হিন্দু মুসলিম আবার কি, এই দেশটা সবার । কিন্তু একই দেশ ভেঙ্গে সৃষ্টি হওয়া আমাদের প্রতিবেশী মুসলিম প্রধান দেশগুলি কিন্তু শুধুই মুসলমানদের !

হিন্দু মুসলিম আবার কি, এই দেশটা সবার । কিন্তু একই দেশ ভেঙ্গে সৃষ্টি হওয়া আমাদের প্রতিবেশী মুসলিম প্রধান দেশগুলি কিন্তু শুধুই মুসলমানদের !

একটু ভাবুন তো, এই যে বলা হয় ছেচল্লিশে দেশভাগ হয়েছিল, সত্যিই দেশভাগ হয়েছিলো, নাকি দেশ ভাঙ্গা হয়েছিল? ভাগ হলে তো হিন্দুদেরও অংশ একটা থাকতো, সেটা কোথায় তাহলে? মানুষ ভাগ না করে, সম্পত্তি ভাগ না করে দেশ ভাগের এমন উদাহরণ পৃথিবীতে আর একটি আছে কি? তাহলে কি দেশভাগের নামে  লম্পট লোভী নেতাদের সহযোগিতায় চতুুুর মুসলমানরা নিজেদের জন্য আলাদা অংশ নিয়ে নিল, হিন্দুদের বোকা বানিয়ে? হিন্দুরা কি পেল তাহলে? মুসলমানদের কারসাজিতে দেশ ভাঙ্গল শুধু , ভাগ কিন্তু হল না। একই দেশ ভেঙ্গে সৃষ্টি হওয়া আমাদের মুসলিম প্রধান প্রতিবেশী দেশগুলি শুধুই মুসলমানদের, কিন্তু হিন্দু প্রধান অংশটি ধর্ম নিরপেক্ষতার সব দায় নিয়ে রয়ে গেল সবার। কেন মুসলিম প্রধান দেশগুলি সবার হয় না, হতে পারে না?

দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে, অর্থাৎ হিন্দু মুসলিম আলাদা জাতি, তাই একসঙ্গে থাকা কোনমতেই সম্ভব নয় – এই যুক্তিতেই তো জিন্না তথা মুসলিম লীগ দেশভাগ চেয়েছিল। দেশভাগের দাবীতে ‘ডাইরেক্ট একশন ডে’ তে কলকাতায় আর পরে নোয়াখালীতে চলল মুসলমানদের হিন্দু নিধন যজ্ঞ । সেক্যুলার বলে জাহির করলেও ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভেঙে মুসলমানদের জন্য আলাদা ইসলামিক রাষ্ট্রের এই দাবিতে গলা মিলিয়েছিল ধর্ম হীন কমিউনিস্টরাও। কিন্তু নিজেদের প্রাপ্যের ষোলো আনার জায়গায় আঠারো আনা সেই ভূখন্ড পেয়েও মুসলমানরা তো সেখানে গেল না। আলাদা রাষ্ট্র আদায় করে নেওয়ার পর কিন্তু আর হিন্দুদের সঙ্গে থাকতে এদের আর কোন অসুবিধা রইলো না। দেশভাগের আগে যে অধিকাংশ মুসলমান ছিল আলাদা পাকিস্তানের পক্ষে, দেশভাগের পর এরাই সুযোগ বুঝে বনে গেল মহান দেশ প্রেমিক। ১৪ ই অগাস্ট যারা জোরালো ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন, ১৫ ই অগাস্ট রহস্যজনক ভাবে তারাই হয়ে গেল দেশপ্রেমিক ! গাছেরও খেলাম, তলারও কুড়ালাম ! এরা তো গেল না, কিন্তু নিজেদের অংশ থেকে ব্যপক নির্যাতনের মুখে হিন্দুদের বাধ্য করল ভিটে মাটি ছাড়তে। শুধু তা’ই নয়, প্রতিবেশী দেশ থেকে ব্যপক হারে জাত ভাইদের এনে ঢুকিয়ে আশ্রয় দিয়ে এদেশের জন বিন্যাস পাল্টে ফেলা হচ্ছে। আবার মুখে বলছে এ দেশে নাকি মুসলমানরা নিরাপদ নয়, অত্যাচারিত। এটা কি রকম ভাগ তাহলে ! হিন্দুদের উদারতার (আসলে আত্মঘাতী বোকামি) সুযোগ নিয়ে আবার ভাগ নয়, দেশ ভাঙ্গার চক্রান্ত শুরু করে দিয়েছে ইসলামিক জেহাদীরা। যত দিন যাচ্ছে, ততোই ফুটে উঠছে এদের পাক প্রেমী আসল চেহারা । নিজের দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ে পাকিস্তানের জয় ধ্বনি দিয়ে প্রকাশ্যেই উল্লাস প্রকাশ করছে ভয়ে একেবারে কুঁকরে থাকা মানুষ গুলি! পাড়ায় পাড়ায় পাকিস্তানের নামে টিম দিয়ে পাকিস্তানের জার্সি পরে খেলা হচ্ছে টুর্নামেন্ট!

