উদার, পরোপকারী অহিংস শিখ ধর্মগুরুদের চরম নির্মম নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল কথিত শান্তিপ্রিয়।

টেকনাফে ৫০ হাজার অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য লঙ্গরখানা খুলেছে শিখ স্বেচ্ছাসেবীরা। তাঁরা প্রতিদিন পঞ্চাশ হাজার রোহিঙ্গাকে ত্রাণ ও খাদ্যসহায়তা দিবেন এবং সংকট শেষ না হওয়া পর্যন্ত লঙ্গরখানা সহায়তা দিয়ে যাবেন খালসা এইড নামের ওই সংগঠনটি। মূলত শিখ ধর্মটি সমন্বয়ী ভাবধারা। এই ধর্মটি একই ছায়াতলে সকল মানুষকে আশ্রয় দেয়ার কথা বলে, ধর্ম-বর্ণ, জাত-পাত বিরোধী আর অসহায়দের প্রতি ভালোবাসা এই ধর্মের অন্যতম প্রধান অঙ্গ। খ্রিস্টীয় ১৫শ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশের পাঞ্জাব অঞ্চলে গুরু নানকদেব এই ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এবং গুরু নানকদেব তার সময়ে লঙ্গরখানার প্রচলন করেছিলেন। লঙ্গর হলো- যেখানে সব ধর্ম, গোত্র, লিঙ্গ ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরা পাশাপাশি বসে আহার করতে পারে। এরকম একটি উদার ও মানবিক ধর্ম ও ধর্মের অনুসারিদের সাথে কথিত মহা(!)মানবের অনুসারি শান্তিপ্রিয়(!) মুসলমানেরা কীরকম মানবিক আচরণ করেছে দেখেন।

মুসলমানের আরব বিজয় আর ভারত বিজয়ের মধ্যে ছিল অনেক প্রার্থক্য। ইরান,এরাক, মিশরীয়রা আক্রমণকারী মুসলমানবীহিনী কাছে পরাজিত হয়ে বশ্যতা স্বীকার করে এবং নিজেদের ঐতিহ্য-কৃ্ষ্টি ও সংস্কৃতি, ধর্ম-সভ্যতা সব বিসর্জন দিয়ে গ্রহন করেছে মুহাম্মদের রচিত ইসলাম ধর্ম। কিন্তু ভারতীয়রা কখনোই মোছনমানদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে নি। তাঁরা সাময়িক পরাজয়কে চূড়ান্ত পরাজয় বলে মেনে নেয়নি। বিসর্জন দেয়নি আপন ধর্ম-সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে। ভারতীয়রা যখনই সুযোগ পেয়েছে প্রতিরোধ করেছে, বিদ্রোহ করেছে মুসলিম বর্বর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। ভারতে উ: প: সামান্ত পথ দিয়ে আক্রমণ করে পাঞ্জাব দিয়ে মোছনমানেরা ভারত ঢোকে। এবং শত শত বছর ধরে পাঞ্জাবের হিন্দুদের দুর্দশার সীমা ছিল না, গণহত্যা, গণহারে নারী ধর্ষণ, দাসী করণ, দাসদাসী আরবে পাচার করে বিক্রি, লুট, বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করণ, মন্দির ধ্বংস করা ও পুরাতন মন্দির সংস্কার অথবা নতুন মন্দির নির্মাণ নিষিদ্ধ করে, জিজিয়া কর ও তীর্থকর, এমনকী হত্যা করে মুন্ডু কেটে টাল দিত যাতে রাজপ্রাসাদ থেকে সেই মুন্ডুর পাহাড় দেখা যায়! এসব মোছনমানদের অসংখ্য বর্বরতার মধ্যে মাত্র কয়েকটি বিবরণ। খাদ্য, পোশাক-পরিচ্ছদ, দৈনন্দিন জীবনচর্যাসহ প্রায় সকল বিষয়েই নানানপ্রকার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানকদেব তখন মাত্র ২০ বছরের তরুণ। দিল্লীর সিংহাসনে সিকান্দর লোদী(১৪৮৯-১৫১৭)। সিংহাসনে আরোহণের পূর্বেই শাহাজাদ সিকান্দর পবিত্র থানেশ্বরে হিন্দুদের স্নান নিষিদ্ধ করেন। সুলতান হয়ে তিনি বিখ্যাত জ্বালামূখী ও কাংড়ার মন্দির ভেঙে দেন। পাথরের বিগ্রহ ভেঙে কসাইদের মধ্যে বিতরণ করেন বাটখারা হিসেবে ব্যবহারের জন্য। নিষিদ্ধ করেন হিন্দুদের যমুনার স্থানও। হিন্দুদের চুল, দাড়ি না কটতে ফতোয়া জারি করেন। ধ্বংস করে দেন আরো বহু মন্দির। বলপ্রয়োগ করে হিন্দুদের ইছলামে ধর্মান্তরিত করা হয়।

