প্রকৃতি সৃষ্ট অন্ধকার কেবলমাত্র আলো দিয়েই দূর করা যায়। প্রকৃতি স্বয়ং সে ব্যাপারে অবগত। প্রতিটি রাত্রির শেষ অধ্যায়ে দিন লেখা থাকে। কিন্তু মানুষের তৈরি করা বড় বড় অন্ধকারকে আলো দিয়ে দূর করা যায় না। আরও বড় কোনো অন্ধকারের প্রয়োজন হয়। হিটলার নামক অন্ধকারটিকে পরাজিত করবার জন্য স্তালিন নামক আর একটি বৃহত্তর অন্ধকার আবশ্যক হয়ে পড়ে। জিহাদী সন্ত্রাসবাদের মত সর্বাত্মক অন্ধকারের ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম প্রযোজ্য। তাকে দমন করার উদ্দেশ্যে দেশে দেশে জাতিবিদ্বেষ, দক্ষিণ পন্থা, নব্য নাজিবাদ, উগ্র হিন্দুত্ব ইত্যাদির জন্ম হয়ে চলেছে, এসবই আসলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঞ্চলিক অন্ধকার। কালক্রমে একত্রিত হয়ে এই ছোট ছোট অন্ধকারই একটি মহা অন্ধকারের জন্ম দেবে। শুরু হবে মহারণ।
ক্ষতবিক্ষত দেওয়ালে কখনও সরাসরি রঙ করা যায় না। তার আগে প্লাস্টার, প্রাইমার ইত্যাদির সঠিক প্রয়োগ একান্ত জরুরী। দেশে দেশে জন্ম নেওয়া উপরিউক্ত অন্ধকারগুলির কোনটি হাতুড়ি, কোনটি প্লাস্টার, কোনটি পুডিং, কোনটি প্রাইমার আবার কোনটি শিরীষ কাগজ। সুদীর্ঘ এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পরই রঙের প্রসঙ্গ আসে। এই রঙটিকেই আমি আলো বলে ডাকি। তবে এটিও প্রশ্নাতীত নয়। পৃথিবী পৃষ্ঠটি কখনও একই সঙ্গে আলোকিত হয়না। একটি ভূখণ্ডে আলোর আবির্ভাব হওয়া মাত্র অপর প্রান্তটি অন্ধকারের স্বাদ পেতে শুরু করে। মনুষ্য সৃষ্ট সভ্যতাটি কি এর ব্যতিক্রম ঘটাতে পারবে?
লেখক, দেবাসিস লাহা