প্রতিদিন দেখছি দলে দলে দুর গ্রামের লোকজন ওই মুর্ত্তি দেখতে ভীড় করছে।

ডুমুরিয়া, খুলনা: ধর্ম ও পূজা-পার্বন নিয়ে আমি তেমন আগ্রহী ছিলাম না। তবে আমার সন্তান না হওয়ায় স্ত্রী’র অনুরোধে কয়েক বছর পূর্বে একবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়েই মা’ দুর্গা’র প্রতি আমার ভক্তি বেড়ে যায় এবং বাসাতে মায়ের পূজা-অর্চনা করতে থাকি। পরে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়। এরপরেই আমি জিয়ালতলাস্থ গ্রামের বাড়িতে দুর্গা পূজার আয়োজন করেছিলাম। সেই থেকে প্রায় রাতে আমি মায়ের স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্নে মা আমাকে পুজো করতে ও বাড়িতে মন্দির করতে বলতেন। অবশেষে স্বপ্নে পাওয়া কথা মত বাড়ির পাশে নদীর ঘাটে থেকে মা’কে পেয়েছি। এমনি ভাবে কথা-গুলো বলছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার জিয়ালতলা গ্রামের অঞ্জন কুমার সরকার (বিকাশ)। পেশায় তিনি একজন উচ্ছপদস্থ কর্মকর্তা। হেরিটেজ গ্রুফের সেন্ট্রাল একাউন্ট ম্যানেজার এবং ঢাকার শ্যামলীতে বসবাস করেন। তিনি গত ২৫ জুন রোববার ছুটিতে বাড়ি বেড়াতে আসেন। ওই রাতেই তিনি আবারও স্বপ্নে দুর্গা মা’কে দেখতে পান। মা’ তাকে নির্দেশ দেন- তোর বাড়ি সংলগ্ন নদীর ঘাটে জলের ভিতরে আমি রয়েছি। কাল সকালেই তুই তোর কালী দাদা’কে সাথে নিয়ে আমাকে খুঁজে নিস। পরদিন সোমবার বেলা ১১টায় স্বপ্নে পাওয়া আদেশ মতে তিনি নদীর ঘাটে নেমে তল্লাশী করে পেয়ে যান সোনালী রং-র দুর্গা মায়ের মুর্ত্তি।

এ খবর প্রচারের পর আশপাশের গ্রাম থেকে শত শত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তার বাড়িতে ভীড় জমাতে শুরু করে। তবে মুর্ত্তিটি পিতলের বলে জানান তিনি। তার মেঝ-ভাই শিক্ষক অমূল্য কুমার সরকার বলেন, ভাইডি বিকাশ ছোটবেলা থেকেই একটু অন্য রকম। ধর্মীয় রীতি-নীতি ও পূজা-পার্বনের ওপর ওর তেমন আগ্রহ ছিল না। ওর মেয়ের জন্ম গ্রহনের পর দেখি ধর্মের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ। ওই বছরেই বাড়িতে দুর্গা মায়ের পূজার আয়োজন করেছিল সে। তাছাড়া স্বপ্নে মায়ের সাথে দর্শেনের কথা প্রায়ই বলতো। এখন দেখছি এই অলৌকিক কান্ড। প্রতিদিন লোকজন আসছে দেখছে-শুনছে চলে যাচ্ছে। আর আমরা সকাল সন্ধ্যায় মায়ের পূজা করছি। কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা ও পল্লীশ্রী কলেজের প্রভাষক বিকাশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, স্বপ্নে দুর্গা মুর্ত্তি পাওয়ার খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। শুনলাম, মুর্ত্তিটিও দেখলাম। সবকিছু যেন কেমন মনে হচ্ছে। তারপর ধর্মের ব্যাপার ! এ সব ঘটনায় সন্দেহ বা মন্তব্য করতে চাই না। সাধনা যোগে বা অলৌকিক ভাবে এমন অনেক ঘটনা ঘটতেই পারে। জিয়ালতলা মহামায়া আশ্রমাধ্যক্ষ শ্রী নারায়ণ চন্দ্র গোস্বামী বলেন, যুগ যুগ ধরে জগতের মানুষেরা সাধনা ও ভক্তি যোগের ফলে ঈশ্বর ও দেবতার সান্নিধ্য লাভ করে থাকেন। আর ভগবানও মানুষের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে তার ভক্ত’কে কৃপা ভিক্ষা দেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন, ঘটনাটি আমার বাড়ির পাশেই হয়েছে। আমি খবর পেয়েই সেখানে গিয়ে অবিহিত হয়ে প্রতœতত্ত্ব বিভাগে জানিয়ে দেই এবং এক স্বর্ণকার’কে এনে পরীক্ষা করে জানতে পারি মুর্ত্তিটি পিতলের। সেই থেকে তাদের বাড়িতে পারিবারিক ভাবে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় পূজা দিচ্ছে।
http://dalitvoice24.com/%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%85%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0/