বসু, প্রমথনাথ (১৮৫৫-১৯৩৫) ভূতত্ত্ববিদ্। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ১২
মে পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার গৈপুরে তাঁর জন্ম। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
তিনি কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে এফএ পাস করে
কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। এ কলেজে অধ্যয়নকালে ১৮৭৪
খ্রিস্টাব্দে তিনি গিলক্রাইস্ট বৃত্তি লাভ করে ইংল্যান্ড যান এবং ১৮৭৮
খ্রিস্টাব্দে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরের
বছর রয়্যাল স্কুল অফ মাইনস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি স্বদেশ
প্রত্যাবর্তন করেন।
১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রমথনাথ ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’-তে
উচ্চপদে নিয়োগ পান। কিন্তু বিশেষ কারণবশত ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পদত্যাগ
করেন। উক্ত ভূতাত্ত্বিক সংস্থায় চাকরিকালীন সময়ে তিনি মধ্যপ্রদেশের
বিভিন্ন অঞ্চলে খনিজ সমীক্ষা পরিচালনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি হলো
ধুল্লী ও রাজাহারা লৌহখনি আবিষ্কার, যার ফলে ভিলাই কারখানা স্থাপিত হয়।
তিনি কিছুদিন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের ভূবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
প্রমথনাথ বসুর শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো জামসেদপুর লৌহখনি আবিষ্কার
(১৯০৩-৪)। এরই ভিত্তিতে ভারতের বিখ্যাত টাটা-কোম্পানী লৌহ-ইস্পাত কারখানা
স্থাপনে সম্মত হয়। অধিকন্তু তিনি রানীগঞ্জ, দার্জিলিং ও আসামে কয়লা,
সিকিমে তামা এবং ব্রহ্মদেশে খনিজ অনুসন্ধান পরিচালনা করেন।
প্রমথনাথ বসু ছিলেন স্বদেশপ্রেমে উজ্জীবিত। তিনি ভারতে বিজ্ঞান ও
শিল্পশিক্ষার উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে বিলেতে ‘ইন্ডিয়া সোসাইটি’র
কর্মসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। একই লক্ষ্যে তিনি স্বদেশে ১৯০৬ থেকে ১৯২০
খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে স্থাপিত বেঙ্গল
টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের (বর্তমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) প্রথম অবৈতনিক
অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি এর পরিদর্শক পদে উন্নীত হন।
উপরিউক্ত কাজে পূর্ব থেকেই প্রমথনাথ লেখনী পরিচালনা করেন। বাংলা
মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে তিনি ছিলেন দৃঢ় বিশ্বাসী। স্বদেশী
আন্দোলনে তাঁর অবদান প্রশংসনীয়। তিনি ‘বেঙ্গল একাডেমী অব লিটারেচার’
স্থাপন করেন যা পরবর্তীকালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে
যায়। উক্ত একাডেমীর লক্ষ্য ছিল পাঠ্যপুস্তকের বিষয় নির্বাচনে সহায়তা
করা। তিনি কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন।
প্রমথনাথ অনেক গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সেগুলির বিষয়বস্ত্ত
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও হিন্দু সভ্যতা। শেষ জীবনে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ
পর্যন্ত তিনি অমৃতবাজার পত্রিকায় নিজের জীবনস্মৃতিমূলক ধারাবাহিক প্রবন্ধ
রচনা করেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। [সমবারু
চন্দ্র মহন্ত]
মে পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার গৈপুরে তাঁর জন্ম। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
তিনি কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে এফএ পাস করে
কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। এ কলেজে অধ্যয়নকালে ১৮৭৪
খ্রিস্টাব্দে তিনি গিলক্রাইস্ট বৃত্তি লাভ করে ইংল্যান্ড যান এবং ১৮৭৮
খ্রিস্টাব্দে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরের
বছর রয়্যাল স্কুল অফ মাইনস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি স্বদেশ
প্রত্যাবর্তন করেন।
১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রমথনাথ ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’-তে
উচ্চপদে নিয়োগ পান। কিন্তু বিশেষ কারণবশত ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পদত্যাগ
করেন। উক্ত ভূতাত্ত্বিক সংস্থায় চাকরিকালীন সময়ে তিনি মধ্যপ্রদেশের
বিভিন্ন অঞ্চলে খনিজ সমীক্ষা পরিচালনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি হলো
ধুল্লী ও রাজাহারা লৌহখনি আবিষ্কার, যার ফলে ভিলাই কারখানা স্থাপিত হয়।
তিনি কিছুদিন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের ভূবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
প্রমথনাথ বসুর শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো জামসেদপুর লৌহখনি আবিষ্কার
(১৯০৩-৪)। এরই ভিত্তিতে ভারতের বিখ্যাত টাটা-কোম্পানী লৌহ-ইস্পাত কারখানা
স্থাপনে সম্মত হয়। অধিকন্তু তিনি রানীগঞ্জ, দার্জিলিং ও আসামে কয়লা,
সিকিমে তামা এবং ব্রহ্মদেশে খনিজ অনুসন্ধান পরিচালনা করেন।
প্রমথনাথ বসু ছিলেন স্বদেশপ্রেমে উজ্জীবিত। তিনি ভারতে বিজ্ঞান ও
শিল্পশিক্ষার উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে বিলেতে ‘ইন্ডিয়া সোসাইটি’র
কর্মসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। একই লক্ষ্যে তিনি স্বদেশে ১৯০৬ থেকে ১৯২০
খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে স্থাপিত বেঙ্গল
টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের (বর্তমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) প্রথম অবৈতনিক
অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি এর পরিদর্শক পদে উন্নীত হন।
উপরিউক্ত কাজে পূর্ব থেকেই প্রমথনাথ লেখনী পরিচালনা করেন। বাংলা
মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে তিনি ছিলেন দৃঢ় বিশ্বাসী। স্বদেশী
আন্দোলনে তাঁর অবদান প্রশংসনীয়। তিনি ‘বেঙ্গল একাডেমী অব লিটারেচার’
স্থাপন করেন যা পরবর্তীকালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে
যায়। উক্ত একাডেমীর লক্ষ্য ছিল পাঠ্যপুস্তকের বিষয় নির্বাচনে সহায়তা
করা। তিনি কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন।
প্রমথনাথ অনেক গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সেগুলির বিষয়বস্ত্ত
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও হিন্দু সভ্যতা। শেষ জীবনে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ
পর্যন্ত তিনি অমৃতবাজার পত্রিকায় নিজের জীবনস্মৃতিমূলক ধারাবাহিক প্রবন্ধ
রচনা করেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। [সমবারু
চন্দ্র মহন্ত]