বৈষ্ণব কবি ও কাব্য রচয়িতা সনাতন গোস্বামী…………….।।

শ্রীচৈতন্যের
অনুসারী বৈষ্ণব কবি ও কাব্য রচয়িতা হিসাবে যশোরের ৩ ব্যক্তিকে বিশেষভাবে
চিহ্নিত করা হয়। এরা হলেন, সনাতন গোস্বামী, রূপ গোস্বামী, ও জীব
গোস্বামী।
প্রথমোক্ত দুই জন সহোদর, শেষজন তাদের ভাই পো। এই পরিবারটি স্বাধীনসুলতানী
আমলের এক ছোট্র সামান্ত সমাজের অংশ বিশেষ। এদের পূর্বপুরুষেরা এক সময়ে
বর্তমান পশ্চিম বঙ্গের নৈহাটিতে বসবাস করতেন। ঐ পরিবারের এক সদস্য 
পারিবারিক কলহের কারণে নৈহাটি থেকে ফতেয়াবাদ চলে আসেন। ফতেয়াবাদ স্বাধীন
সুলতানি আমলে ছিলো একটি সরকার। ফতেয়াবাদ এক সময় সন্ধীপ থেকে শুরু করে
বর্তমানের ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা ও যশোরের অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত ছিলো।
স্থানীয় প্রবাদ ও প্রমাণাদি থেকে জানা যায়, নৈহাটি থেকে চলে আসা  কুমারের
পরিবারটি বর্তমান যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার প্রেমভাগ গ্রামে বসতি স্থাপন
করেন। এই প্রেমভাগেই সনাতন
গোস্বামী ১৪৮০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। এই পরিবারের কর্তিত ৭টি দীঘি  আজও প্রেমভাগে বর্তমান।

সনাতন গোস্বামীর
পিতার দেয়া নাম অমর। শ্রী চৈতন্যদেব অমরের নাম রাখেন সনাতন। স্থানীয়
সংস্কৃত টোলে সনাতনের প্রাথমিক লেখাপড়া শেষ হয়। এক সময় তিনি বাংলার সুলতান
হুসেন শাহের সরকারে চাকরি গ্রহণ করেন। তার পদের নাম ছিল ‘শাকের মল্লিক’।

কথিত আছে সনাতন এক সময় এক গরীব ব্রাহ্মণের বসত বাটি দখল করে নেন। এই ব্রাহ্মণ বৃন্দাবনে অবস্থারত তার ছোট ভাই রূপ গোস্বামীকে
তার বসতবাড়ি দখলের বিষয়টি জানান। রূপ তার সহোদরকে একটি সাংকেতিক চিঠির
মাধ্যমে সাবধান করেন। এরপর সনাতনের মনের মধ্যে বিপুল পরিবর্তন দেখা যায়।
তিনি বিষয় বৈভব ত্যাগ করে বৃন্দাবন গমন করেন। এবং বৈষ্ণবধর্ম প্রচারে
মননিয়োজিত করেন। এছাড়া শ্রী চৈতন্যের সাহচার্য লাভ করেন। সনাতন
গোস্বামী রচিত গ্রন্থাবলী নিম্নরূপ:
 

  • বৃহদ ভাগবদামৃত
  • হরিভক্তি বিলাস ও দিগদর্শিনী টিকা
  • লীলাস্তব বা দশম চরিত
  • বৈষ্ণবতোষিনী বা দশম টিপ্পনী।

সনাতন গোস্বামী ১৫৫৮ সালে দেহত্যাগ করেন।

তথ্য সূত্র : বাংলা সাহিত্য যশোরের অবদান
লেখক : মোঃ শাহাদত আলী আনসারী।

সংগ্রহ: কবি মহসিন হোসাইন