ভারতে মোগল সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠাতা বাবর ভারতে যে বর্বর অত্যাচার করেছে, গুরু নানকদেব তার প্রত্যক্ষদর্শী। সৈয়দপুর (বর্তমান আমিনাবাদ) লাহোর থেকে ৮০ কি: মি: দূরে। বিজয়ী বাবর হাজার হাজার মানুষকে গণহত্যার আদেশ দেন। আর বন্দী হতভাগ্য নারীদের প্রতি যে অত্যাচার করা হয়, তাতে বেদনাহত চিত্তে গুরু নানকদেব ভগবানের কাছে অভিযোগ করেন। মুহান্মদের মতই পৌত্তলিকতা নির্মূল করার উদ্দেশ্য হিন্দুস্থানে অভিযান চালায় বাবর। তিনি সম্ভল, চান্দেরী ও অযোধ্যায় মন্দির ধ্বংস কর বাবরি মসজিদ নির্মাণ করে। গোয়ালিয়ারের নিকট উভয়ে জৈন মন্দির ভেঙে চূর্ণ করেন বিগ্রহ। এসব নির্মমতা যে শুধু মুসলিম শাসকরা করেছে তা কিন্তু নয়, স্থানীয় মোছনমানেরাও অমুসলিমদের ওপর যথেষ্ট নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছে। সম্রাট আকবর ছিলেন অপেক্ষাকৃত সহনশীল। কিন্তু পুত্র জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালেই শিখদের সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে।

