দে, প্রাণ কুমার (১৯০১-১৯৯০) শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী। পি.কে দে
নামে অধিক পরিচিত। ফরিদপুর জেলার রত্নাকুন্ডালী গ্রামে প্রাণ কুমার দে
জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে তিনি ১৯২২ ও ১৯২৪ সালে যথাক্রমে বি.এসসি ও এম.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন
এবং উভয় পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯২৪ সাল থেকে ১৯২৬ সাল
পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়ন শাস্ত্রে গবেষণাকর্ম
পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতে গমন করেন এবং ১৯২৭ সাল থেকে ১৯৩০ সাল
পর্যন্ত ভারতের বাঙ্গালোরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে
জীববিজ্ঞান ও অণুজীব বিজ্ঞান শাস্ত্রে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন।
১৯৩০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে
যোগদানের মধ্য দিয়ে প্রাণ কুমার দে’র কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত
তিনি রসায়ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। স্যার জে.সি ঘোষের অনুপ্রেরণায় তিনি
ক্ষুদ্র পরিসরে রসায়ন বিভাগে একটি কৃষি গবেষণা ইউনিট চালু করেন যা
পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ রূপ লাভ করে একটি পূর্ণাঙ্গ মৃত্তিকা বিজ্ঞান
বিভাগে পরিণত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নবগঠিত বিভাগে প্রাণ কুমার দে
শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৯ সালে ঢাকায় কৃষি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে
সেখানে জৈব রসায়ন, প্রাণ রসায়ন এবং অণুজীব বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষা
প্রদানের দায়িত্ব তাঁর ওপর অর্পিত হয়। অণুজীব বিজ্ঞান বিষয়ে ব্যাপক
গবেষণাকর্ম পরিচালনাকালে তিনি লক্ষ্য করেন যে, কয়েক প্রজাতির নীলাভ সবুজ
শৈবাল বায়ুমন্ডল থেকে প্রাথমিক নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণে সক্ষম। বিলেতের কুইন
মেরি কলেজে ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের
ওপর আরও উচ্চতর গবেষণাকার্য পরিচালনা করেন। তাঁর এই গবেষণার শিরোনাম ছিলো
‘Role of Blue Green Algae in N-fixation in Rice Field’ যার সাফল্য হিসেবে
পি.কে দে ১৯৩৮ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন
করেন। পি কে দে’র এই সাফল্য তাঁকে আন্তর্জাতিক সম্মান এনে দেয় এবং সেই
সঙ্গে তাঁর আবিষ্কার মৃত্তিকার উর্বরতায় একটি নতুন তত্ত্বের সূচনা করে।
উপমহাদেশের বিভক্তির পর পি.কে দে ভারতে চলে যান এবং পশ্চিমবঙ্গের
কৃষি বিভাগে অণুজীব বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৪৭ সাল
থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত কর্মরত থাকেন এবং তাঁর নেতৃত্বে একদল নবীন গবেষক
মৃত্তিকা উর্বরতা সংক্রান্ত গবেষণা প্রকল্পে ব্যাপক সমন্বিত গবেষণাকর্ম
পরিচালনা করে। এই প্রকল্পটি স্টুয়ার্টের প্রকল্প (Stewart’s scheme) নামে
খ্যাত। ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্টেট কলেজ অব
এগ্রিকালচার-এ প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে পি.কে
দে কলেজটিকে নদীয়া জেলার হরিণঘাটায় স্থানান্তরিত করেন যা পরবর্তীতে বিধান
চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ
নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে অবসর গ্রহণ করার পর তিনি ইন্ডিয়ান
স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট-এ অধ্যাপক পদে যোগ দিয়ে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত
সেখানে শিক্ষকতা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কলেজ অব
এগ্রিকালচার-এ সম্মানী অধ্যাপক হিসেবে এক দশকেরও অধিককাল যাবত কর্মরত
থাকেন। কৃষি শিক্ষার প্রসারে প্রাণ কুমার দে’র অসামান্য অবদানের
স্বীকৃতিস্বরূপ বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে তাঁকে সম্মান
সূচক ‘ডি.এসসি’ ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৯০ সালে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ
