কিছু ধর্মহীন জঙ্গি সংগঠন ও তার পরিচিতি : –
● অাল কায়েদা:-
প্রতিষ্ঠাতা – ওসামা বিন লাদেন। জন্ম – সৌদি অারব। বিস্তার লাভ করে অাফগানিস্তান, মিশর, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন ও পাকিস্তানে।
● তালেবান :-
প্রতিষ্ঠাতা – মোল্লা ওমর (অাফগানিস্তান।) অাশির দশকে অাফগান-সোভিয়েত যুদ্ধের পরপরই তাদের অাবির্ভাব হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তানেও ছড়িয়ে পড়ে।
● অাইএস:-
জন্ম – ইরাক এবং সিরিয়ায়। প্রতিষ্ঠাতা – অাবুবকর অাল বাগদাদী। তারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মতই বর্বর ও ধর্ষক। তবে সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের অনুসারী অাছে। মাঝেমধ্যে ইউরোপীয় দেশসমূহে তারা জঙ্গি এক্সপোর্ট করে।
● বোকো হারাম:-
জন্ম – নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ায় খুন, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তর সহ এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করছেনা।
● অাবু সায়াফ:-
জন্ম – মিন্দানাও, ফিলিপাইন। ইসলামের নামে যুদ্ধ করে সহিংসতা ও সন্ত্রাস করে ফিলিপাইনের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে। অাল কায়েদা ও অাইএসের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।
● জয়শ-ই মোহাম্মদ:-
জন্ম -পাকিস্তান। প্রতিষ্ঠাতা – মাওলানা মাসুদ অাজহার। পাকিস্তানের ভেতরে বসে ভারতে জঙ্গি পাচার করা তাঁর অন্যতম পেশা। পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর অাস্থাভাজন। ভারত মাসুদ অাজহারকে গ্রেপ্তার করেছিল। ১৯৯৯ সালে তাঁকে মুক্ততা করার উদ্দেশ্যে তালেবানরা ভারতীয় বিমান ছিনতাই করে কান্দাহারে নিয়ে যায়। এরপর মাসুদ অাজহারকে ভারতের হেফাজত থেকে ছুটিয়ে নেয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই জঙ্গিকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী অাখ্যা দেয়ার জন্য প্রস্তুাব করা হয়, কিন্তু সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বৃহত্তম গডফাদার চীনের অাপত্তির কারণে মাসুদ অাজহারকে সন্ত্রাসী অাখ্যা দেয়া সম্ভব হয়নি!
● সিপাহ-এ সাহাবা:-
জন্ম-(পাকিস্তান। শিয়া মুসলিমদের টার্গেট করে হামলা চালানো এই গ্রুপের কাজ।
● হিজবুল মুজাহিদীন:-
জন্ম- কাশ্মীর, ভারত। পাকিস্তান ও চীনের মদদে কাশ্মীরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা এদের কাজ।
● জামায়াত উদ দাওয়াহ:-
জন্ম – পাকিস্তান। সেবামূলক কাজের অাড়ালে জঙ্গি রিক্রুট করা এ দলের কাজ। মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশ থেকে এরা বড়ধরণের ফান্ড পায়।
● লস্কর ই তৈবা:-
জন্ম:-পাকিস্তান। পাক সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ এ গ্রুপ কাশ্মীর ও মুম্বাইয়ে বেশকিছু হামলা পরিচালনা করেছে। সেনাবাহিনীতে জঙ্গি অাদর্শও তারা রপ্তানি করে।
● জেমাহ ইসলামিয়াহ:-
জন্ম- ইন্দোনেশিয়া। বালিতে বোমা হামলার পর এই গ্রুপটি অালোচনায় অাসে। ইসলাম প্রচারের অাড়ালে তারা জঙ্গিবাদের বিস্তার করেছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায়।
● অাল শাবাব:-
জন্ম- সোমালিয়া। ওসামা বিন লাদেনের ভাবশিষ্যরা এই সংগঠন তৈরি করে সোমালিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া সহ অাফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জঙ্গি রপ্তানি করে। তাদের অর্থের উৎস সাগরের জাহাজ ছিনতাই ও ডাকাতি করা।
● ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন:-
জন্ম- ভারত। মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের মাধ্যমে পাকিস্তানের মদদে এরা চলতো, এখন কিছুটা ব্যকফুটে।
● হিজবুল্লাহ:-
জন্ম- লেবানন। ইরানের অর্থসাহায্য ও অস্ত্রসাহায্যের উপর নির্ভরশীল এ দলটি মধ্যপ্রাচ্যে বেশ প্রভাবশালী। লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি হত্যাকান্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রামাণিত।
● হিজবুত তাহরির:-
অান্তর্জাতিক এ জঙ্গি সংগঠনের উৎস কোনদেশে তা জানিনা। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি ও ধনীর সন্তানদেরকে টার্গেট করে তাদেরকে প্রথমে ধার্মিক বানায়, এরপর জঙ্গিবাদের দীক্ষা দেয়। অনলাইনে প্রচার ও ইন্টারনেট চালাতে তারা বেশ পটু।
● হিজবুত তাওহীদ:-
জন্ম- (বাংলাদেশ। বায়েজীদ খান পন্নীর এ দলটি অতিরিক্ত গোঁড়া। তাদের স্পেশালিটি হচ্ছে – ইমামকে এমাম বলা, ইসলামকে এসলাম বলা। তারা দাজ্জাল ও ইয়াজুজ-মাজুজ বলতে বোঝে ইয়াহুদী-খ্রিস্টান সভ্যতা। তাদের নিকট তাদের ইমাম বাদে পৃথিবীর সব অালেমরা মুর্খ ও ইসলামবিরোধী। এরা নামাজ-রোজার ধার ধারেনা, শুধু নবীজির (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী প্রচার করে বেড়ায়!
