এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের কর্তব্য কি?

বীরভূমের কাংলাপাহাড়ির মত ৮৫ শতাংশ হিন্দুবহুল মালদার বামনগোলা থানার পাউল গ্রামে দুর্গাপূজা বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল গত বছরেই, কিন্তু স্থানীয় হিন্দুদের দৃঢ় প্রত্যয় এবং #হিন্দু_সংহতি-র সমর্থনে গতবার সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি তাই এবার পূজো বন্ধ করতে প্রশাসন অনেক আটঘাট বেঁধে নেমেছে।

এই ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ হিসাবে CrPC 107 ধারা অনুসারে নোটিশ জারি করে হিন্দু-মুসলিম উভয়পক্ষকেই আগামী  ২৮শে জুন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেটের সামনে নিজেদের বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছে। এখানে উভয়পক্ষ কথাটা বেশ মজাদার কারণ জনগণনার হিসাবে বামনগোলাতে মোট ১,৪৩,৯০৬ জনের মধ্যে ১,২৯,৪৬০ জনই হিন্দু আর মাত্র ১২,৭৭১ জন মুসলিম। তবুও প্রশাসনিক নির্দেশে “উভয়পক্ষের” মত নিয়ে তারপর পূজোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। যদিও যে স্থানে পূজা অনুষ্ঠিত হয়, সেই মাঠেরই উল্টোদিকে একটি মাজারও আছে আর সেই মাঠে মহরমের অনুষ্ঠানও পালন করা হয়। প্রশাসনের যাবতীয় নিয়মকানুন হচ্ছে গাজোল, বামোনগোলা, ওল্ড মালদা এবং হবীবপুরের ক্ষেত্রে, কারণ এগুলি এখনও হিন্দুবহুল।(২ নং ছবি)

কিন্তু সেই একই প্রশাসনের ক্ষমতা হয়না এই আইন হরিশচন্দ্রপুর, চাঁচল, রতুয়া, ইংলিশবাজার, সোনাতলা, বাগবাড়ি, মানিকচক, কালিয়াচক, সুজাপুর, নাজিপুর, জালালপুর, চাসপাড়া, বালিয়াডাঙা প্রভৃতি জায়গায় জারি করার। তাই কোর্টের আদেশ অমান্য করে ৩২ বছর পরে গত বছর বাসি কারবালা কালিগ্রামের ভিতর দিয়ে ফেরত আসে আর তার পরিণতি কি হয় সেটা সবাই আজ সবাই জানে। পুলিশও জানে। এমনকি শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বসবাসকারী, কাঁধে তারা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো পুলিশের বড় বড় অফিসাররা পর্যন্ত জেহাদি শক্তির সামনে তাদের দফতরের সীমাবদ্ধতার কথা জানেন, তাই তাদের যাবতীয় জারিজুরি হিন্দুদের কাছে, মুসলিমদের কাছে ঐ কাজ করতে গেলেই পরিণতি কালিয়াচক বা শহীদ মিনার আর শেষমেশ প্রানভয়ে পলায়ন।

তেহট্টে ছাত্রছাত্রীরা তাদের বিদ্যালয়ে সরস্বতীপূজার অধিকার হারাবে, নন্দীগ্রামে বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট পোশাকের বদলে ইসলামিক পোশাক পরার অধিকার দিতে হবে, নামাজ পরার জন্য শুক্রবার অতিরিক্ত ছুটি দিতে হবে, বাবা-মা বদলে আব্বু-আম্মু চালু হবে, আকাশি বদলে আশমানি হয়ে যাবে, যে ব্যক্তির সাথে শিক্ষার কোন সম্পর্ক নেই সরস্বতীপূজার বদলে বিদ্যালয়ে সেই নবী দিবস পালন করতে হবে, আর হ্যাঁ, এই সবই করতে হবে “একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান” গাইতে গাইতে যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা হয়। এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের কর্তব্য কি? লিখেছেন প্রসূন মৈত্র।

Scroll to Top