মুসলিম প্রধান ধর্মাশ্রয়ী সংখ্যালঘুহীন রাষ্ট্রে সেকুলার দল খোঁজা পাগলামি। ওখানে যারাই জিতুক, আসলে জেতে কিন্তু মৌলবাদই।

পাকিস্তানে হাফিজ সঈদের দলের জামানত জব্দে অনেক বামপন্থী বন্ধুকে বেশ উল্লাস প্রকাশ করতে দেখলাম। হাফিজের পরাজয়, আর ইমরান খানের জয় নাকি সেদেশের মানুষের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার জয়! এদেশেও নাকি এমনই হতে চলেছে, অর্থাৎ এদেশেও সাম্প্রদায়িক দলের রাজত্ব শেষ, মানুষ জাগছে । খুব ভালো, খুব আনন্দের কথা। কিন্তু ওদের কি মাপকাঠির পার্থক্যটা জানা আছে?

বুঝিয়ে বলছি – কোন সেক্যুলার দল কি সেখানে জয়ী হয়েছে? নবীর মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশকে চালানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া জেহাদের নামে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের খোলাখুলি সমর্থক সদ্য নির্বাচিত ইমরান খানকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে পাঁচ বার ‘ইনশাল্লাহ’ বলতে শুনলাম। তাহলে এটাই কি ওখানকার ইসলামী সেক্যুলারিজম? মন্দের ভালো? এখানকার আর ওখানকার সেক্যুলারিজম বা সাম্প্রদায়িকতা মাপার মাপকাঠিটাই কি আলাদা? যে মাপকাঠিতে মেপে এদেশের একজনকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দেওয়া হয়, সেই মাপকাঠির একই বিন্দুর ওসব দেশের কেউ আখ্যা পেতে পারে ‘সেক্যুলার’? অর্থাৎ মাপকাঠির যে বিন্দুতে গিয়ে শেষ হয় এদেশের মৌলবাদ, ঠিক সেই বিন্দু থেকেই শুরু হয় ওসব দেশের অসাম্প্রদায়িকতা বা প্রগতিশীলতা?ওসব দেশের একজন সাধারণ অসাম্প্রদায়িক মানুষও কি তাহলে এদেশের একজন সাম্প্রদায়িক মানুষের থেকেও বেশি সাম্প্রদায়িক হয়?

তাহলে ব্যাপারটা কি এরকম – ইসলামিক মাপকাঠিতে কথায় কথায় ইনশাল্লাহ বলা ইমরান, হাসিনা বা ওমর খালিদরাই অসাম্প্রদায়িক, কারণ এরা যে হাফিজ সাঈদ নন । এর চেয়ে বেশি অসাম্প্রদায়িক হওয়া যে এদের সম্ভবই না! এদের অসাম্প্রদায়িকতার সর্বোচ্চ সীমা যে এটাই, হাফিজ সাঈদ না হওয়াটা!

জন্মের পর থেকে এই প্রথম পাকিস্তানে একজন হিন্দু প্রার্থী জয়ী হলেন (মহেশ মালানী), এ নিয়ে সারা বিশ্ব শোরগোল, গিনেস বুকে নাম উঠার যোগাড়! আর এ দেশে তো ফি বছরই অগুণতি মুসলিম প্রার্থী জয়ী হচ্ছে, জলভাত!

আসলে মুসলিম প্রধান ধর্মাশ্রয়ী সংখ্যালঘুহীন রাষ্ট্রে সেকুলার দল খোঁজা পাগলামি।  ওখানে যারাই জিতুক, আসলে জেতে কিন্তু মৌলবাদই।

কিন্তু প্রশ্নটা হল বামপন্থীরা কয়টা ভোট পেয়েছে এবার সেখানে ? কেউ জানাবেন কি প্লীজ ! ইসলামিক দেশের বামপন্থাও তো ইসলামাইজ্ড বামপন্থা, এরপরও…?

কয়েক বছর আগে তো দেখেছি সারা দেশ জুড়ে সর্ব সাকুল্যে একশো একানব্বইটা ভোট । এবার কয়টা?