ইসলামে তাকিয়া বলে একটি ধারনা আছে । এ ধারনায় বলা হয় ডে ইসলামকে রক্ষা বা ভবিষ্যতে ইসলাম প্রসারের লক্ষ্যে অবস্থার চাপে পড়ে যেমন ভিতি, সতর্কতা এবং জবরদস্তির দ্বারা কোন হারাম বা ইসলাম বিরোধী কাজ করলেও তাতে কোন গুনাহ হবে না । মুহাম্মদ নিজে এ প্রথা চালু করে দিয়ে গেছেন । এমনকি কোরআনেও ১৬:১০৬ আয়াতে আছে- যার ওপর যবদস্তি করা এবং তার অন্তরে বিশ্বাষে অটল থাকে সে ব্যাতিত যে কেউ বিশ্বাষী হওয়ার পর আল্লাহতে অবিশ্বাষী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উন্মুক্ত করে দেয় তাদের ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গজব ও তাদের জন্য রয়েছে শাস্তি । কোরআন নিজেই শিখাচ্ছে প্রতারনা ।
উপরোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায় মুসলমানরা যেসব হারাম কাজ করে এবং কারনে অকারনে মিথ্যা কথা বলে তা কিন্তু সবই জায়েজ করা যায় এভাবে যে অবস্থার চাপে তারা এসব করতে বাদ্য হচ্ছে । যে ঘুষ খায় সে বলবে উপরওয়ালাকে টাকা দিতে হবে না হলে চাকুরী থাকবে না তাই সে ঘুষ খেতে বাধ্য হয় । তাছাড়া সে আরও বলতে পারে সে ঘুষ খায় সে টাকা নিজের জন্য খরচ করে না, তার কিছু অংশ সে দান করে ।
সুলতানা কামাল প্রকাশ্যে রাস্তায় আসলে হুজুররা তার হাড্ডি-মাংস খুলে নিবে! কারণ সুলতানা কামাল বলেছেন, মূর্তি না থাকলে এদেশে মসজিদও থাকতে দেয়া হবে না…। ইসলামপন্থিরা দ্বিনের স্বার্থে মিথ্যা কথা বলেন, এটা তাদের ধর্মের বিধান। এটা জানি বলেই ইউটিউবে খোঁজ করলাম কথিত সেই টক-শোটা। জানা কথা ইসলামজীবীরা দ্বিনের স্বার্থে কথাকে বিকৃত করেছেন! হেফাজতে এক নেতা থেমিসকে সরানোর যুক্তি দেখিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো অসাম্প্রদায়িকতা সেখানে কোর্টের সামনে একটা মূর্তি রাখাটা সাম্প্রদায়িকতা করা হয়েছে। তখন সুলতানা কামাল পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছেন, তাহলে তো কোর্টের ভেতর যে মসজিদ আছে সেটাও থাকার কথা না…। ব্যস, এটুকুই।
সুলতানা কামালের প্রতি ইসলামজীবীদের ক্রোশ অনেক পুরোনো। সুলতানা কামালদের মত নারীদের এই ধর্মজীবীরা ভয় পায়। নারীর অগ্রযাত্রায় তারা নিজেদের ক্ষয় দেখতে পায়। সুলতানা কামালকে তসলিমা নাসরিনের মত দেশ থেকে বের করে দেয়ার হুমকি বাইতুল মোকাররম থেকে আসাটা তাই স্বাভাবিক। তার হাড্ডি-মাংস খুলে নেবার কথা বলা দেশের প্রচলিত আইনে ফৌজদারী অপরাধ হলেও এক্ষেত্রে সরকার যে নিরব থাকবে তা বলাই বাহুল্য। সুলতানা কামাল ইচ্ছা করলেই আওয়ামী বিবেকহীন আদর্শহীন বুদ্ধিজীবী হতে পারতেন। আস্থা লীগের হয়ে সাফাই গাইতে পারতেন। তিনি কবি সুফিয়া কামালের কন্যা। সরকারের সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়ে ক্ষমতার পাওয়ার হাউজের সংস্পর্শে আসতে পারতেন। তা না করে তিনি আদর্শে অটল থেকেছেন। দেশের সেক্যুলারিজম ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে নুন্যতম আপোষ করেননি। কাজেই মোল্লাদের ‘হাড্ডি-মাংস’ খুলে নেবার ইচ্ছার ঘোলা পানিতে কেউ কেউ যে মাছ শিকার করতে চাইবে সেই আশংকা করি…। এই নষ্ট ভ্রষ্ট সময়ে এই আদর্শবাণ মানুষটির পাশে সবাইকে দাঁড়াতে অনুরোধ জানাই…।