তারা নিজ পীর ও দল বাদে সবাইকে ‘ইসলামের দুশমন ও মূর্খ’ মনে করে!
● রাজারবাগী পীর:-
জন্ম- রাজারবাগ, ঢাকা, বাংলাদেশ। এই পীর ভয়াবহ ফতোয়াবাজ। সারাদিন ‘হারাম, হারাম!’ করে চেঁচানো সে ও তাঁর মুরিদদের কাজ। তাঁর দৃষ্টিতে হারামের তালিকা – রক্তদান করা, ছবিতোলা, টিভিতে ইসলামিক প্রোগ্রাম করা, কোরঅান তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা, লংমার্চ-মিছিল-হরতাল করা, নির্বাচন করা ও ভোট দেয়া, পত্রিকায় ছবি ছাপানো। এই পীরের অনুসারিরা বলাকা ভবনের ‘বক ভাস্কর্য’ ভাঙ্গায় অভিযুক্ত। অতিভক্তি প্রদর্শন এ পীরের অারেক বৈশিষ্ট্য।
তাদের লেখা ও কথায় সবসময় ‘উনি’ ও ‘উনার’ শব্দ থাকে, যেমন ধরুন – “পবিত্র কোরঅান কারীম উনার তাফসীর শরীফ”, অথবা “হযরত অালি (রা.) উনি বলেছেন।” রাজারবাগীর অনুসারীরা নিজ পীর ও দলের বাইরের সকলকে ‘কাফের’ মনে করে!
● জেএমবি:-
জন্ম- বাংলাদেশ। বিএনপি ও জামায়াতের রাজশাহীর নেতাদের অাস্কারায় তৈরি এ দলটি শায়খ অা:রহমান ও বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে গঠিত হয়। পরবর্তীতে তারা ফ্রান্কেনস্টাইন হলে তাদের শেল্টারদাতারাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। শায়খ রহমান ও বাংলাভাই এখন পরকালে অাছে!
● হরকাতুল জেহাদ:-
মুফতি হান্নানের তৈরি। অাফগানফেরত জেহাদিদের নিয়ে গঠিত এ দলটি মাদরাসাগুলিতে একসময় খুব জনপ্রিয় ছিল, পরে তাদের কোমর ভেঙ্গে দেয় অাইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মুফতি হান্নান এখন পরকালে!
● অানসারুল্লাহ বাংলা টিম:-
জন্ম- বাংলাদেশ। মুফতি জসিমউদ্দীন রহমানির হাতেগড়া সংগঠন। সৌদি ওয়াহাবি মতাদর্শে প্রভাবিত জসিমউদ্দীনের এই সংগঠন বেশকিছু ব্লগার হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। রহমানি এখন কারাগারে।
● জুনদোল্লাহ:-
জন্ম- ইরান। সৌদি অর্থে পরিচালিত এ সংগঠনটি মূলত ওয়াহাবি ধারার জঙ্গি সংগঠন। ইরানে কয়েকবার অাত্মঘাতী হামলা করলেও এখন তারা নিষ্ক্রিয়।
● অানসার অাল ইসলাম:-
জন্ম- বাংলাদেশ। পুলিশি অভিযানে বাংলাদেশের সব জঙ্গি সংগঠনের মত এরাও ঝিমিয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যে মাথাচাড়া দিতে চাইলেই পুলিশি অ্যাকশনে পুনরায় ঝিমিয়ে পড়ে।
● হেফাজতে ইসলাম:-
জন্ম- বাংলাদেশ। এ সংগঠনটি সরাসরি সন্ত্রাসের সাথে জড়িত না হলেও সন্ত্রাসে মদত ও উস্কানির জন্য দায়ী। দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের কালোটাকার উপর নির্ভর করেই এ দল চলে। বাংলাদেশের আওয়ামীলীগের কিছু জামাতপন্থী নেতা, মাহমুদুর রহমান ও দিগন্ত গ্রুপের পরিকল্পনায় এ দলটি তৈরি করেন অাল্লামা অাহমদ শফি। ইসলাম হেফাজতের নামে অপব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে মোটা অন্কের টাকা হাতানোর ধান্ধা করে হেফাজত। সব দলের কাছ থেকেই তারা টাকা খায়, সব ধরণের টাকাই খায়।
● হামাস:-
জন্ম – ফিলিস্তিন। আরবি অর্থে “উদ্দীপনা”। এটি সুন্নি ইসলামী রাজনৈতিক দল যে গাজা স্ট্রিপ নিয়ন্ত্রণ করে। হামাসের ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড নামে একটি সামরিক শাখা আছে। জানুয়ারী ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট সংসদীয় নির্বাচনে অধিকাংশ আসন জিতে,জুন ২০০৭ সাল থেকে হামাস ফিলিস্তিন অঞ্চলের গাজা ভূখণ্ড পরিচালিত করছে এবং তারপর সহিংস সংঘাতের মাধ্যমে ফাতাহ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে পরাজিত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইস্রায়েল এবং জাপান হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, যখন আরব দেশগুলি, রাশিয়া এবং তুরস্ক হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেনি। যদিও হামাসের কর্মকাণ্ড যেমন নিরীহ মানুষ (নাস্তিক বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর মানুষ) হত্যা এবং নারীদেরকে গৃহে আবদ্ধ করে রাখা হামাসকে একটি সন্ত্রাসী এবং উগ্রপন্থী সংগঠন হিসেবেই চিহ্নিত করে।
সংকলিত, পরিমার্জিত ও তথ্যবহুল।