করেন। [ডি.কে দাস এবং এস.কে সান্যাল]
নামে অধিক পরিচিত। ফরিদপুর জেলার রত্নাকুন্ডালী গ্রামে প্রাণ কুমার দে
জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে তিনি ১৯২২ ও ১৯২৪ সালে যথাক্রমে বি.এসসি ও এম.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন
এবং উভয় পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯২৪ সাল থেকে ১৯২৬ সাল
পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়ন শাস্ত্রে গবেষণাকর্ম
পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতে গমন করেন এবং ১৯২৭ সাল থেকে ১৯৩০ সাল
পর্যন্ত ভারতের বাঙ্গালোরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে
জীববিজ্ঞান ও অণুজীব বিজ্ঞান শাস্ত্রে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন।
১৯৩০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে
যোগদানের মধ্য দিয়ে প্রাণ কুমার দে’র কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত
তিনি রসায়ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। স্যার জে.সি ঘোষের অনুপ্রেরণায় তিনি
ক্ষুদ্র পরিসরে রসায়ন বিভাগে একটি কৃষি গবেষণা ইউনিট চালু করেন যা
পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ রূপ লাভ করে একটি পূর্ণাঙ্গ মৃত্তিকা বিজ্ঞান
বিভাগে পরিণত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নবগঠিত বিভাগে প্রাণ কুমার দে
শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৯ সালে ঢাকায় কৃষি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে
সেখানে জৈব রসায়ন, প্রাণ রসায়ন এবং অণুজীব বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষা
প্রদানের দায়িত্ব তাঁর ওপর অর্পিত হয়। অণুজীব বিজ্ঞান বিষয়ে ব্যাপক
গবেষণাকর্ম পরিচালনাকালে তিনি লক্ষ্য করেন যে, কয়েক প্রজাতির নীলাভ সবুজ
শৈবাল বায়ুমন্ডল থেকে প্রাথমিক নাইট্রোজেন আবদ্ধকরণে সক্ষম। বিলেতের কুইন
মেরি কলেজে ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের
ওপর আরও উচ্চতর গবেষণাকার্য পরিচালনা করেন। তাঁর এই গবেষণার শিরোনাম ছিলো
‘Role of Blue Green Algae in N-fixation in Rice Field’ যার সাফল্য হিসেবে
পি.কে দে ১৯৩৮ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন
করেন। পি কে দে’র এই সাফল্য তাঁকে আন্তর্জাতিক সম্মান এনে দেয় এবং সেই
সঙ্গে তাঁর আবিষ্কার মৃত্তিকার উর্বরতায় একটি নতুন তত্ত্বের সূচনা করে।
উপমহাদেশের বিভক্তির পর পি.কে দে ভারতে চলে যান এবং পশ্চিমবঙ্গের
কৃষি বিভাগে অণুজীব বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৪৭ সাল
থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত কর্মরত থাকেন এবং তাঁর নেতৃত্বে একদল নবীন গবেষক
মৃত্তিকা উর্বরতা সংক্রান্ত গবেষণা প্রকল্পে ব্যাপক সমন্বিত গবেষণাকর্ম
পরিচালনা করে। এই প্রকল্পটি স্টুয়ার্টের প্রকল্প (Stewart’s scheme) নামে
খ্যাত। ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্টেট কলেজ অব
এগ্রিকালচার-এ প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে পি.কে
দে কলেজটিকে নদীয়া জেলার হরিণঘাটায় স্থানান্তরিত করেন যা পরবর্তীতে বিধান
চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ
নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে অবসর গ্রহণ করার পর তিনি ইন্ডিয়ান
স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট-এ অধ্যাপক পদে যোগ দিয়ে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত
সেখানে শিক্ষকতা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কলেজ অব
এগ্রিকালচার-এ সম্মানী অধ্যাপক হিসেবে এক দশকেরও অধিককাল যাবত কর্মরত
থাকেন। কৃষি শিক্ষার প্রসারে প্রাণ কুমার দে’র অসামান্য অবদানের
স্বীকৃতিস্বরূপ বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে তাঁকে সম্মান
সূচক ‘ডি.এসসি’ ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৯০ সালে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ
করেন। [ডি.কে দাস এবং এস.কে সান্যাল]