পৃথিবীতে প্রথম জিহাদ শুরু হয়েছিল মোহাম্মদের হাত ধরে।

জনসংখ্যাই যেখানে অস্ত্র !
©Mufti Masud
পৃথিবীতে প্রথম জিহাদ শুরু হয়েছিল মোহাম্মদের হাত ধরে, বা বলা যায় মোহাম্মদ পৃথিবীতে প্রথম জিহাদের সূচনা করে। এরপর জিহাদ কখনো বন্ধ হয়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জিহাদ পাদপ্রদীপের অন্ধকারে চলে গিয়েছিল কিছুকালের জন্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে জিহাদ করতে গিয়ে বারবার মার খেয়ে পর্যুদস্ত হওয়া জিহাদীরা হিটলারের সাথে আঁতাত করেছিল তাদের ধর্মীয় পবিত্র দায়িত্ব ‘ইহুদি নিধন’ করতে, যার নেতৃত্ব দানকারীদের অন্যতম ছিলেন মুফতি আমিন আল হুসেইনী – জেরুজালেমের গ্রান্ড মুফতি।

দ্বিতীয়-বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের হাত ধরে ইসলামী অনুভূতি তথা জিহাদী অনুভূতি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ইসলামী সম্মেলন, বিভিন্ন ইসলামী অর্গানাইজেশন ইত্যাদির মাধ্যমে জিহাদ পুনরায় ডানা মেলতে শুরু করল। কিন্তু দুনিয়াজুড়ে জিহাদ সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারল সৌদি আরবের নাগরিক ওসামা বিন লাদেনের হাত ধরে। কেন বলুন তো? কেন বিন লাদেনের জিহাদের আহবান সারা বিশ্বে দাবানল ছড়িয়ে দিল? কেন বিন লাদেনের জিহাদের আহবানে বিশ্বের লাখো কোটি মুসলিম তরুণেরা অনুপ্রাণিত হলো? কারণ বিন লাদেন শুধু জিহাদীই না, সে একজন সন্ন্যাসীও বটে। মোহাম্মদ বলেছিল, ‘আমার উম্মতের সন্ন্যাসবাদ হচ্ছে জিহাদ।’  বিন লাদেন একজন প্রকৃত ইসলামিক সন্ন্যাসী। বিন লাদেন সেই সন্ন্যাসী যে তাঁর বিপুল পরিমাণ সম্পদ ব্যয় করেছে আল্লাহর রাস্তায় পবিত্র যুদ্ধ তথা জিহাদের জন্য। বিন লাদেন ইসলামের সেই শিক্ষা গ্রহণ করেছে যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল স্বয়ং মোহাম্মদ। বিন লাদেন আরবের ভোগ-বিলাসে ডুবে থাকা শাসকদের মতো না। সে ভোগবিলাস পরিত্যাগ করে ইসলামের সন্ন্যাসবাদ তথা জিহাদের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছিল। বিন লাদেনের জিহাদের আহবান সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার আরো একটি কারণ হচ্ছে, সে সৌদি আরবের নাগরিক। সৌদি আরবের নাগরিক মানেই হচ্ছে নবীর দেশের নাগরিক। নবীর দেশের যেকোনো কিছুর প্রতি একজন বিশ্বাসী মুসলিমের অনুভূতি কেমন হতে পারে তা আমরা সবাই জানি। আজকের সৌদি আরবকে সারা বিশ্ব কেন এত তোয়াজ করে? সৌদি আরব কি সামরিক দিক দিয়ে খুবই শক্তিশালী? আমি বলি, হ্যাঁ, অবশ্যই। সৌদি আরবের কাছে আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের মতো উন্নতমানের অস্ত্র নেই, তবে বিপুল সংখ্যক সামরিক জনবল আছে।

আপনি জাস্ট কল্পনা করুন – সৌদি সরকারের নির্দেশে মক্কার ইমাম যদি কখনো ঘোষণা দেয়, ইসলাম এখন বিপন্ন, এই মুহূর্তে কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়া আমাদের সবার জন্য ফরজ, তাহলে কি হতে পারে? এমন ঘোষণা শোনার পর আমেরিকা হোক কিংবা ফ্রান্স, ভারত হোক কিংবা রাশিয়া, ফিলিপাইন হোক অথবা আর্জেন্টিনা যেখানে যে মুসলিম আছে তাঁরা কি স্থানীয় কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হাতের কাছে যা কিছু পায় তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে না?
আমেরিকার টোটাল সৈন্য সংখ্যা ১১,১২,৭০৩ জন। কিন্তু সৌদি আরবের সৈন্য সংখ্যা প্রায়
১৬০ কোটি। হয়তো সৌদিআরবের ১৬০ কোটি সৈন্য মিলেও আমেরিকার ১১,১২,৭০৩ জন সৈন্যের সাথে যুদ্ধে টিকতে পারবে না; কিন্তু এটা তো সত্য যে, ভয়ঙ্কর ম্যাসাকার হবে?
আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ভারত, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড সবার সামরিক শক্তি তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র, কিন্তু সৌদি আরবের সামরিক শক্তি কেবলই জনসংখ্যা।  আপনি জনসংখ্যার অস্ত্রকে অস্বীকার করতে পারেন না। জনসংখ্যার অস্ত্রের শক্তিকেও অস্বীকার করতে পারেন না।
এজন্যই পাকিস্তানের জুনায়েদ হাফিজকে অন্যায়ভাবে রাষ্ট্র কর্তৃক হত্যার চেষ্টার নিন্দা করা হয়, অথচ সৌদি আরবে এরকম ঘটনা নিত্যই ঘটে। কেউ তার নিন্দা করে না। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ অনুভূতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কারণে সরকারের বিপক্ষে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে, বিশ্বনেতারা নিন্দায় সরব হয়, কিন্তু সৌদি আরবের ভয়ঙ্কর ইসলামী আইনের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন তৈরি হয় না! দুনিয়ার যেকোনো দেশে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক মন্তব্য করলে নিন্দার ঝড় ওঠে, কিন্তু সৌদি আরবের সংবিধানে নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য না করলেও নিন্দার ঝড় ওঠে না! নারীর ব্যক্তিস্বাধীনতার কিছুই নেই সেখানে, তবুও কেউ নিন্দা করে না!
১৬০ কোটির সামরিক বাহিনীকে আপনি কি খাটো করে দেখতে পারবেন? এমনকি এই পোস্ট করার কারণে আমার ফেসবুক আইডিটি আবারো কিছুদিনের জন্য ডিজেবল্ড হয়ে যেতে পারে, কারণ সৌদি আরবের বিপুল পরিমাণ জনসামরিক বাহিনীর শক্তিকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও মান্যতা দেয়!