ভ্যালেন্টাইনের ভালবাসা কিন্তু মুসলমান সমাজের ভিতরে বেশ কিছুটা প্রবেশ করেছে, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে তা ইসলামিক বিধর্মী ঘৃণাকে অনেকাংশে দূর করেছে।
বর্তমান কালে আমরা যে বিভিন্ন বিদেশি মানবতাবাদী সংস্কৃতি দেখি, তার পুরোটাই কিন্তু দিবস ভিত্তিক। যেমন-
১) ভ্যালেন্টাইন ডে
২) পহেলা বৈশাখ
৩) হ্যালোইন ডে
৪) সাকরাইন ডে
৫) থার্টি ফাস্ট নাইট
৬) কিস ডে
৭) প্রপোজ ডে
৮) চকলেট ডে
৯) হ্যাগ ডে
১০) টেডি ডে
প্রতিনিয়ত এসব দিবসের সংখ্যা বাড়তেই আছে। মুসলমানরা যতই বিজাতীয় ধর্ম বৈধ-অবৈধ ফতওয়া দিচ্ছেন, লাভ কিন্তু পুরোপুরি হচ্ছে না, একটা শ্রেণী কিন্তু সেটা গ্রহণ করছে এবং প্রতি বছর তা বিস্তৃতি লাভ করছে।
তারমানে বোঝা যাচ্ছে, শুধু বিরোধীতা করেই একটা সুস্থ সংস্কৃতিকে আটকে রাখা যায় না, বিকল্পও তৈরী করতে হয়। এর কারণ মানুষ কখনও সংস্কৃতি থেকে খালি নয়, তাকে যদি ইসলামিক সংস্কৃতির প্রবাহ না দেয়া হয়, তবে সে সুস্থ সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরবেই, এটাই তার স্বভাবজার বৈশিষ্ট্য।
এসব ঘৃণাহীণ ভালবাসার, মানবতার সংস্কৃতি আটকানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যেও বিভিন্ন দিবস চালু করা এবং ঐ দিন, ঐ ইতিহাস নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা করা। একটি খাবার যখন চামচ দিয়ে নাড়া হয়, তখন তার সুঘ্রাণ চর্তুদিকে ছড়ায়। ঠিক তেমনি মুসলমানদের দিবসগুলো নিয়ে যখন আলোচনা সমালোচনা হবে, স্বাভাবিকভাবে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যগুলোও চর্তুদিকে ছড়িয়ে যাবে।
এখন কথা হলো, মুসলমানরা কোন দিবস উদযাপন করবে ?
আসলে নতুন করে কিছু নয়, পুরাতন ইতিহাসগুলো টেনে নিয়ে আসা। যেমন ধরুন, মুসলমানদের শেষ নবী যে দিন মক্কা শহর বিজয় করলেন, সে তারিখটা চিহ্নিত করুণ এবং ঐ দিনটি কত জন কুরাইশ এবং ইহুদিদের জবাই করা হয়েছিল তার ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করুন। কিংবা নবী যেদিন বেবি আয়শাকে নিকার নামে ধর্ষণ করেছিলেন তা নিয়ে আলোচনা করুন। কিংবা নবী কিভাবে খয়বরে নিরীহ বানু কোরাইজা গোত্রের ৯০০ ইহুদি পুরুষকে আড়াই পোঁচে জবাই করে কিনানের স্ত্রী সোফিয়াকে ধর্ষণ করেন। কিংবা নবী কিভাবে পুত্রবধূ জয়নবকে নেংটো দেখে তারা প্রেমে পড়েন এবং কিভাবে তাকে নিকা করেন। নবী কিভাবে বানু নাদের গোত্রের খেজুরের ফলন্ত বাগান পুড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশ ছাড়া করেন। কিংবা নবী কিভাবে মারিয়া কিবেতিয়াকে দাসী হিসাবে লাভ করেন। কিভাবে নবী রাতের আঁধারে ডাকাতি করতে যেতেন। আর তাকে স্বর্গীয় আল্লার দান বলে চালাতেন। কিভাবে মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমর যেদিন খিলাফত হাতে নিলেন এবং ওমর প্যাক্ট নামে সিরিয়ান খ্রিষ্টানদের অধিকার খর্ব করলেন। কবে মুসলমানরা আলেকজান্দ্রিয়ার লাইব্রেরি পুড়িয়ে ছিল। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। অথবা কবে মুসনলমানরা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি পুড়িয়েছিল তা নিয়ে আলোচনা করুন। মুসলমানরা কিভাবে আল তাকিয়া বা, ইসলামিক শঠতা প্রয়োগ করে করে হিন্দু রাজাদের কচু কাটা করেছিল তা নিয়ে আলোচনা করুন। মুসলমানরা কিভাবে হিন্দু নারীদের হারেমে নিয়ে নির্যাতন করেছে হাজার বছর ধরে তার কথা মুসলমানদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। সম্প্রতিকালের হিন্দুদের দেশে মুসলমানদের লাভ জিহাদের সাফল্য নিয়ে আলোচনা করুন।
হিসেব করলে দেখা যাবে বর্তমানে অমুসলিমরা ৩৬৫ দিনে সহস্রাধিক দিবস ছড়িয়ে দিয়েছে, যেন তারা দিবস নামক সাংস্কৃতিক আগ্রাসন দিয়ে সব দখল করতে পারে। হ্যাঁ, মুসলমানদের অনেক বিধর্মী হত্যার সংস্কৃতি আছে, কিন্তু কোন উপলক্ষ টার্গেট না করলে তা সূচনা লাভ করে না।
আমি জানি, মুসলমানদের মধ্যে নানান মতভেদ আছে। কিন্তু সেগুলো বসে থাকলেও চলবে না। কারণ অমুসলিমরা এখন দিবস নামক সাংস্কৃতিক আগ্রাসণ ব্যাপক চালু করেছে, সেটা সামাল দেয়ার জন্য মুসলমানদের কোরবানি দেওয়া ও গরু খাওয়ার সংষ্কৃতি, বিধর্মী খুন করার সংস্কৃতি, মেয়েদের মুখে এসিড মারার সংস্কৃতি ভিত্তিক বিভিন্ন দিবস ছড়িয়ে দেয়ার বিকল্প দেখছি না।