আজকাল বাঙালী সেন্টিমেন্টে শুড়শুড়ি দেওয়ার একটা বিশেষ প্রবনতা দেখা যাচ্ছে ।

-:আমরা বাঙালি:-

আজকাল বাঙালী সেন্টিমেন্টে শুড়শুড়ি দেওয়ার একটা বিশেষ প্রবনতা দেখা যাচ্ছে । পাখিরা যেমন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে প্রজনন করে , ঠিক সেই রুপ বিশেষ বিশেষ সময়ে কিছু বাঙালির এই বাঙালি আবেগ জেগে উঠে। অবশ্যই কিছু সেকু , মাকু মোল্লার। বিশেষ করে রাম নবমীর সময় । এদের বক্তব্য হল রাম বাঙালীর ভগবান নয়, তাই বাঙালিদের রাম নবমী পালন করা উচিত নয় । আবার শিবরাত্রির সময় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ফিরে আসে। একটা আফ্রিকার অভুক্ত শিশুর ছবি দিয়ে ” ভাত দে গ্যাঙ ” কমেন্ট করে,যেখানে একটা শিশু খেতে পাচ্ছে না, সেখানে পাথরের উপর দুধ ঢেলে নষ্ট করছে। আবার দূর্গা পূজার সময়ও এই মানবতা আবাদী মানুষ গুলো প্যান্ডেল না করে অভুক্ত শিশুদের খাওয়ানোর কথা বলে। দেওয়ালীতে বাজি ফাটিয়ে টাকার ও পরিবেশ দূষনের অভিযোগ তোলে ।

এদের এই বাঙালি আবেগ ও মানবতা বড়ই সিলেক্টিভ । এদের কাছে রাম নবমী পালন বাঙালী কালচার নয়, হজ নামাজ বাঙালী কালচার । মহরমে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করা যাবে, রাম নবমীতে যাবে না । এদের কাছে বড়দিনে কেক কাটা অপচয় নয়, শিবের মাথায় দুধ ঢালা অপচয় । নববর্ষে  বাজী পোড়ালে পরিবেশ দূষণ হয় না, দেওয়ালীতে হয় । এরা সারা বছর কোন অভুক্ত শিশুকে দেখতে পায় না, দূর্গা পূজা ও শিবরাত্রিতে দেখতে পায় । পুরুষের পর পুরুষ যে সমস্ত বিহারী বা উড়িয়ারা এখানে বসবাস করছে , তারা এদের কাছে খোট্টা বা উড়ে । আর যারা দুদশ বছর আগে বাঙলাদেশ থেকে এসেছে তারা বাঙালি । রোহিঙ্গা মুসলিমরা এদের কাছে আপনজন, বিহারিরা শত্রু । আরবী চলবে কিন্তু হিন্দি চলবে না যতই হিন্দি রাষ্ট্র ভাষা হোক না কেন । আফরাজুল এদের কাছে বাঙালী, বাঁকুড়ার হেমন্ত রায়,নদীয়ার খোকনরা বাঙালী নয় । না কোন আর্থিক অনুদান না কোন মোমবাতি মিছিল । যেন কিছুই হয়নি । যারা প্যালেস্টাইনে পেট ব্যাথা হলে কোলকাতার রাস্তায় প্রাত্ক্রিয়া করে , ইরাকে 2 জন বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুতে এরা ব্যাতিব্যাস্ত হয় না ।

তাই এদের কাছে বিনীত প্রশ্ন  হেমন্ত , খোকনরা কি বাঙালি নয়? বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত হিন্দুদের মারপিট করে তাড়ানো হচ্ছে তারা কি বাঙালি নয়? ধূলাগড় , বসিরহাট, তেহট্ট,  কালিয়াচকের নিপীড়িত হিন্দুগুলো কি বাঙালি নয় ? যদি তারা বাঙালি হয়ে থাকে , তাহলে তারা নিজভূমে কেন পর ? বিহারিরা তো এখানে এসে তাদের উপর  অত্যাচার করে যায়নি। বরং যারা তাদের উপর হামলা করেছিল তারা সবাই বাঙালি ছিল। আর যদি তাদের বাঙালি মনে না করেন তাহলে বাঙালির নামে  এই  ভন্ডামি বন্ধ করুন। যদি ভাবেন এক্ষেত্রে বিজেপির ঘাড়ে দোষ দিয়ে পার পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করছেন । কারন ক্যালকাটা ম্যাসকার বা নোয়াখালী গনহত্যার সময় বিজেপি ছিলনা। তাই সামান্য কিছু পেট্রো ডলার বা রাজনৈতিক স্বার্থে বাঙালির মধ্যে বিভাজন আনবেন না। মনে রাখবেন এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে । বাঙালি তথা হিন্দুদের মধ্যে বিভাজন এনে পঃবঙকে নিয়ে গ্রেটার বাংলাদেশ বানানোর জেহাদী পরিকল্পনা  চলছে। অধুনা বাংলাদেশের মত জেহাদী পরিকল্পনা সফল হয়ে গেলে,তারা মেরেপিটে আপনাদের  বাংলা ছাড়া করবে। তখন সেই ”খোট্টা”র দেশে গিয়ে রিফিউজির মত জীবন কাটাতে হবে। যদি এই কথাগুলো গ্রহণযোগ্য বলে মনে না হয়, তাহলে যোগেন মন্ডলের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারেন । মুসলিম লীগের সুরে সুর মিলিয়ে পাকিস্তান দাবি করে যোগেন মন্ডল একদা পাকিস্তানের আইন মন্ত্রী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু রাতের অন্ধকারে বউছেলেকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। এমনকি পদত্যাগ পত্র পাঠানোর সময়টুকুও পাননি । তাতেও যদি আপনাদের বোধোদয় না হয়ে থাকে, তাহলে আর কিছু বলার নেই । ”তমসো মা জৌতির্গময়।”