অর্জুনদেব শিখদের পঞ্চম গুরু(১৫৮২-১৬০৬)। পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কাবুলে পালিয়ে যাওয়া সময় জাহাঙ্গীরের বড়ছেলে খসরু গুরু অর্জুনের কাছে সাহায্যপ্রার্থী হন। খসরুর আর্থিক দুর্দশার কথা শুনে গুরু অর্জুন ৫০০০ টাকা দেন। একথা শুনে সম্রাট জাহাঙ্গীর গুরু অর্জনকে দরবারে হাজির হতে আদেশ দেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর শাস্তি দেন ইসলাম গ্রহন করতে বলেন, দুই লাখ টাকা জরিমানা ও তাঁর ধর্মগ্রন্থ থেকে কিছু শ্লোক মুছে ফেলতে আদেশ দেন। গুরু অর্জুন তাতে অস্বীকৃত জানালে, তাঁর বাড়ি, আশ্রম ও তাঁর পুত্রদের দেয়া হয় মুর্তজা খানের হাতে এবং নির্যাতন করে গুরু অর্জুনকে হত্যার আদেশ দেন। পরে তাঁকে প্রখর রৌদ্রে তপ্ত বালুরাশির ওপর খুঁটির সঙ্গে বাঁধে এবং তাঁর অনাবৃত দেহে ছিটিয়ে দেয় ফুটন্ত জল, চামড়া ঝলসে সমস্ত দেহে দেখা দিল দগদগে ঘা। মাত্র ৪২ বছর বয়সে গুরু অর্জুনে মৃত্যু হয়। গুরু অর্জনের মৃত্যু পর মৃত্যু পূর্বের বাবার আদেশে ছেলে হরগোবিন্দ সিংহাসনে বসে এবং সর্বাধিক অস্ত্র ও অশ্বসহ সাথে হিন্দুদের নিয়ে সশস্ত্র সেনাবাহিনী গঠন করে। অমৃতসরে একটি দুর্গ নির্মাণ করে। সম্রাট জাহাঙ্গীর স্বভাবতই হরগোবিন্দ প্রতি রুষ্ট হন। ১৬২৭ সম্রাট জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর ধর্মান্ধ হিন্দুবিদ্বেষী শাহাজান জানতে পারেন রাজৌরি, ভীম্বার ও গুজরাটে বহু হিন্দু মুসলমান নারীদের বিবাহ করে তাঁদের হিন্দু ধর্মের দীক্ষিত করছে। সম্রাট শাহাজান এই জাতীয় বিবাহ নিষিদ্ধ করেন এবং বিবাহিত প্রায় ৪৫০০ মুসলিম নারীকে সন্তানসহ হিন্দু স্বামীদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেন। হিন্দু স্বামীর আর্থিক জরিমানা করেন ও অনেককে হত্যাও করেন। শাহাজানের অত্যাচারে সন্তান ও পত্নীহারা হিন্দুরা হরগোবিন্দের শরণাপন্ন হলে, তিনি সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন। ১৯৩৪ খ্রিঃ শাহাজান লাহোর ও অমৃতসরের মধ্যবর্তী এক অরণ্যে শিকারে যান। ঘটনাচক্র সেই একই অরণ্যে শিকার করছিলেন হরগোবিন্দও। একটি পাখি নিয়ে শিখদের সঙ্গে মোগল সেনাদের প্রথম তর্ক পরে হয় সংঘর্ষ, পরাজিত হয় মোগল। এরপর শাহাজান একাধিকবার যুদ্ধ করেও সফল হতে পারেননি। দীর্ঘ ৭ বছর হরগোবিন্দ মোগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। শক্তিশালী শত্রুপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুদ্ধ করা সম্ভব নয় বুঝে সে কাশ্মীরের কিরাতপুরে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। ১৬৪৪ খ্রিঃ তাঁর মৃত্যু পর হরগোবিন্দের ও কনিষ্ঠ পুত্র তেগবাহাদুর গুরু পদে অভিষিক্ত হন।

দিল্লীতে সম্রাট ঔরঙ্গজেব (পড়ুন আওরঙ্গজেব) ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি করে। পাঞ্জাবে অনেক গুরুদুয়ার ও মন্দির ভেঙে নির্মিত করে মসজিদ। পাঞ্জাব ও কাশ্মীরে হাজার হাজার হিন্দুকে ইসলামে ধর্মান্তরিত ও গণহত্যা, ধর্ষণ আর লুটপাট ও দাসদাসী করণ করা হয়। হিন্দুরা তেগবাহাদুরের সাহায্য প্রার্থনা করে। তিনি তাঁদের পরামর্শ দেন , “আপনারা সম্রাটকে জানান যে, তেগবাহাদুর ধর্মান্তরিত হলে আমরা সকলেই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করব”। হিন্দুদের নেতৃত্ব দেয়া রুষ্ট সম্রাট, তেগবাহাদুরকে দিল্লী দরবারে তলব করেন। চারজন শিষ্য নিয়ে তেগবাহাদুর দরবারে হাজির হলে, ঔরঙ্গজেব তাঁকে হয় অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন অথবা ইসলাম ধর্ম গ্রহনের আদেশ দেন। গুরু তেগবাহাদুর তাঁর অক্ষমতা ও ইসলাম গ্রহনে অসম্মতি জানিয়ে নির্ভীক কণ্ঠে বলেন, “জীবন দেব কিন্তু ধর্ম ত্যাগ করব না”। এরপর তাঁর শিষ্যদের ইসলাম গ্রহন করতে বলা হয়। কিন্তু তারা সবাই মুসলমান হতে অস্বীকার করে। বাদশাহর হুকুম অমান্য করার অপরাধে তাদের জন্য শাস্তি ঘোষণা করা হয়। শাস্তিটা হল তাঁদের প্রত্যেকেরই মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু মৃত্যুগুলো হবে আলাদা আলাদা ভাবে এবং যতটা সম্ভব ধীরে ধীরে ও যন্ত্রণা দেওয়ার মাধ্যমে। যাতে একজনের শাস্তি ও যন্ত্রণা দেখে ভয় পেয়ে অপরজন ইসলামকে স্বীকার করে নিয়ে জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়। সেজন্য সবার সামনে, শিষ্যদের মধ্যে এক জন মতিদাসকে, গাছ কাটার করাত দিয়ে দুই উরুর সন্ধিস্থল থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত চিরে ফেলার আদেশ দেওয়া হয়। মতিদাসকে ঠিক এই ভাবে প্রায় আধাঘন্টা যাবৎ তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়ে করাত দিয়ে চিরে দুই ভাগ করা হয়। অপর তিনজনের সামনে মতিদাসকে এইরকম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