এবার বলুন তো, কি অপরাধ ছিল দেশভাগের ফলে মুসলিম প্রধান ইসলামিক রাষ্ট্র গুলিতে নৃশংস ইসলামিক সন্ত্রাসের বলি হয়ে মা বোনের ইজ্জত সহ সর্বস্ব খুইয়ে চৌদ্দ পুরুষের ভিটে মাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া হিন্দুদের? কেন হিন্দু, বৌদ্ধ বা শিখদের সেই শত্রু দেশে ফেলে রেখে দেশ ভাগ করা হল, যে দেশ ঘোষিত ভাবেই ইসলামিক রাষ্ট্র, যে দেশে অমুসলিমদের ঠাঁই নেই? ধর্মীয় কারণেই মুসলমানরা তো অন্যদের মতো নয়, কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র মানেই ইসলামিক রাষ্ট্র নয়তো রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম । পৃথিবীর কোন ইসলামিক দেশেই কাফের অর্থাৎ বিধর্মী অমুসলিমরা নিরাপদ নয়, কোথাও বিধর্মীদের ন্যূনতম ধর্মীয় এবং নাগরিক অধিকার নেই। পাকিস্তানকে তো কবেই হিন্দু শূন্য করে দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশেও তা’ই হতে চলেছে । প্রতিনিয়ত এদের অনেক অত্যাচার সহ্য করেই কোনমতে টিঁকে থাকতে হয়, আর নয়তো সব ফেলে চলে আসতে হয়। যাদের আসা সম্ভব নয়, তাদের হতে হয় ইসলামে ধর্মান্তরিত। কিন্তু এদের কি দোষ? এর জন্য দায়ী কে? যদি দেশ ভাগ দায়ী হয়ে থাকে, এর মাশুল কেন কোটি কোটি শুধু হিন্দুরাই দেবে? যদি দেশ ভাগই দায়ী হয়ে থাকে, দেশভাগ তো হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। তাহলে হিন্দু হিসাবে এই ভারত এদের রাষ্ট্র হল না কেন, হবে না কেন? মুসলমানরা তো পেয়ে গেছে তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র এবং স্বাভাবিক ভাবেই বিধর্মী অর্থাৎ হিন্দু বলেই সেই ইসলামিক রাষ্ট্রে এদের ঠাঁই নেই। তাহলে এদের রাষ্ট্র কোনটা, এদের ঠাঁই কোথায়? কেন মুসলমানদের হাতে অত্যাচারিত নিরুপায় হয়ে এদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া হিন্দু শরণার্থী আর নিজেদের রাষ্ট্র পেয়েও বিভিন্ন ধান্দায় এদেশে ঘাঁটি গাড়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের এক করে দেখার কথা বলছে বামপন্থী সহ অন্য সেক্যুলারবাদীরা? কোন যুক্তিতে? কেন শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারী সঙ্গা নির্ধারণে দেশটা যে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল, সেটা মাথায় রাখা হবে না?

  জন্মভূমি ছেড়ে পালিয়ে আসা সেই একমুখী স্রোত আজও বহমান। নৃশংস অবর্ণনীয় সেই ইসলামিক সন্ত্রাসের কারণে হিন্দু বাঙালির একটা বড় অংশ আজ শিকড়হীন কচুরীপানার মতো ভাসমান জাতিকে পরিণত হয়েছে। আমাদের ত্রিপুরার বাঙালিদের নব্বই শতাংশই উদ্বাস্তু। এদের চাপে ভুমিপুত্র জনজাতিরা আজ সংখ্যালঘু। স্বাভাবিক ভাবেই ঘটছে সংঘাত। বাঙালি বিরোধী দাঙ্গার শিকার হয়ে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে আবার, আবার । আসামেও তা’ই। কিন্তু আমাদের তো সবই ছিল। অথচ যাদের অত্যাচারে সব ফেলে চলে আসতে হল অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে, তাদেরই দেখছি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে এদেশে এসে রাজনৈতিক মদতে ঘাঁটি গেড়ে বসতে । এত ভাবে, এতবার একতরফা এই অবর্ণনীয় অত্যাচার সহ্য করেও একতরফা সেক্যুলারিজমের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা হিন্দুদের মরণ ঘুম আর ভাঙলো না। শুধুমাত্র শান্তির ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে, শান্তির ধর্মে বিধর্মীদের প্রতি নির্দেশগুলি জানা না থাকার কারণে হিন্দু বাঙালিদের সামনে হাতছানি দিচ্ছে সেই একই ভবিষ্যত।

