জেরুজালেমের দখল পেলে এখান থেকে ইহুদীদের নিশ্চহৃই করে দিবে।

জেরুজালেমকে মুসলমানরা কিবলা হিসেবে পরিত্যাগ করেছিল। তারা বর্তমানে মক্কার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে। জেরুজালেম সেই থেকে ইসলাম ধর্মে গুরুত্ব হারায়। মুসলমানদের কাছে মক্কা-মদিনা হচ্ছে পবিত্রতম স্থান। যদিও ড্যান গিবসনের গবেষণার বলছে, মক্কা নয়, ইসলামের প্রথম কাবাঘর ছিল আসলে পেট্টায়। এটা জর্ডানে অবস্থিত একটি শহর। প্রাচীন ম্যাপ বলছে এটি ছিল সেযুগের ব্যবসা-বাণিজ্যের সংযোগ স্থল। ইসলামের দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের কালে পেট্টার কাবাঘরটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। কাবার কালো পাথরটি নিয়ে মুহাম্মদের একজন সাহাবী মক্কাতে এসে নতুন করে কাবাঘর নির্মাণ করেন। এখন এটাকেই দিক নির্ণয় করে মুসলমানরা নামাজ আদায় করছে।

যাই হোক, জেরুজালেম নিয়ে মুসলমানদের যে দাবী সেটা অনেক দুর্বল। দ্বিতীয়ত ইসলাম ধর্মে জেরুজালেমকে গুরুত্বহীন করেছিল কিবলা পরিবর্তনের মাধ্যমে। অন্যদিকে ইহুদী ধর্মের প্রধান তীর্থক্ষেত্রই এখানে। ইহুদীরা এখনে যে দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা জানায় সেটি ইহুদীদের সর্বপ্রথম স্থাপিত একটি মন্দিরের শেষ অবশিষ্ঠ দেয়াল হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। এখানে এসে ইহুদীরা তাদের প্রধান তীর্থ পালন করে থাকেন। জেরুজালেমে খ্রিস্টানদের কাছে ধর্মীয় দিক দিয়ে যতখানি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামের ততখানিও নেই। জেরুজালেমের এই স্থান থেকে নবী মুহাম্মদ মিরাজের জন্য উড়ান দিয়েছিলেন বলে দাবী করা হয়। এরকম একটি স্থানকে বাদ দিয়ে কিবলা পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় সরানোর কোন যুক্তি নেই। অন্য কোন ধর্ম হলে এটাই হতো তাদের মূল কেন্দ্র। কিন্তু ইসলাম নিজেই জেরুজালেমকে পরিত্যাগ করেছে।

প্রফেট মুহাম্মদ একদিন দাবী করেছিলেন তিনি জেরুজালেম ভ্রমণ করে এসেছেন জিব্রাইলের নির্দেশে বুরাক নামক একটা জন্তুর পিঠে চড়ে। এরকম আধ্যাত্মিক ভ্রমণকে কোন ঐতিহাসিকই ইতিহাস হিসেবে মেনে নিবে না। জেরুজালেমের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক এরকমই কল্পনা গল্প গুজবের উপর নির্ভর।  পৃথিবীর পৌত্তলিক ধর্মগুলো যদি কাবাঘরে তীর্থ করার দাবী জানায় তাদের প্রাচীন ধর্মীয় তীর্থ দাবী করে সেটা যেরকম আজকের যুগে একটা বেসুরো দাবী হবে- মুসলমানদের জেরুজালেম দাবী তার চাইতে বেশি নয়। হযরত উমার এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন কথিত মুহাম্মদের উড়াল দেয়ার স্থানকে স্মরক ধরে। এই মসজিদটি এখন একটি বিষবৃক্ষে রূপ নিয়েছে। ইহুদীদের প্রধান ধর্মকেন্দ্রে মুসলিমদের অযাচিত অধিকার ফলানোতে বার বার ঘটছে সাম্প্রদায়িক হানাহানি। মসজিদুল আকসাতে বোমা অস্ত্র রাখার অভিযোগ অনেক পুরোনো। সম্প্রতি মসজিদের ভেতর থেকে তা উদ্ধারও করা হয়েছিল। তাই নিরাপত্তার খাতিরে মসজিদে প্রবেশ মুখে নিরাপত্তা বেষ্টনি বসিয়েছে ইজরাইল কর্তৃপক্ষ। যেখানে মক্কা নগরিকে মুসলমানরা পৃথিবী সমস্ত অমুসলিমদের জন্য হারাম নিষিদ্ধ করে রেখেছে, সেখানে তারা কোনদিন জেরুজালেমের দখল পেলে এখান থেকে ইহুদীদের নিশ্চহৃই করে দিবে। জেরুজালেম নিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় দাবী নিশ্চয় ইহুদীদের চাইতে বেশি নয়? বিশ্ব সম্প্রদায়কে এটা বিবেচনা করে দেখতে হবে।