মিশরের গোলকিপার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার মদের বোতল প্রত্যাখান করেছে। তিউনিশিয়ার খেলোয়াররা রোজা রেখে খেলে আর ইফতারের সময় আহত হবার ভান করে খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙ্গে। মুসলমানরা যদি বৃটিনে, রাশিয়া, আমেরিকা, চীন এরকম বৃহৎ দেশগুলোর মালিক হতো তাহলে অমুসলমানদের প্রতিনিয়ত এরা মনে করিয়ে দিতো, এই পৃথিবীটা তাদের নয়! ফিফা, ওলেম্পিক, আইসিসিতে মুসলমান দেশগুলো হর্তাকর্তা হলে এরা রোজার মাসে সব রকম খেলাধুলাই বন্ধ করে দিতো। আজানের সময় ব্রেক, মদ বিয়ারের স্পনন্সরশীপ বাতিলসহ সব রকমের ইসলামী বিশ্বাসকে এরা অমুসলমানদেরও মানতে বাধ্য করত। অনেক মুসলিম দেশে এই রকম প্রতিক্রিয়াশীল চর্চা অব্যাহত আছে। অধিক জন্মহার মুসলমানদের সংখ্যা ইউরোপে শীর্ষে এনে দিবে। হাদিসে অধিক জন্মদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মুসলমানদের। নবী বলেন, ‘সেই মেয়েদের বিয়ে কর যারা প্রেমময়ী এবং উৎপাদনশীল। কারণ আমি তোমাদের দিয়ে সংখ্যায় অন্যদের পরাস্ত করব’ (সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২০৪৫)।
এই অধিক সংখ্যার জোরে হারাম হালালে, কাফের মুমিনে ইউরোপকে বিভক্ত করে তুলবে। এই বিশ্ব মুসলমানদের হাতে চলে গেলে কেমন হবে তা ইরান, সৌদি আরবের মত কট্টর ইসলামী শাসন দেখে অনুমান করতে পারেন। এসব দেশে কোন অমুসলমানের মুসলমানের মত সমঅধিকার মানা হয় না। তারা রাষ্টের শাসক হতে পারে না। বাংলাদেশ ইসলামিক রিপাবলিক না হলেও কোন অমুসলমান রাষ্ট্র প্রধান হতে পারবে না জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ভয়ে। অথচ লন্ডনের মেয়র একজন মুসলমান! আইএস তালেবান হচ্ছে সবচেয়ে পার্ফেক্ট ইসলামী শাসন। সৌদি ইরানকে জাতিসংঘকে মান্য করতে হয়, ব্যবসা বাণিজ্য করতে গিয়ে কাফেরদের সঙ্গে বন্ধুত্বও করতে হয়। তাই তাগুদি ব্যাপারে তাদের আপোষ করতেই হয়। আইএস তালেবান পৃথিবীবাসীকে ১৪০০ বছর আগের একটা চিত্র দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। এটাই হচ্ছে ইসলাম। প্রকৃত ইসলামী শাসন কেমন সেটা সৌদি আরব ইরানকে দেখে ৮০ ভাগ বুঝা যাবে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত দেশগুলো অমুসলমানদের প্রতিদিন একবেলা করে বুঝিয়ে দিয়েছে এই দেশ তোদের না, এটা মুসলমানদের দেশ…।
ইসলাম পৃথিবীতে দাস ব্যবস্থাকে আবার ফিরিয়ে আনবে। যুদ্ধাপরাধ ইসলাম হালাল করেছে। বিষয়টা একটু ঠান্ডা মাথায় একবার ভাবুন। মধ্যযুগের যুদ্ধাবস্থা খুব বর্বর ছিলো। পরাজিতদের দাসদাসী বানিয়ে বিক্রি করে দেয়া ছিলো স্বাভাবিক ঘটনা। পরাজিত নারীদের ধর্ষণ করা ছিলো বিজিতদের ন্যায্য পাওনা। সেযুগ পেরিয়ে এসে মানব সভ্যতা এই কাজগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে অপরাধ হিসেবে চিহিৃত করেছে যার বিচার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অপরাধীদের এখনো ধরে ধরে বিচার করা হয়। বাংলাদেশের মু্ক্তিযুদ্ধে ঘটা যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে। এসব অপরাধ মধ্যযুগে তেমন কোন অপরাধ বলেই ধরা হতো না। সেই মূল্যবোধটাই যখন একটা ধর্ম তাদের অনুশাসনে, তাদের রাষ্ট্রীয় নীতিতে ঐশ্বি নির্দেশ হিসেবে ঢুকানো থাকে সেটা কতখানি বিপদের কথা একবার ভাবুন। ইসলামে গণিমতের মাল হালাল। অথচ এরকম কাজগুলো আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞায় মারাত্মক অপরাধ। মানুষকে বিক্রি করে দেয়া আজকের যুগে সবচেয়ে ঘৃণ্যিত অপরাধ। অথচ ইসলামে এই ব্যবস্থা তাত্ত্বিকভাবে আজো নিষিদ্ধ নয়। যে কোন র্যা ডিক্যাল ইসলামী শাসন চাইলেই এই ব্যবস্থা চালু করলে ধর্মের নৈতিক অনুমোদন তার থাকবে। এরকম অনুমোদন অন্য কোন ধর্মে পাওয়া যাবে না। অন্য ধর্মগুলো ইসলামের মত রাজনীতি করেনি। খুবই ছোট পরিসরে আইএস দাস ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে এনেছিলো। তারা ইয়াজিদি নারীদের যৌনদাসী করেছিলো। তাদের এই কাজগুলো মানবাধিকার বিরোধী হলেও ইসলামী শাস্ত্র মতে সম্পূর্ণ হালাল। তাই ইসলাম অন্যান্য ধর্মের মত ব্যক্তিগত প্রথা ব্রত পালনের ধর্ম নয়। এটি রাজনীতি, দেশ দখলের কথা বলে। অমুসলমান নারীদের যৌনদাসী করতে বলে। তাদের দাস হিসেবে মুসলমানরা বিক্রিও করে দিতে পারে। আগামী পৃথিবীতে তাই ফান্ডামেন্টালিস্ট মুসলমানদের হাত ধরে গণিমত, যৌনদাসী, জিজিয়া করসহ দাস প্রথা আবার ফিরে আসবে। বাকী মুসলমান যারা ঠিক ফান্ডামেন্টালিস্ট নয় তারা অধিক জন্মহার দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে তাদের ধর্মীয় প্রভাব অন্যদের উপর চাপাতে শুরু করবে। পৃথিবী সমস্ত বিষয়ে, আর্ট খেলাধুলা সংস্কৃতি সাহিত্যে ইসলামীকরণ করতে চাইবে। প্রবলভাবে অমুসলমানদের এরা জিন্মি করে তুলবে। প্রতিনিয়ত অমুসলমানদের মনে করিয়ে দিবে, এই পৃথিবীটা মুসলমানদের। তাই সংঘাত অনিবার্য। একদিকে র্যা ডিকেল মুসলিম অপরদিকে হালাল শপের ভোক্তা জিন্স টিশার্ট পরা মুসলিম। এই দুই-ই সভ্যতার সংকট। এই দুই কিসিমের মুসলিমই নতুন করে পৃথিবীকে ভাষা সংস্কৃতি জাতীয়তাবাদের সংকট ঘনিভূত করে তুলবে। আগামী পৃথিবীর জন্য তাই কোন সুসংবাদ দেখছি না।…
অনেকেই ইউরোপে ডানপন্থিদের উত্থানে কিংবা ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থানে হায় হুতাশ প্রকাশ করেন। বাকী ধর্মগুলো সঙ্গে ইসলামের মৌলিক পার্থক্য কি সেটা আগে বুঝার চেষ্টা করে ইসলামী মৌলবাদের বিপদের সঙ্গে বাকীগুলোর পার্থক্য বুঝতে পারবেন। এ বছর ভারতের বহু মন্দিরে মুসলমানদের জন্য ইফতার আয়োজন ও তারাবির নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। এরকম সম্প্রীতির প্রচেষ্টা আসলে পুরোটাই বিফলে যাবে কারণ পৃথিবীতে যতদিন ধর্ম থাকবে ততদিনই সাম্প্রদায়িকতাও থাকবে। তাই ধর্মকে রেখে সম্প্রীতি কোনভাবেই সম্ভব না। তবু এরকম সম্প্রীতির চেষ্টা কি মুসলমানদের পক্ষে করা সম্ভব? আমি ঐ সমস্ত মুসলমানদের কথা বলছি যারা আদতে ধর্ম বিশ্বাসী হলেও সত্যিকারের সম্প্রীতি পছন্দ করেন এবং বিশ্বাস করেন অমুসলমানদের সঙ্গে সম্প্রীতির সম্পর্ক প্রয়োজন। কিন্তু তাদের পক্ষেও কি সম্ভব মসজিদে একটা পুজার আয়োজন করার? নিদেন পক্ষে হিন্দুদের জন্মাষ্টামী কিংবা খ্রিস্টানদের বড়দিনের একটা অনুষ্ঠান মসজিদে আয়োজন করা? কস্মিনকালেও তা সম্ভব হবে না। ইসলামের যত উদার গ্রুপই থাক তাদের মতবাদেও মুশরিকদের মূর্তি বা দেবতার কোন আয়োজন ইসলামে হারাম। তবে মুশরিকদের মন্দিরে নামাজ পড়া যাবে। এরও পিছেনেও একটা চিকন বদ মতলব আছে। মুহাম্মদ দাবী করেছেন তার সেজদার জন্য পৃথিবীর সব স্থানকে মনোনীত করা হয়েছে। আর মুসলমান যেখানে সেজদা দেয় সেটাকে পরবর্তীতে মসজিদ বানানো নবীর সময় থেকেই মুসলিম ট্রেডিশন। জেরুজালেমে এই সেজদার স্থানে মসজিদ বানিয়ে গোটা জেরুজালেমে এক চিরস্থায়ী অশান্তির ক্ষেত্র বানিয়ে রাখা হয়েছে।