অথচ দেশভাগের সময়ই তো সুযোগ ছিল এই হিন্দু মুসলমান সমস্যা চিরতরে মিটিয়ে ফেলার। যেহেতু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ, বাবাসাহেব আম্বেদকরের সুপারিশ অনুযায়ী দেশভাগের সময় যদি সম্পূর্ণ জন বিনিময় করা হত, এই সমস্যার সৃষ্টিই হতো না। তাহলে কি ভবিষ্যতে পুরো ভারতবর্ষেই ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাস্তা খোলা রেখেই হিন্দু সেজে থাকা ইসলামপন্থীরা দেশ ভাগের নাটকটা করেছিল?

আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং পরে বাংলাদেশ – এই প্রাচীন মহান ভারতবর্ষের মুসলিম প্রধান অংশগুলি একাধিক বার ভেঙে ভেঙে আলাদা আলাদা রাষ্ট্রের সৃষ্টি হল, একটিও কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হল না, হল মৌলবাদী রাষ্ট্র । একটি রাষ্ট্রও হল না সবার, একটিতেও তো ধারাবাহিক স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হল না। কিন্তু এই অংশগুলিও তো একদিন এই ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতেরই ছিল। তাহলে কেন এমন? কেন মূল অংশ থেকে ভাঙা অংশগুলির চরিত্র মূল অংশটির মতো নয়? কারণ এই অংশগুলি হিন্দু প্রধান নয় । তাই এতবার মুসলিম প্রধান অংশগুলি আলাদা হওয়ার পরও এই হিন্দু প্রধান মূল অংশটি কিন্তু রয়ে গেল ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয়ে, সবার হয়ে – সংখ্যাগুরু হিন্দুদের মানসিকতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। ভবিষ্যতে যদি এই দেশ আবার ভাঙে, সেটাও হবে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র। হিন্দু প্রধান মূল ভুখন্ড কি ধর্ম নিরপেক্ষতার সব দায় নিয়ে তখনও থেকে যাবে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবেই?

শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার অপরাধে দেশভাগের আগে পরে যে নৃশংস ইসলামিক সন্ত্রাসের বলি হতে হয়েছে হিন্দু বাঙালিদের, চৌদ্দ পুরুষের ভিটে মাটি ছেড়ে আমাদের পূর্ব পুরুষদের এপাড়ে পালিয়ে আসতে হয়েছিল, সেই ইতিহাসও ইসলামের স্বরূপ চেনাতে পারলো না আমাদের । কারণ আমাদের শেখানো হয়েছে হিন্দুদের উপর এই অকথ্য অত্যাচার কিন্তু মুসলমানরা করে নি, সব ছিল ক্ষমতা লোভী রাাজনৈতিক নেতাদের চক্রান্ত, লোভের পাপ। কিন্তু সেই লোভের আগুনে কেন জানি পুড়তে হয় কোটি কোটি শুধু হিন্দুদেরই। চক্রান্তকারীরা কেন জানি শুধু মুুুুসলমানদেরই চক্রান্তের মোহরা বানায়। অথচ সবকালে সবজায়গায় এরাই অত্যাচার চালায়, অন্যরা হয় অত্যাচারিত, বিতাড়িত। দেশভাগের পুরোটাই চক্রান্ত, মুসলমানরা কখনোই দেশভাগ চায় নি, তবুও এরা পেয়ে  গেল সম্পূর্ণ  নিজের জন্য ষোল আনার জায়গায় আঠারো আনা ভূখন্ড । শুধু তা’ই নয়, খুব বোকা আর চক্রান্তকারীদের সহজ শিকার বলে আলাদা সেই ভূখন্ড পেয়েও সেখানে যেতে হলো না মুসলমানদের । হিন্দুদের নিয়ে তো কেউ চক্রান্ত করে না, আর হিন্দুরা খুব চালাকও। তাই হিন্দু দের ভাগে জুটলো লবডঙ্কা ।