কাজেরমেয়েকে পাটানির পর বউ শিক্ষা নিলো কি না, এটা বোঝার জন্য অপর তিনজনকে আবারও ইসলাম গ্রহন করে প্রাণ বাঁচানোর কথা বলা হয়। তারা তিনজন আবারও মুসলমান হয়ে বাঁচতে অস্বীকার করে। তাই আরেক শিষ্য দিয়ালাকে গরম জলে সিদ্ধ করে মারার আদেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিশাল হাড়ি আনা হয় এবং বড় উনুন তৈরি করে তাতে আগুন জ্বালানো হয়। সেই উনুনে হাঁড়ি চড়িয়ে তাতে জল ঢালা হয় এবং সেই জলে দিয়ালাকে তুলে দিয়ে উনুনে আগুন দেওয়া হয়। জল আস্তে আস্তে গরম হতে থাকে, আর দিয়ালার যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। তবু সে ইসলাম গ্রহণ করে জীবন বাঁচাতে রাজী হয় নি। প্রায় ১ ঘন্টা ব্যাপী গরম জলে সিদ্ধ হয়ে দিয়ালা প্রাণত্যাগ করে।

দুজনকে নির্মম নৃশংসভাবে হত্যা করার পর, আবার অপর দুইজনকে ইসলাম গ্রহণ করে প্রাণ বাঁচানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। তারপরও তারা মুসলমান হতে অস্বীকার করে। তাই তৃতীয় শিষ্যকে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুকুম দেওয়া হয়। কিন্তু এই আগুনে পোড়ানোতেও ছিলো যথেষ্ট ভেরিয়েশন। এক মিনিটেই যে কারো মৃত্যু ঘটানো যায়। কিন্তু সেটা মোছনমানদের ভালো লাগে না। মোছনমানরা চায় কাফেরদের মৃত্যু যেন ধীরে ধীরে হয় এবং সেটা যেন হয় যতটা সম্ভব বেশি যন্ত্রণাদায়ক। কাফের হিন্দুদের এই মৃত্যু ছিলো আবার অনেক মুসলিম শাসকের কাছে খেলা বা বিনোদনের মতো, তাই যারা মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়নের প্ল্যান করতো, তাদেরকে সম্রাটের এই বিনোদনের ব্যাপারটাকেও মাথায় রাখতে হতো এবং প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা যাতে আলাদা আলাদা ভাবে হয়, সেদিকেও তাদের খেয়াল রাখতে হতো। তো তৃতীয় শিষ্যকে প্রথমে জ্বালানি তেলের মধ্যে চুবানো হলো এবং তারপর তাকে তুলার মধ্যে গড়াগড়ি দেওয়ানো হলো। এরপর তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হলো। তুলা আর তেলের সাথে আগুন, মূহূর্তেই দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো। পুড়ে কয়লা হয়ে তৃতীয় শিষ্যের মৃত্যু হলো।

