দুর্বৃত্ত’ বললেই বিশ্ববাসী এখন এক নামে এদের চেনে।

রাঙামাটির লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়ি-ঘরে নির্বিচারে আগুন দেয়া হয়েছে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে আদিবাসী নারী-পুরুষরা প্রাণ নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। এই ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। ‘দুর্বৃত্ত’ বললেই বিশ্ববাসী এখন এক নামে এদের চেনে। ম্যানচেস্টার থেকে প্যারিস, কাবুল থেকে লাহোর, মুম্বাই থেকে গুলশান সর্বত্রই তাদের পরিচয় ‘দুর্বৃত্ত’! এই দুর্বৃত্তরা নিয়মিত পাহাড়ে অশান্তির আগুন জ্বালে। পাহাড় থেকে তার ভূমিপুত্রদের উচ্ছেদ করে ‘সোনার মদিনা’ গড়াই তাদের লক্ষ্য…।

লংগদুতে শত শত পাহাড়ীর বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলামের মৃত দেহ পাওয়ার পরই পাহাড়ে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্যাটেলার বাঙালীরা সমাবেশ করে আজ শুক্রবার সকালে পাহাড়ীদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগায়। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো করা হয় স্যাটেলারদের। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই এই ঘটনায় কোন পাহাড়ী জড়িত, তাহলে প্রশাসন তাকে না ধরে এতবড় একটি ঘটনা কি করে ঘটতে দিলো? আমাদের অভিজ্ঞতা আছে কি করে নিজেরা ফটোশপ করে ইসলাম ধর্মের নবীর ছবি ব্যঙ্গ করে রামুতে হামলা চালানো হয়েছিল। মালোপাড়া, নাসিরনগরে একইভাবে হিন্দু ছেলেকে ফাঁসিয়ে ফটোশপে ইসলাম ধর্মের অবমানরা করে হামলা চালানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে হামলার খবর থাকার পরও এইসব ঘটনাতে দেখা গেছে প্রশাসন খেলা দেখার মত করে নিরবে দাঁড়িয়েছিল। গোবিন্দগঞ্জে স্বয়ং পুলিশ আদিবাসীদের ঘরে আগুন দিয়েছে। লংগদুতে যে এই ঘটনা ঘটবে সেটা কি প্রশাসন জানত না? এরকম আর্মি বেষ্টিত জায়গায় শত শত বাড়ি-ঘরে আগুন লাগানোর সাহস আসে কোত্থেকে সেটি বুঝতে বেশি বুদ্ধি লাগে না।

এদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান আদিবাসীদের বাড়িঘরে গ্যাং স্টাইলে আগুন দেয়া, নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা, দেশান্তরিত হতে বাধ্য করা কোন অপরাধ নয়। এ কারণেই রামু, মালোপাড়ার ঘটনার আজ পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি। নাসির নগরের ঘটনার মূল হোতারা থেকেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আদীবাসী, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের এদেশ থেকে বিদায় করতে পারলে একশত ভাগ মুসলমানের দেশে কেন শরীয়া শাসনে হবে না- এই প্রশ্ন তুলে খোদ আদালতেই যাওয়া যাবে! রাষ্ট্র যেভাবে নিজে হামলাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে তাতে পরিস্কার সরকার শতভাগ সুন্নী মুসলমানের দেশ বানাতেই বদ্ধপরিকর। কেননা এর আগে আহমদিয়াদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, শিয়াদের উপর সুন্নী জিহাদীদের হামলার ঘটনায় বিচারহীনতা সমীকরণ মেলাতে সমস্যা হয় না।
http://www.chtnews.com/%E0%A6%B2%E0%A6%82%E0%A6%97%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A7%A9-%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A7/