যদি আপনি ইসলাম ধর্মকে মন্দ ভেবেও এটাকে পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মতই একটি ধর্ম মনে করেন তাহলেও আপনার পক্ষে ইসলাম ও মুসলিম ভীতির অন্তনিহিত কারণগুলো বুঝা সম্ভব না। ‘ইসলামফোবিয়া’ ‘মুসলিম বিদ্বেষ’ এরকম ঝান্ডুবাম মার্কা কানাগলিতে সমস্যাকে পেছনে রেখে সমাধান হাতড়ে মরবেন। মনে রাখতে হবে ইসলাম একমাত্র ধর্ম যা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে বলে। মুহাম্মদ একমাত্র নবী যিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রে চিঠি পাঠিয়ে তার আনুগত্যতা স্বীকার করতে হুমকি জানাতেন। বুখারী শরীফে উল্লেখ আছে মুহাম্মদ বলছেন, তাকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিজয়ী হবার অনুমতি দেয়া হয়েছে (Sahih Muslim 4:1067)। আপনি আর কোন নবীকে বলতে শুনবেন না তাকে সন্ত্রাস করতে বলা হয়েছে। ইহুদীদের শত শত নবী ছিলো, সেমিটিক ধর্মের ইতিহাসে আর কোন নবী মানুষকে দাস বানায়নি। আর কোন নবী অন্যের সম্পত্তি দখল করে ভোগদখল করাকে বৈধ বলেনি। একমাত্র ইসলামের নবী বলেছেন ‘অন্য নবীদের থেকে আমাকে ছয়টি বিষয়ে বেশী অধিকার দেয়া হয়েছে তা হলো-সুনির্দিষ্ট ও সংক্ষিপ্ত বাক্য ব্যবহার, ভয় সৃষ্টি দ্বারা বিজয়ী হওয়া, গণিমতের মাল বিধিসম্মত করা, দুনিয়াটকে আমার জন্য পরিস্কার, দুনিয়াটাকে প্রার্থনার স্থান করা এবং আমাকে সমস্ত মানব জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে (Sahih Muslim 4:1062)।
ইসলাম তার দর্শন বা আদর্শকে রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম বা যুদ্ধ করতে বলে। কুরআন নির্দেশ দিচ্ছে, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে (9:123)। মজাটা হচ্ছে, ইসলাম কাউকে মুসলমান হতে জোড়জবরদস্তি করতে বলে না কিন্তু অবশ্যই ইসলামী হুকুমত অস্ত্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে আদেশ করে। যেমন কোন হিন্দু খ্রিস্টানকে রোজা রাখতে জোর করা যাবে না কিন্তু তাদেরকে রোজার দিন অবশ্যই প্রকাশ্যে খানাপিনা করতে দিবে না। ইসলাম হিন্দু খ্রিস্টান নারীদের জন্য পর্দা ফরজ করেনি কিন্তু ইসলামী সমাজে নারীদের বেপর্দা হয়ে চলতেও দিবে না। ইসলাম যখন কোন স্থানে ক্ষমতা দখল করবে তখন সেই স্থানে অন্য ধর্মের অনুসারীদেরকেও ইসলামী বিধানকে মান্য করে চলতে হবে। আগামী ২০ বছর পর যদি লন্ডন কিংবা প্যারিসে রমজান মাসে আস্তে আস্তে খাবারের দোকানগুলো কালো কাপড়ে ঢেকে রমজানকে সন্মান প্রদর্শন করা শুরু হয় অবাক হবার কিছু নেই। ইরান সফরে ভারতের সুষমা সরাজকেও হিজাব পরে ইরানের প্রধানমন্ত্রীর সামনে বসতে হয়েছে। তাহলে কি ভারত আমেরিকা ইউরোপ সফরের সময় মুসলিম কোন নারী ভিআইপি মাথা খেকে হিজাব বাধ্যতামূলকভাবে খুলে নেয়া উচিত? এই সংঘাত তো আসন্ন! হিজাবের বিরুদ্ধে, ইসলামের বিরুদ্ধে এরকম কঠর অবস্থান ডেকে আনবে মুসলমানরাই। তাই আগামী বিশ্বযুদ্ধ মানব জাতির বিরুদ্ধে ইসলামের। এটি অপ্রত্যাশিত ছিলো না, বরং এটি অবধারিত ছিলো। যে ধর্মটি মধ্যযুগীয় যুদ্ধ ও রাষ্ট্র নীতি এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বুক ফুলিয়ে ধর্মীয় অধিকারের নামে প্রচারের সুযোগ পায় সে তার ছোবল দিবেই।