সমস্যাটা আসলে কোথায়…………..????

১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীদের জন্য আলাদা করে কোন হিন্দু মুসলমান ক্যাম্প ছিলো না। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘হিন্দু ক্যাম্প’ নামে রোহিঙ্গা হিন্দুদের জন্য অঘোষিতভাবে আলাদা ক্যাম্প চিহিৃত করা আছে। এদের সাহায্য করছে মূলত বাংলাদেশী হিন্দুরা। সারাদেশের ‘মানবতাবাদীদের’ যে ত্রাণ জিহাদ তার পুরোটাই রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের শরণার্থী শিবিরে ধর্মীয় পরিচয়ে ৯০ ভাগই ছিলো হিন্দু। গোটা কোলকাতার বুদ্ধিজীবী সমাজই বলুন আর প্রশাসন সবই তো ধর্মীয় পরিচয়ে হিন্দু ছিলো। তাই বলে শরণার্থী ক্যাম্পে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু শরণার্থীরা কি ক্ষমতা দেখিয়েছিলো? মুসলমান শরণার্থীদের সঙ্গে আনা টাকা পয়সা দল বেধে মারধোর করে ছিনিয়ে নিতো?

না, এরকম কোন ঘটনা, সাম্প্রদায়িক ভেদ রেখার কোন নজির সেখানে ছিলো না। অথচ ৬৫ সালে এদেশের হিন্দুদের বড় একটা অংশ প্রতিবেশী মুসলমানদের ভয়ে আক্রোশে দেশ ছেড়েছিলো। বাংলাদেশে থাকা তাদের সম্পত্তি এনিমি পোপার্টি হয়ে গিয়েছিলো। ক্ষতিগ্রস্তরা কি সুযোগ পেয়ে সংখ্যার জোরে প্রতিশোধ নিয়েছিলো? কোলকাতার লেখক বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ ছিলো দেশভাগে উচ্ছেদের শিকার হওয়া মানুষ। কোলকাতার রাস্তায় তারাই পূর্ব পাকিস্তানী শরণার্থীদের জন্য বাক্স হাতে অর্থ তুলত। বাসে-ট্রামে বিনে পয়সায় সার্ভিস দিতো শরণার্থী পরিচয় পেলে।

যদি এবার আমরা কল্পনা করি যে মিয়ানমার থেকে আগত হিন্দুরা অতিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়েছিলো, তাদের নির্যাতন করেছিলো তাহলে বাংলাদেশে আগত এইসব হিন্দুদের নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করত? রোহিঙ্গা হিন্দুদের গরু-ছাগল বেচে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা। টাকা চাইতে গিয়ে বেঘরে প্রাণ গেছে দুইজন হিন্দু রোহিঙ্গার। আটজন কোনমতে পালিয়ে এসেছে। জানা গেছে ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া হিন্দুরা রাখাইনে প্রায় ৩৫টি গরু-ছাগল ফেলে আসে। সেসব নিয়ে এসে বিক্রি করেন রাখাইনে তাদের প্রতিবেশী অলি উল্যাহ, ইমাম হোসেন, নুরুল হক। তারা গরু-ছাগল বিক্রির সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেওয়ার কথা বলে সীমান্তের ওপারে তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। একটি নদী পার হওয়ার পর তাদের চোখ বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে ফিরে আসা হিন্দু রোহিঙ্গারা। কৌশলে আটজন পালিয়ে আসতে পারলেও অন্য দুজন পারেননি (সূত্র: আমাদের সময়, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭)।

রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়েদের এখন বক্সবাজারের হোটেলে নিয়ে গিয়ে খ্যাপ খাটাচ্ছে তাদের বাংলাদেশী মুসলিম ভাইরা। আপসে গেলে ভাল, না গেলে অপহরণ। এটাই ৯০ ভাগ মুসলমান দেশের চরিত্র। বলা ভাল মুসলমানরা ৯০-৯৯ হলেই আসল চরিত্র ধারণ করে। পুর্ববঙ্গের এককোটি শরণার্থীদের কোলকাতায় কি তাদের যুবতী মেয়েদের নিয়ে ভয়ে আতংকে দিন কাটাতে হতো? সিরিয়ান শরণার্থী শিবিরেও আরব মুসলমানরা মেয়ে কেনাবেচা করত। সেখানেও সিরিয়ান মেয়েরা অপহরণের শিকার হতো। সমস্যাটা আসলে কোথায়?