অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতার সময় পানি পান করার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বসে বসে বক্তৃতা দিয়েছি। আপনারা দেখেছেন রোজার মাসে আমি সব নিয়ম-কানুন (রোজা) পালন করিনি, আমি এজন্য ক্ষমা চাচ্ছি। এটা একান্তই বয়সের কারণে। আপনারা বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এটাই প্রার্থনা করছি’।
রোজার দিনে খাবার খাওয়া যাবে না এটা রোজার নিয়ম। এটা ইসলামের একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। এটি কেমন করে বাংলাদেশের নিয়ম হয়ে যায়? এটা বাংলাদেশের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হয়ে যাবে কেন? রাষ্ট্র আর ধর্মকে কেমন করে মিশিয়ে ফেলে কেমন করে একটি ধর্মকে ক্রীড়নকে পরিণত করা যায় সেটা মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গেলে দেখিয়ে দেয়। রোজার দিনে আমাদের দেশে খাবার দোকানগুলোতে ঢুকে দেখুন, ধুমসে খাচ্ছে সবাই। বেশির ভাগ মানুষই রোজা রাখে না। শ্রমজীবী মানুষদের পথের ধারের চা স্টলগুলোকে কাপড়ে ঢেকে রোজার সন্মান রক্ষা করা হয়। এটা তো আমাদের সংস্কৃতি নয়। রোজাদার দিনের বেলা কিছু খাবে না। তার জন্য খাবার দোকান চোরের মত কেন পর্দা করে থাকবে? কেন একজন অর্থমন্ত্রী রোজার দিনে পানি পান করে ক্ষমা চাইবেন? এটি কোন ধরণের অপরাধ? এই একটি মাস দিনের বেলা খাবার খাওয়া নিয়ে যে চরম প্রতিক্রিয়াশীলতা মুসলমানরা দেখায় তার ফল বৃহত্তর প্রেক্ষিতে তাদের জন্য চরম দুর্দিন ডেকে আনবে। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ বলেছেন, অস্ট্রিয়াতে কোন সমান্তরাল সমাজ করতে দেয়া হবে না। দক্ষিণপন্থি এই সরকার কি অমূলক কোন ব্যবস্থা নিয়েছে? তারা কি অযৌক্তিক কোন অভিযোগ তুলেছে? কারা ‘ইসলামী ব্যাংক’ বানায়? কারা ‘হালাল শপ’ খুলে? কারা ‘ইসলামী বিদ্যালয়’ চালায়? ইসলামে ‘হালাল খাবার’ অমুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ অমার্জিত একটি বর্হিপ্রকাশ। নিষিদ্ধ খাবার সব ধর্মেই আছে। যেমন হিন্দুদের গরুর মাংস নিয়ে নাকে কাপড় চাপা একটি বিদ্বেষপূর্ণ অমার্জিত অবস্থান। এরকম ঘৃণার ট্যাবুকে যখন প্রতিষ্ঠান করে ‘হালাল শপ’ নাম দেয়া হয় সেটা একটি সমাজে পরিকল্পিত বিদ্বেষ। কাজেই ইউরোপের লিবারাল সরকার ও বামাতী বুদ্ধিজীবীরা এই সমান্তরাল সমাজ তৈরিতে দীর্ঘকাল তাদের সংখ্যালঘু তোষণের ভ্রান্তনীতি থেকে যে বিদ্বেষপূর্ণ সমাজ তৈরি করেছে ডানপন্থি দলগুলো সেই বিপদগামী সমাজ থেকে রাষ্ট্রকে ফেরার ডাক দেয়াতে জনগণ ডানপন্থিদের দিকে ঝুঁকে গেছে। অস্ট্রিয়া ঘোষণা দিয়েছে, ‘অস্ট্রিয়ায় কোন ‘সমান্তরাল সমাজ’, রাজনৈতিক ইসলাম এবং উগ্রপন্থায় দীক্ষিত হবার প্রবণতার জায়গা নেই’।
ইসলাম গ্রহণে ইসলাম ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই কিন্তু ‘ইসলাম কায়েমে’ বল প্রয়োগ করা ইসলামে ফরজ। রোজার দিনে খাবার খেতে বাধা দেয়া ইসলাম কায়েমের অংশ। মুসলমানদের যখন ক্ষমতা হবে তখন তারা সমাজে ইসলামী বিধানকে সবাইকে মানতে বাধ্য করবে। অমুসলিমদেরও ইসলামের বিধানগুলোকে সন্মান দেখাতে হবে। তারা দিনের বেলা খেতে পারবে না। তাদের নারীদেরও পর্দা করতে হবে। বাংলাদেশের কোন আইন নেই রমজান মাসে দিনের বেলা খাওয়া যাবে না। কিন্তু এদেশে ইসলাম কায়েম ঘটেছে মডারেট মুসলমানদের হাতেই। তারাই বাংলাদেশে সমান্তরাল ইসলামী সমাজ তৈরি করেছে। সেই সমাজকে বাকী অবিশ্বাসী, অমুসলিম নাগরিকদের বাধ্য করেছে মান্যতা স্বীকার করতে। রাজনৈতিক এই ইসলাম কায়েম এখনি উঠে যাক, দেখবেন এই রোজার মাসেই মানুষ প্রকাশ্যে খাচ্ছেদাচ্ছে, পান করছে…।