশ বড়ুয়া, সভাপতি, ফ্রান্স ঐক্য পরিষদ; ইরা দত্ত, টরন্টো হিন্দু মন্দির; ড: নিরঞ্জন রায়, সভাপতি, ক্যালিফোর্নিয়া ঐক্য পরিষদ; অনিরুদ্ধ দে এবং বিজয় ভট্টাচার্য্য, গ্লোবাল বাঙ্গালী হিন্দু কোয়ালিশন, দিল্লি; আলফ্রেড দেবাশীষ ভৌমিক ও নীলকমল সাহা, জার্মানী; রজত দাশগুপ্ত সাউথ ক্যারোলিনা; পরিতোষ তাড়ুয়া, বাংলাদেশ; বিপ্লব সরকার, ডালাস, সাজেন কৃষ্ণ বাউল, যুব হিন্দু মহাজোট; এবং হোষ্ট শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক। [email protected];