বিস্ময় কেটে যাবে শুধু পাত্র আর পাত্রীর ধর্ম পরিচয় টুকু বদলে নিলেই।

একটা গল্প বলি। এক হিন্দু মেয়ে এক মুসলিম ছেলের সাথে প্রেমের বিয়ে করে পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে। ছেলেটি অন্য রাজ্যে থাকে. মেয়েটির বাবা দাদা গিয়ে তাকে জোর করে বাড়ি নিয়ে আসে। মেয়েটি আবার পালিয়ে চলে যায় বরের কাছে। এবার বাপ দাদা একটু অন্য কায়দায় স্নেহের ভাব দেখিয়ে মেয়েকে ক’দিনের জন্য ফেরত আনে স্বামীর অনুমতি নিয়ে। ভাবছেন. মিটে গেল বোধ হয়!
         আজ্ঞে না। বাবা ও দাদা এবার দেশের বাড়ি যাওয়ার নাম করে মেয়েটিকে গাড়িতে তোলে এবং মাঝ রাস্তায় বাবা নিজ হাতে গাড়ির মধ্যেই মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করে ও বড়ো পাথর দিয়ে মাথাটা থেঁতলে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে। ছেলে বাবাকে সহায়তা করার পর তীব্র গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফিরে আসে কলকাতায়. তাদের বাড়িতে।
           এতটা শোনার পর নিশ্চয়ই মোদীর রাজত্বে মুসলিমদের উপর কি অত্যাচার হচ্ছে বলে চিৎকার করে উঠতে ইচ্ছে করছে. আশা করছেন মিডিয়ার বিস্ফোরণ. বুদ্ধিজীবীদের কলকাতা ও দিল্লিতে বিশাল মোমবাতি মিছিল। কোথাও রাহুল-অখিলেশ.কোথাও ইয়ে চুরি-বিমান.কোথাও বা মমতা – পার্থ থাকবে সামনের সারিতে!!
         কিন্তু কিছুই ঘটছে না. At least ঘন্টাখানেক বঙ্গে কুমনও নয়! অবাক হলেন তো!!
       বিস্ময় কেটে যাবে শুধু পাত্র আর পাত্রীর ধর্ম পরিচয় টুকু বদলে নিলেই। মেয়েটি মুসলিম আর ছেলেটি হিন্দু যে বন্ধু!! খবরটা এই বাংলার. সর্বত্র প্রচারিত। কিন্তু কোনও হৈচৈ নেই। থাকবেও না!! আমরা যে ছিঃকুলার. ভাইসব !!
         এবার পাত্রী ও খুনীদের নাম ও ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে শেষ করি। হতভাগিনী মেয়েটির নাম জাহানা। দেশের বাড়ি বিহারের মুজঃফরপুরের ইলাদাদ গ্রাম। বাবা মহঃ মুস্তাক ওরফে মুস্তাফা এবং দাদা মহঃ জাহিদ। দুজনেরই বাস পার্ক সার্কাসে। ৩১ শে আগস্ট বর্ধমানের দিকে যাবার পথে খুনটি করা হয় জামালপুরে। দেহ ফেলে দেওয়া হয় নবগ্রামে। পরদিন জাতীয় সড়কের ধারে ঐ ক্ষতবিক্ষত দেহ পেয়ে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
        কিন্তু ডোমেরা মেয়েটির শরীরের বিশেষ অংশে দুটি ফোন নম্বর পেয়ে কিছু সংকেত মনে করে পুলিশকে জানায়। একটি নম্বর মুম্বইয়ের. মেয়েটির স্বামীর। কান্নায় ভেঙে পড়া ছেলেটির সাথে যোগাযোগ হতেই জট খুলে যায় সহজেই। পুলিশ বাবা ও দাদাকে জেরা করার পর  সব স্বীকার করতে বাধ্য হয় তারা। তবে বুক চিতিয়েই। বলে বেশ করেছি. ভিন ধর্মে বিয়ে করেছে. তাই খুন করেছি। ওর বেঁচে থাকার অধিকার ছিল না!! ধর্মজন্তুটির চোখে তখনও ধিকি ধিকি আগুন!!
          হৈচৈ. মোমবাতি মিছিল. ঘন্টাখানেক বঙ্গে কুমন.বুদ্ধিজীবীদের প্রদর্শন!! হা হা হা হা হা!!
আমরা না ছিঃকুলারিজমের শ্রেষ্ঠ ধ্বজাবাহী!! আমাকে বামপন্থী থেকে একেবারে সরাসরি চরম হিন্দু সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করে ফেলুন!!