গাছের গোড়া কাটার পূর্বে, গাছের ডালপালাগুলো আগে কাটা বা ছাঁটা হয়। তিন প্রিয় শিষ্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঔরঙ্গজেব বুঝতে চাইছিলো, গুরু তেগবাহাদুরের মনের কোনো পরিবর্তন হলো কিনা। আর গুরুকে যদি ইসলাম গ্রহন করানো যায়, তাহলে গুরুর শিষ্যদের (শিখ ও হিন্দুদের) পথে আনতে কতক্ষণ ? তিন শিষ্যের নৃশংস মৃত্যু চোখের সামনে দেখার পর, ইসলামকে স্বীকার করে সে নিজের জীবন বাঁচাতে ইচ্ছুক কি না। গুরু তেগবাহাদুরকে জিজ্ঞেস করলেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। গুরু তেগবাহাদুর স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সে ইসলাম গ্রহন করবেন না। রাগে-ক্ষোভে উত্তেজিত সম্রাট সঙ্গে সঙ্গে তেগবাহাদুরকে শিরোচ্ছেদ করার হুকুম দিল। যেহেতু এখন আর কাউকে ভয় দেখানোর প্রয়োজন নেই, সেহেতু তেগবাহাদুরের মৃত্যুর জন্য আলাদা কোনো পরিকল্পনার প্রয়োজন পড়লো না। তরোয়ালের এক কোপে তেগবাহাদুরের মাথা কেটে ফেলা হল এবং মৃত্যু বরণ করলেন শিখদের সপ্তম গুরু, গুরু তেগবাহাদুর। যাহোক লেখা এমনিতে অনেক বড় হয়ে গেছে, পরে ইতিহাস আরেক দিন বলব।

বাংলাদেশে শিখ ধর্মাবলম্বীদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না, তবে ধর্মের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। বাঙালি মোছনমানদের নৃশংসতার বর্বরতার শিকার হয়ে ৪৭ এর পূর্বে এবং পরবর্তীতে এদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় শিখ ধর্মাবলম্বিরা। কিন্তু এখন পরে রয়েছে বাংলাদেশে শিখ ধর্মাবলম্বীদোর উপসনালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্যাম্পাসের কলাভবনের পাশে অবস্থিত শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে শিখ সম্প্রদায়ের আরও কিছু স্থাপত্য রয়েছে। ঢাকার বাংলাবাজারে অবস্থিত গুরুদুয়ারা গুরু তেগবাহাদুরের সঙ্গত বা আস্তানা, গুরুদুয়ারা নানক কুয়ান। উর্দুবাজারের গুরুদুয়ারা সুতরা শাহী ও ইংলিশ রোডের গুরুদুয়ারা বাবা মোহন সিং এখন বিলুপ্ত। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চকবাজার শিখ মন্দির ও পাহাড়তলী শিখ মন্দির, ময়মনসিংহের এ.বি. গুহ রোডের গুরু নানক মন্দির অন্যতম। সিলেটের গুরুদুয়ারা সাহেব এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বর্তমানে ভারতে থেকে আসা প্রায় শ’পাঁচেক শিখ ধর্মাবলম্বী ঢাকা ও চট্রগ্রামে রয়েছে। তাঁরা ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবি। এই হচ্ছে উদার ও মানবিক ধর্মের অনুসারি নিরীহ ও পরোপকারী অহিংস শিখদের সাথে কথিত মহা(!)মানবের অনুসারি শান্তিপ্রিয়(!) মোছনমানদের নির্মম নৃশংস বর্বরতা বিবরণ। এই যে মোছনমানেরা মানবতার বুলি আওড়ান, মোছনমানদের অতীত ও বর্তমান ওভারঅল বিবেচনা করে সত্যি করে বলেন তো মোছনমানদের মুখে মানবিক শব্দটা ঠিক মানায় কি না ?? মোছনমানেরা গত সাড়েচৌদ্দশ বছর ধরে অমুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ, হিংসা, ঘৃণা, অভিশাপ এবং দৈনিক পাঁচবার দুহাত তোলে আল্যা কাছে অমুসলিমদের ধ্বংস কামনা করে। কিন্তু পৃথিবীজুড়ে মোছনমানেরা অমুসলিমদের দয়া নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।

তত্ত্ব সূত্র: মুসলিম শাসন ও ভারতবর্ষ আর ইন্টারনেট ।।

Scroll to Top