টিপুর মধ্যে একটাই প্রেম ছিলো, আর তা হলো ইসলাম প্রেম। লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে রক্ষিত চিঠিগুলোর সাথে টিপুর নিজের হাতে লেখা দুটি আত্মজীবনী, “সুলতান-ই-তাওয়ারিখ” ও “তারিখ-ই-খুদাদাদি” রক্ষিত আছে। এই বইগুলোতে টিপু নিজেই উল্লেখ করেছে কিভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে হিন্দুদের সে মুসলমান বানিয়েছে। আর যারা মুসলমান হতে চাইতো না, টিপু তাদের কাউকে কাউকে ধরে এনে, অবসর সময়ের বিনোদন হিসেবে, তাদের চার হাত পায়ের সঙ্গে দড়ি বেঁধে, সেই দড়িগুলো চারটি হাতির পায়ের সাথে বেঁধে দিয়ে হাতিগুলোকে চারদিকে ছুটিয়ে দিয়ে তাদের দেহকে ছিন্ন ভিন্ন করে, তাদেরকে হত্যা করতো, এভাবে কোনো কোনো অবাধ্য হিন্দু কাফেরকে টিপু শাস্তি দিতো। এটি ছিলো নাকি টিপুর প্রিয় খেলা ও অবসর বিনোদনের একটি উপায়। টিপুর মুসলিম জীবনীকার, মহিকুল হাসানও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, “ওই দুটি গ্রন্থে (সুলতান-ই-তাওয়ারিখ ও তারিখ-ই-খুদাদাদি) প্রাপ্ত তথ্য থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, ধর্মের ব্যাপারে টিপু ছিলো একটি বদ্ধ উন্মাদ। তার একটাই কাজ ছিলো, তা হলো হিন্দুদের প্রতি অকথ্য অত্যাচার করা এবং অত্যাচার করে তাদের মুসলমান করা। “টিপু দক্ষিণ ভারতে কমপক্ষে ৮০০ হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছিলো। এই মন্দির ভাঙতে টিপুর যে কি উৎসাহ, তা বোঝা যায় একটি ঘটনায় – দক্ষিণ ভারতের এক রাজা, নাম চিরাক্কাল, টিপুকে মন্দির না ভাঙার জন্য অনুরোধ করে বলেছিলো, তার অনুরোধ রাখলে তিনি টিপুকে ৪ লক্ষ টাকা দেবেন। জবাবে টিপু লিখেছিলো, পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ যদি কেউ আমার পায়ের কাছে এনে দেয়, তবুও আমাকে কেউ মন্দির ভাঙা থেকে নিরস্ত করতে পারবে না। “টিপু সম্পর্কে কয়েক জন ইতিহাসবিদ কী বলেছেন, এবার সেটা দেখা যাক : স্যার হায়াবাদানা রাও তাঁর “হিস্ট্রি অব মহীশূর”- এ লিখেছেন, “১৭৯০ সালের দীপাবলী অর্থাৎ কালীপূজোর সময় এক রাতে টিপু ৭০০ জন হিন্দুকে হত্যা করে। “টিপু সুলতানের জীবনী লেখক, এম.এফ.কে.এফ.জি এর মতে, “ত্রিবাঙ্কুরের যুদ্ধে টিপু ১০ হাজার হিন্দু ও খ্রিষ্টানকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর ৭ হাজার হিন্দুকে বন্দী করে এবং সেরিনাগাপত্তমে নিয়ে গিয়ে পুরুষদের খতনা করিয়ে এবং নারীদের ধর্ষণ ও পরে সবাইকে কাঁচা গরুর মাংস খাইয়ে মুসলমান বানায়। “টিপুর সমসাময়িক মুসলিম ইতিহাস লেখক, কিরমানি তার “নিশান-ই-হায়দারী” গ্রন্থে লিখেছেন, “টিপু সুলতান তাঁর জীবদ্দশায় কমপক্ষে ৭০ হাজার বিধর্মীকে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে বাধ্য করায়। “টিপু যে গণহারে ধর্মান্তর করছে, তার প্র্যাকটিক্যাল প্রমান হলো, টিপু ও তার বাপ হায়দারের আগে মহীশূর তথা আজকের কর্নাটকে কোনো মুসলমান শাসক ছিলো না। তাই সেই সময় দক্ষিণ ভারতে কোনো মুসলমানও ছিলো না। বর্তমানে কেরালা ও কর্নাটকের যারা মুসলমান বলে নিজেদের পরিচয় দেয়, তারা সবাই টিপুর দ্বারা জোর পূর্বক ধর্মান্তরিত। গরুর মাংস খেয়ে, চার বউয়ের সাধ এক সাথে নিতে পেরে আর বেহেশতে গিয়ে ৭২ হুরের আশায় এরা এখনও ইসলামে আছে এবং ভুলে গেছে যে, তাদের পূর্বপুরুষদেরকে জোর করে একসময় মুসলমান বানানো হয়েছিলো। সুতরাং যারা টিপুকে সেক্যুলার শাসক প্রমাণ করার জন্য মন্তব্য করবেন, তারা আগে, উপরে যেসব বইয়ের রেফারেন্স দিলাম, সেগুলো পড়ার পর মন্তব্য করবেন। না হলে হিন্দু জাতিকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার জন্য আপনাদের কপালে যে শাস্তি আছে, সেটা নিশ্চিত; দুদিন আগে বা, পরে সেই শাস্তি পান, সেটা অন্য ব্যাপার। টিপুর হিন্দু বিরোধী মানসিকতা ও হিন্দুদের প্রতি টিপুর নৃশংসতা প্রমানের জন্য উপরে যেসব চিঠি, টিপুর আত্মজীবনীর এবং বিভিন্ন ইতিহাসবিদের, টিপু সম্পর্কিত মন্তব্যের কথা উল্লেখ করলাম – কারো কারো কাছে এর সবগুলোই বোগাস মনে হতে পারে। কারণ, সাধারণ মানুষের পক্ষে লন্ডনে গিয়ে যেমন ঐসব চিঠি বা, বই পুস্তক দেখে সত্য নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, তেমনি অবিশ্বাসী মনের পক্ষে ইতিহাসবিদদের মতের প্রতিও আস্থা রাখা সম্ভব নয়, যেহেতু তাদের একমাত্র আস্থা কোরান-হাদিসের উপর, আর যাদের কোরান-হাদিসের প্রতি আস্থা, তাদের পৃথিবীর আর কোনো গ্রন্থের প্রতি আস্থা বা বিশ্বাস যে থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। এই সব ব্যক্তির জন্য এবার আমার ব্রহ্মাস্ত্র।”সোর্ড অব টিপু সুলতান” নামে ফার্সি ভাষায় লিখিত টিপুর একটি শিলালিপি পাওয়া গেছে। এই শিলালিপির নাম অনুসারেই সেক্যুলার গিদওয়ানি তার উপন্যাস নয়, অপন্যাসের নাম রাখে , “দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান”। এরকম শিলালিপি শুধু একটা ই নয়, বেশ কয়েকটি পাওয়া গেছে। এগুলো কোথায় রাখা আছে, তা জানার জন্য সি.এইচ রাও লিখিত “হিস্টোরি অব মাইসোর” গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডটি পড়তে হবে। আমার কথায় যাদের বিশ্বাস না হবে, তাদেরকে তো এই কষ্টটি স্বীকার করতেই হবে।
-by Rezaul Manik.
Courtesy Dev Ashish Banerjee