মাটিলেপা মাইক্রোবাস………..!!!

মাটিলেপা মাইক্রোবাস
____________________________

বাঙলাদেশ, দেখতে পাও, কী ভীষন তলিয়ে যাচ্ছো
তুমি – মৌলবাদের বিশাল হা-করা গর্তে?
হয়ে উঠেছো, ইসলামী খুনেদের  প্রিয় শস্য-ক্ষেত্র?

তোমার সিঁড়িতে সেই কবে লুটিয়েছিলো, তোমার শ্রেষ্ঠ বন্ধু।

সব ব্যর্থ হয়েছে।
একাত্তরের নিহত, ধর্ষিতা, স্বপ্ন, বেদনা, সৃষ্টি,  ধ্বংস –
সবকিছু ছাপিয়ে, তুমি এখন চাপাতি খুনেদের দেশ।

তুমি সানগ্লাস  পড়েছিলে, তোমাকে ভালো দেখায়নি মোটেই।
তোমার সানগ্লাসের আড়ালে ঢাকা পড়েছে –
সবুজ মাঠ,
সুন্দরী নদীরা,
অশেষ আকাশ
এবং ভূতপূর্ব  চিত্রনায়িকা।

তোমার সবচেয়ে বিখ্যাত যোদ্ধাই তোমাকে ধর্ষণ করেছে। বুদ্ধদেবের মায়াবী ‘পুরানা পল্টন’, শামসুর রাহমানের ‘স্মৃতির শহর’কে ভুলে যেয়ে তোমার শহর এখন, বায়তুল মোকাররমের সামনে একপাল নেঁকড়ের চীৎকার।

আরেক নারী-খেকো লম্পট তোমাকে দিয়েছে, কালো বোরকা।
রবীন্দ্রনাথ  আর লালনের গান, ভালো লাগেনি  তোমার।
তুমি হঠাৎ’ই গলফ্ খেলায় মেতে উঠেছিলে । এমনকি তোমার কবিতার লাবন্যকে’ও মলিন করতে চেয়েছে ওর অশ্ব-খুরের মতো পায়ের ধুলো।

তোমার দুই পুরুষতান্ত্রিক নারী-শাষক, বিখ্যাত শঠ
তোমাকে ভালবাসেনি মোটেই।
মিথ্যের বেসাতি ক’রে, নেচে-কুঁদে শিম্পাঞ্জির ধরনে, তোমাকে নতজানু ক’রে রাখার জন্য বাজিয়েছে শয়তানের অর্কেষ্ট্রা কত দীর্ঘকাল।
প্রতিক্রিয়া নয় , প্রতীতি’ই ব্যর্থ।

তোমার রবীন্দ্রনাথকে ওরা ঘৃনা করে, কেননা ওরা উর্ধগামী নয় ।
তোমার জীবনানন্দকে ওরা দূরে সরিয়ে রাখে, কেননা ওরা স্বপ্ন-শূন্য।
ওরা প্রগতি’কে ভয় পায়। কেননা ওরা জানে, যা কিছু প্রগতি –
তা বন্ধু নয় -বিশ্বাসের।
জ্ঞান , চৈতন্য’র শিরা-উপশিরার গভীরে গহন ঢুকে শীত-রাত্রির ঠান্ডা বাতাসের মতো শাঁই-শাঁই চাবকে দিতে পারে, অশরীরি অন্ধকার।

বাঙলাদেশ, তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না কখনো –
নদীর বাঁকে,
ক্ষেতের আলে,
বটের ছায়া’য়,
বিস্তীর্ণ বর্ষা’য়।
তোমার বাঁশবাগানের ওপর, ঝুলে আছে একটুকরো জোছনা –
মাকরশা’র জালের মত, আবেদনহীন।

বাঙলাদেশ, দেখতে পাও,  কী ভীষন তলিয়ে যাচ্ছো তুমি, ধ্বংসের বিশদ চোরাবালিতে?

তোমার মুখ, আমাকে প্রতারনা করে কেন বার-বার?
তোমার মুখ, শেষরাতের স্মৃতি হ’য়ে যায় কেন বার-বার?

তোমার মুখ – একাত্তরের চোদ্দ’ই ডিসেম্বরের ভয়াল, মাটি-লেপা মাইক্রোবাস হ’য়ে  বার বার ফিরে আসে চৈতন্যে ।