আর বামপন্থীদের কথা যদি বলতে হয়, দেশভাগের সময় মুসলিম লীগের মুসলমানদের জন্য আলাদা ইসলামিক পাকিস্তানের দাবিটা সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। সাম্প্রদায়িক মুসলিম লীগের পাশে দাঁড়িয়ে ধর্ম হীন বামপন্থীদের ধর্মীয় রাষ্ট্রের দাবি সমর্থনটাও সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভেঙে শুধু মুসলমানদের জন্য আলাদা ইসলামিক রাষ্ট্রের সৃষ্টির চেষ্টায় অঙ্কের হিসাবেই বাকি অংশটাকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণার চেষ্টাটা যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা কিন্তু ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক ছিলেন। সেই অঙ্কের হিসাবেই এখন যদি হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বলেন, তাহলে কিন্তু আপনি সাম্প্রদায়িক। কারণ প্রথমটাতে ছিল এদের রক্ত সম্পর্কিত তুতুভাই মোল্লাদের স্বার্থ, সর্বোপরি এ দেশের স্বার্থ বিরোধী আর দ্বিতীয়টাতে হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন।

এবার অনেককে বলতে শুনব পুরনো ইতিহাস টেনে লাভ নেই – যা হয়ে গেছে, হয়ে গেছে, সেই নৃশংস ইতিহাস ভুলে গিয়ে সবাই মিলে মিশে থাকাই উচিত। ইতিহাস না হয় ভুলে গেলাম, কিন্তু ভবিষ্যৎ? সেই ইতিহাসের ওরা কি পাল্টে গেছে? ওরা যে একটুও পাল্টায়নি, এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ পাকিস্তান বা বাংলাদেশ বা এমনকি এদেশেরই মুসলিম প্রধান অঞ্চলগুলিতে হিন্দুদের অবস্থা।
নাকি, এদেশের ওরা পার্শ্ববর্তী দেশ বা সারা পৃথিবীর ওদের চেয়ে আলাদা কিছু? এমন ভাবার কারণটা কি? জন সংখ্যার অনুপাত পাল্টে গেলে এই এই দেশটাই পাকিস্তান বাংলাদেশ হতে কোথায় আটকাবে?

এবার আসুন, এদেশটা সবার হওয়ার পেছনে হাস্যকর কিছু মুমিনীয় যুক্তি শুনি । এদের মুখে ভাষা যোগানো বামিস্লামিকরাও অবশ্য মাঝে মাঝে এই ধরনের যুক্তিহীন যুক্তি দেখান –

যুক্তি গুলো হলো, সবার আত্মত্যাগে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাই এদেশ সবার বা এদেশ সবার জন্মভূমি, শুধু হিন্দুদের নয়, তাই এদেশে সবার সমান অধিকার । কিন্তু কথা হল – ব্রিটিশরা কেন শুধু হিন্দু স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ধরে ধরে ফাঁসি দিত, গুলি করে মারত, বাংলার এত এত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকায় বা এত এত শহীদদের তালিকায় একজন মুসলমানও নেই কেন বা পাকিস্তান বাংলাদেশে কেন বিপ্লবীদের (অবিভক্ত ভারতের বর্তমান বাংলাদেশের অংশে প্রচুর বীর বিপ্লবীর জন্ম) জন্মদিন পালিত হয় না কেন বা স্বাধীনতা কার কতটুকু আত্মত্যাগ ছিল, আদৌ ছিল কি না – সে বিতর্কে না ঢুকেও বলা যায় – সবার আত্মত্যাগে কোন ভারত স্বাধীন হয়েছিল? শুধু কি এই বর্তমান ভারতের ভূখণ্ড, নাকি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সহ সবটাই? হিন্দু মুসলমান সবার আত্মত্যাগে স্বাধীনতা প্রাপ্ত সেই একই দেশ ভেঙে সৃষ্টি হওয়া মুসলিম প্রধান অংশগুলি যদি হয় শুধুই মুসলমানদের, হিন্দু প্রধান অংশটি কি করে হয় সবার? অদ্ভুত যুক্তি! তাছাড়া ১৯৪৭ এ যেটা হয়েছিল – সেটা কি ছিল তাহলে? পৈতৃক সম্পত্তি ষোলআনার জায়গায় আঠারো আনা বুঝে নেবার পরও বুঝি আরও কোন দাাবী থাকতে পারে?

এবার থাকল, এই দেশ সবার জন্মভূমি, তাই এদেশ সবার! তা সর্বধর্মের লোক কি বেছে বেছে শুধু এই বর্তমান ভারতের অংশটাতেই প্ল্যান করে জন্ম নিয়েছিল, আর বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে শুধু মুসলমানরা? কেন হিন্দু, বৌদ্ধ বা শিখদের শুধুমাত্র অমুসলিম হওয়ার অপরাধে সেই জন্মভূমি ছেড়ে চলে আসতে হল? কেন ঐ দেশগুলি সবার হল না, হচ্ছে না? কেন কোন মুসলিম প্রধান দেশই সবার হতে পারে না? কেন, কেন, কেন… ?